ছোটপর্দার জনপ্রিয় তারকা মেহজাবিন চৌধুরী ও আফরান নিশোকে নাটকে একাধিকবার আদালতে দেখা গেলেও এবার বাস্তবে আদালত থেকে ডাক এসেছে তাদের। ‘ঘটনা সত্য’ নামের একটি নাটকে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও প্রতিবন্ধিতা সম্পর্কে ‘নেতিবাচক’ শব্দ ব্যবহার করার অভিযোগে মেহজাবিন ও নিশোসহ ছয়জনকে আদালতে হাজির হওয়ার হতে সমন জারি করা হয়েছে।
নিশো-মেহজাবিনের বিরুদ্ধে করা এ মামলায় বলা হয়েছে, ‘ঘটনা সত্য’ নামের ওই নাটকে দেখানো সংলাপে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি ও তাদের বাবা-মা এবং পরিবারকে ‘ঝুঁকির মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।’
বিজ্ঞাপন
নিশো-মেহজবিন ছাড়াও এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগর, বার্তাপ্রধান শাইখ সিরাজ, নাটকের চিত্রনাট্যকার মঈনুল সানু ও পরিচালক রুবেল হাসান।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আছাদুজ্জামান রিভিশন মামলা গ্রহণ করে এ আদেশ দেন। আসামিদের ২৫ এপ্রিল আদালতে হাজির হতে সমন জারি করা হয়। বিষয়টি সংবাদমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট আল মামুন রাসেল।
এ প্রসঙ্গে রাসেল বলেন, ‘আমরা শুনানিতে মহানগর দায়রা জজ আদালতকে বলেছি, ম্যাজিস্ট্রেট তার আদেশে বলেছেন নাটকের ডায়ালগে সরাসরি প্রতিবন্ধীদের হেয় করার কোনো বক্তব্য নেই। অথচ প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩-এর ৩৭ ধারায় বলা আছে, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রতিবন্ধীদের নিয়ে নেতিবাচক ও ভ্রান্ত ধারণা প্রদান করলেই এ অপরাধ হবে। যাহা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত উপেক্ষা করেছেন।’
বাদীপক্ষের এ আইনজীবী বলেন, ‘তদন্ত কর্মকর্তা নিজেই স্বীকার করেছেন বিবাদীরা কাজটা করেছেন। কিন্তু নাটক তৈরির সময় তাদের ধারণা ছিল না। এটা অপরাধ হবে এবং ফেসবুকে ক্ষমাও চেয়েছেন। এর দ্বারা বোঝা যায়, অপরাধ প্রমাণিত। কিন্তু আইনে অজ্ঞতা কখনো অজুহাত হিসেবে গণ্য হয় না। সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষমা চাইলেও তা দিয়ে আইনের শাস্তি এড়ানোর সুযোগ নেই। আদালত রিভিশন মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। আগামী বছরের ২৫ এপ্রিল সমনের জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেছেন। আমরা আদালতেন আদেশে সন্তুষ্ট।’
বিজ্ঞাপন
মামলাটি করেছেন চাইল্ড ফাউন্ডেশনের পক্ষে নাবিলা আক্তার। সেসময় শুনানি শেষে আদালত মামলাটির তদন্তভার দেন পিবিআইয়ের ওপর।
চলতি বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমান সিদ্দিকীর আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন মামলার তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এরপর ৩১ অক্টোবর বাদী নারাজি দেন। কিন্তু আদালত তা নামঞ্জুর করে আসামিদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন। পরে এ আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত রিভিশন মামলা করেন।
আরআর

