১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’সহ অংসখ্য গান মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল ও প্রেরণা যোগাত। সে সময় একজন কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে যুদ্ধে অংশ নেয়া বীরদের অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। তার গানে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। বলছি প্রায়ত কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী আব্দুল জব্বারের কথা।
আব্দুল জব্বারের গাওয়া ‘তুমি কি দেখেছো কভু জীবনের পরাজয়’, ‘সালাম সালাম হাজার সালাম’ ও ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’ গান তিনটি ২০০৬ সালে মার্চ মাস জুড়ে অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের বিচারে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ২০টি বাংলা গানের তালিকায় স্থান করে নেয়।
বিজ্ঞাপন
আজ ৩০ আগস্ট আব্দুল জব্বারের ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৭ সালের জুলাইয়ে কিডনি, হার্ট, প্রস্টেটসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১ আগস্ট তাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। ৩০ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাশ ত্যাগ করেন।
১৯৩৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন আব্দুল জব্বার। ছোটবেলা থেকে গানের প্রতি ভালোবাসা ছিল। সংগীতের হাতেখড়ি গ্রহণ করেন ওস্তাদ ওসমান গনি এবং ওস্তাদ লুৎফুল হকের কাছে। ১৯৫৮ সাল থেকে তৎকালীন পাকিস্তান বেতারে তালিকাভুক্ত হন আব্দুল জব্বার। ১৯৬২ সালে তিনি প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে বিটিভির নিয়মিত গায়ক হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় আব্দুল জব্বার প্রখ্যাত ভারতীয় কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে মুম্বাইয়ের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পক্ষে জনমত তৈরিতে কাজ করেন। সে সময় কলকাতাতে অবস্থিত বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প ঘুরে হারমোনি বাজিয়ে গণসংগীত পরিবেশন করেতেন। যা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা যুগিয়েছিল। গণসংগীত গেয়ে প্রাপ্ত ১২ লাখ রুপি তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন।
সংগীতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু স্বর্ণপদক, ১৯৮০ সালে একুশে পদক, ১৯৯৬ সালে স্বাধীনতা পদক, ২০১১ সালে আজীবন সম্মাননা এবং জহির রায়হান চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
ইএইচ/

