শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

সবার জন্য নিজ হাতে ইফতার বানাতাম: স্বাগতা  

রাফিউজ্জামান রাফি
প্রকাশিত: ০৩ মার্চ ২০২৫, ০৫:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

সবার জন্য নিজ হাতে ইফতার বানাতাম: স্বাগতা  
রমজানের গায়ে লেগে আছে শৈশবের স্মৃতি। বছর ঘুরে পবিত্র মাসটি ফিরে এলে সেসব ঘ্রাণ ছড়ায়। ইফতার-সেহেরিতে ঘটে যাওয়া মজার ঘটনাগুলো মনে পড়ে। বড়বেলায় দাঁড়িয়ে ফিরে যেতে হয় সেই একরত্তি বয়সে। জনপ্রিয় অভিনেত্রী জিনাত সানু স্বাগতা পবিত্র এই মাসটিতে হারিয়ে যান ছেলেবেলার দিনগুলিতে। ঢাকা মেইলের কাছে করলেন শৈশবের রোজা নিয়ে স্মৃতিচারণ।

শুরুতেই বলেন, ‘ছোটবেলার রোজা এখনকার থেকে একটু আলাদা ছিল। তবে রোজা বলতেই অন্যরকম অনুভূতি। আয়োজনের বিষয় থাকে। যেমন আজকেও (গতকাল রোববার) আমি অনেক খাবার কিনছি। তবে কতটুকু খাব আমি জানি না। কিন্তু রোজার একটা ব্যাপার আছে তো।’


বিজ্ঞাপন


স্বাগতা মনে করেন, রমজানে সর্বত্র পবিত্রতা বিরাজ করে। তার কথায়, ‘চারদিকে পবিত্রতা বিরাজ করে। কোরআন তেলাওয়াত শোনা যায়। সবচেয়ে ভালো লাগে তারাবি। সন্ধ্যায় শহর ফাঁকা হয়ে যায়। এটা বেশি উপভোগ করি।’ 

jinat_20230923_120145261_20231215_185648473_(1)

শৈশবের রমজান নিয়ে অভিনেত্রী বলেন, ‘খুবই ভালো লাগত। প্রথম রোজা সবাইকে রাখতে হবে— এরকম একটা ব্যাপার ছিল। যদিও রোজা সাধনা ও ত্যাগের মাস। তবে আমাদের দেশে ঘরে ঘরে রোজা রাখাটা উৎসবের মতো। ওই জায়গা থেকে বিষয়টা উপভোগ করি।’


বিজ্ঞাপন


বলতে বলতে স্মৃতির জানলায় ভিড় করে নানান ঘটনা। সেসব ভাগ করে স্বাগতা বলেন, ‘মা চাইতেন আমরা ছোট থেকেই রোজা রাখি। আমার নানা আমাদের বাসায় ছিলেন। সাহরির পর তার সঙ্গে রোজার নিয়ত পড়তাম। নিয়তটা এভাবেই মুখস্থ হয়েছে। এ বিষয়গুলো খুব ভালো লাগত।’

এদিকে রোজাকালীন ভুলবশত পানি পেটে গেল কিনা এ নিয়ে ভীষণ চিন্তিত থাকে কচিরা। স্বাগতাও ব্যতিক্রম ছিলেন না। তার কথায়, ‘মাঝে মাঝে ভুলে পানি খেয়ে ফেলতাম। বাবা-মা তখন মজা করে বলতেন, স্বাগতার আজ তিনটা রোজা।’

459312306_10161864572104432_2323466113167045900_n_20250129_115016239

সমবয়সীদের সঙ্গে রোজা নিয়ে প্রতিযোগিতা হতো কি না জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি আর আমার ভাই সন্ধি প্রায় সমবয়সী। দুজনে একসাথে রোজা রাখতাম। ও না রাখলে আমিও রাখতাম না।’

তবে শৈশবের রোজার স্মৃতি মনে করতে পারেন না স্বাগতা। এর পেছনে রয়েছে বেদনাদায়ক গল্প। তার ভাষ্য, ‘আমার যখন বয়স সাত তখন আমার মা কোমায় চলে যান। আমার ভাইয়ের বয়স তখন পাঁচ, বোনের বয়স সাত দিন। ওই সময় উৎসবের অনুভূতি মাথা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল। অনেক কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। মায়ের আদর-শাসনও জোটেনি। সে কারণে ওই সময়ের রোজা নিয়ে স্মৃতিগুলো মনে করতে পারি না। যখন থেকে আমার রোজা রাখার বয়স হয়েছে তখন থেকে মনে করতে পারি।’

অন্যদের মতো এ তারকারও শৈশবের ইফতার নিয়ে মধুর স্মৃতি রয়েছে। তবে তা অন্যদের চেয়ে আলাদা। তিনি শোনান, ‘মা অসুস্থ থাকায় ছোটবেলায় সবার জন্য আমাকেই ইফতার বানাতে হতো। বেশ আনন্দ নিয়ে নিজ হাতে বানাতাম। খেতামও বেশি। ব্যাপারটা এখন মিস করি।’ 

367423920_10161034379974432_7195863864116820717_n_20240322_115149544_(2)

অভিনেত্রীর কথায়, বড়বেলার এক বছরের রোজা আমার জন্য উল্লেখযোগ্য। আজ থেকে তিন বছর আগের কথা। তখন করোনা চলছিল। সে কারণে শুটিং বন্ধ ছিল। একটু পেছনে যান স্বাগতা। বলেন, ‘আমি ১২ বছর থেকে রোজা রাখি। কর্মজীবনে ঢুকি ১৮ বছর বয়সে। তার আগ পর্যন্ত রোজা রাখতাম। কিন্তু কর্মজীবনে প্রবেশের পর ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ওই সময় রোজা রাখার পরিস্থিতিতে ছিলাম না।’

ফের করোনাকালীন রোজা নিয়ে বলেন, ‘করোনার সময় সময় আমার কর্মব্যস্ততা ছিল না, জিম করতাম। সেবছর সবকটা রোজা রেখেছিলাম, ওয়াক্তিয় নামাজ-তারাবি পড়েছিলাম। আমার মনে হয়েছে পুরো সময়টা নিজের জন্য কাজে লাগাতে পেরেছি। এমনিতে রোজার সময় নানান দিকে ইউটিলাইজ করতে গিয়ে রোজায় ঘাটতি হয়ে যায়। কেননা কোনোকিছু তো বাদ যায় না। সব কাজ দ্বিগুণ করতে হয়। অন্য মাসগুলোর চেয়ে সময় কম থাকে কিন্তু কাজ বেড়ে যায়। এসব কারণে আমার মনে হয় রোজার মাসটা ছুটি থাকলে ভালো হয়। তাহলে মন দিয়ে রোজা করা যায়।’

সবশেষে ব্যস্ততার ফিরিস্তি দিলেন এ তারকা বলেন, ‘‘মাই টিভিতে ‘ষ্টার গসিপ’ নামে একটি শো উপস্থাপনা করছি। তাছাড়া ব্যবসা নিয়ে ব্যস্ততা আছে। শুটিং নিয়ে কম।’’ মা হতে চলেছেন স্বাগতা। উল্লেখ করে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমার সবচেয়ে বড় ব্যস্ততা হচ্ছে নিজের যত্ন নেওয়া। একটা সুস্থ বাচ্চা যেন পৃথিবীতে আসে। তাকে যেন আমি সু মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি। এটাই আল্লাহ তাআলার কাছে চাওয়া আমার।’ 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর