মাত্র ২৫ বছর বয়সে রাজধানীর ইস্কাটন প্লাজার নিজ ফ্ল্যাটে সালমান শাহের অকাল প্রয়াণের খবরে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল ঢালিউডসহ গোটা দেশ। এই তারকার মৃত্যু এখনও রহস্যের চাঁদরে ঢাকা। সেই সময়ের অনেক শোবিজ তারকার সঙ্গে কাজ করেছিলেন সালমান। অনেকের কাছে তার স্মৃতি এখনও তাজা।
সম্প্রতি একটি ভিডিও ‘এই ঘর এই সংসার’ ছবির পারিচালক মাকেল আফসারী বলেন, “সালমানের মৃত্যুর পর তার মা নীলা চৌধুরী একদিনে আমাকে ফোন করেছিলেন। তিনি (নীলা চৌধুরী) বলেছিলেন, ‘আমার ছেলের একটি ডায়েরি আছে। সে ডায়েরি মেইনটেইন করত। এটা কি আপনি জানেন? জাবাব আফসারী বলেন, ‘আমি জানি না তো’। এরপর সালমানের মা পরিচালককে বলেন, ‘ওই ডায়েরির একটি পাতায় লেখা আছে আপনার কথা। ওখানে লেখা আছে ‘বহু ছবিতে কাজ করেছি। কিন্তু আজকে একজন সত্যিকারের পরিচালকের ছবিতে কাজ করলাম। যে পরিচালক আমাকে বকা দিল, চোখের পানি ঝরালো কিন্তু তার (মালেক আফসারি) প্রতি রইল আমার শ্রদ্ধা।”
বিজ্ঞাপন
আফসারী পরিচালিত সিনেমার শুটিং সেটে সালমান শাহ কান্না করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেদিন ছিল ‘এই ঘর এই সংসার’ সিনেমার প্রথম শুটিং। সকাল থেকে সুন্দরভাবে কাজ চলছে। দুপুরে খাওয়ার বিরতি দিলাম। খাওয়ার বিরতি ১ ঘণ্টা থাকে। বিরতি শেষ হওয়ার প্রায় ১৫ মিনিট পরে আবার ক্যামেরার সামনে গিয়ে সবাইকে ডাকলাম। সবাই আসল কিন্তু সালমান নেই। কি হলো খাওয়ার বিরতি দিলাম ও (সালমান শাহ) গেল কোথায়? একজন বললো, সে বাড়িতে খেতে গেছে।’

কথার সূত্র ধরে ছবির পরিচালক আরও বলেন,’এদিকে শুটিং সেটের লাইটে জ্বালায়ে বসে আছি কিন্তু ও (সালমান শাহ) নেই। তখন মেজাজ খারাপ হইল। তখন ঘড়ি ধরে বসে থাকলাম দেখি কখন আসে আর ভাবতেছি আজকেই ছবির শুটিং, আজকেই বিড়াল মারতে হবে। না হইলে আমাকে খুব ভোগান্তি দেবে। শুটিংয়ে দেরি করে আসবে, মর্জি মতো চলবে। অপেক্ষা করতে থাকলাম। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পরে শুটিং সেটে আসেন সালমান।’
বিজ্ঞাপন
সবশেষে তিনি বলেন, ‘সালমান শুটিং সেটে আসলে আমি ইশারা দিয়ে মেকআপ রুমে ডাকলাম। ডেকে বললাম আমি ছবিটা করব না। আর ছবির জন্য যে অগ্রিম দুই লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে তা ফেরত দিতে হবে না। এরকম একটা ভাব ধরে মেকআপ রুম থেকে ছাদে চলে গেলাম। আমার কথা শুনে ওই রুমে বসেই অঝরে কেঁদেছিল সালমান। ওর কান্নাটা দেখেছিল অভিনেত্রী দুলারি, নাসির খান। পরে সবাই ছাদে এসে আমাকে বলে সালমান নিচে বসে কাঁদছে। আপনি শুটিং শুরু করেন। সালমান শাহ দুঃখ প্রকাশ করেছে।’
ইএইচ/

