শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

অষ্টম বর্ষে ‘বন্ধু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২২, ০৭:৩৩ পিএম

শেয়ার করুন:

অষ্টম বর্ষে ‘বন্ধু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’

স্বার্থের টানাপড়েনে প্রতিনিয়ত মানুষ মানুষের রক্ত ঝরাচ্ছে। জনজীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। অন্যদিকে আরেকদল মানুষ অন্যের জীবন বাঁচাতে প্রতিনিয়ত ছুটে চলছে! এ কাজে তারা কোনো টাকা-পয়সা পায় না, তবুও অক্লান্ত পরিশ্রম শেষে অন্যের খুশিতে তারা প্রশান্তি খোঁজে। আত্মতৃপ্তি নিয়ে নতুন একটি সকালের স্বপ্ন দেখে, সমাজকে শুদ্ধভাবে চিন্তা করে।

বলছি, বিনামূল্যে রক্ত দিয়ে আত্মতুষ্টি অর্জনকারীদের কথা। সমাজের প্রয়োজনে তারা ঝড়-বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে জীবনকে সংগ্রামী করে তুলে। ধনী-গরিব, কৃষক-মজুর থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরের মানুষের ভরসা হয়ে থাকে তারা।


বিজ্ঞাপন


>> আরও পড়ুন: জমকালো আয়োজনে নোবিপ্রবিতে উদযাপিত হবে ইইই ডে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) এমনই একটি সংগঠন হলো ‘বন্ধু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’। কুবির রক্তদান, রক্ত সংগ্রহ ও বিতরণভিত্তিক একমাত্র সংগঠন এটি। সকল বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে এরই মধ্যে সংগঠনটি সপ্তম বছর পেরিয়ে ৮ম বছরে পদার্পণ করতে চলেছে। এ উপলক্ষে কুবির ব্যাডমিন্টন কোর্ট প্রাঙ্গণে জমকালো আয়োজনে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ‘যদি করি স্বেচ্ছায় রক্তদান, বাঁচবে জীবন বাঁচবে প্রাণ’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য এক আনন্দ র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়। পরে কেক কাটার মধ্যদিয়ে দিবসটি পালিত হয়।

CU newsএ সময় অন্যদের মধ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান ছাড়াও সংগঠনটির মডারেটর সাইদুল আল আমিন ও ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা কার্যালয়ে পরিচালক ড. মোহা. হাবিবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


বিজ্ঞাপন


অনুষ্ঠানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, কিছু সংগঠন রয়েছে যারা জাতির স্বার্থে কাজ করে। বন্ধু সংগঠন তাদের মধ্যে একটি। করোনার সময় এই সংগঠন মানবতার কল্যাণে কাজ করে গেছে। এখানে যারা কাজ করছেন তাদের বেশিরভাগ ছিল ছাত্ররা। আর যে একবার রক্ত দান করেন সে প্রতিনিয়ত রক্ত দেওয়া চেষ্টা করেন। এক ব্যাগ ব্ল্যাড দেওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের মাঝে কোনো ভীতি কাজ করে না। কারণ তারা সাহসের সাথে কাজ করে যাচ্ছেন। রক্তদানের ক্ষেত্রে কোনো ধর্ম-বর্ণ দেখে না। যারা রক্ত দেয় তাদের মন যেমন পরিশুদ্ধ, তাদের রক্তও পরিশুদ্ধ থাকে।

এ সময় অন্যদের মধ্যে কুবির ছাত্র উপদেষ্টা ড. মোহা. হাবিবুর রহমান বলেন, বন্ধু ভোগের কোনো কাজ করে না, তাদের কাজটা ত্যাগের। ত্যাগের মধ্যদিয়ে তারা মানুষের জীবন বাঁচাতে এগিয়ে আসছে। আমাদের সুস্থ মন ও সুস্থ দেহের জন্য তারা করে থাকে। বন্ধু সংগঠনের এই ধারা অব্যাহত থাকুক। মানবতার কল্যাণে তারা আরও এগিয়ে আসুক, এই প্রত্যাশাই করি।

>> আরও পড়ুন: ব্যানার-পোস্টারে সয়লাব রাবি, নষ্ট হচ্ছে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য

অনুষ্ঠানে সংগঠনের সভাপতি রাসেল মাহমুদ ভূঁইয়া বলেন, আমরা সবসময় মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি। যে কোনো মুহূর্তে মানুষের রক্ত প্রয়োজন হলে আমরা দ্রুত সময়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করি। তবুও আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যদি প্রশাসন আমাদের একটু সাহায্য-সহযোগিতা করে তাহলে আমরা ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে যাব। একসময় আমাদের রক্ত দেওয়ার জন্য ডোনার পাওয়া যেত না। কিন্তু এখন আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ ডোনার রয়েছে। যে কোনো সময়ে আমাদের সাথে যোগাযোগ করলে আমরা এগিয়ে আসব। 

এ দিন অনুষ্ঠানে অতিথিদের সম্মাননা স্বারক ছাড়াও ১৫ বারের বেশি রক্ত দানকারীদের ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৯ শে অক্টোবর ‘বন্ধু’ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সে সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের শিক্ষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বাঁধনের’ সাবেক সভাপতি সাইদুল আল আমিনের অনুপ্রেরণায় কয়েকজন শিক্ষার্থীদের হাত ধরে সংগঠনটির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টায় প্রায় ৯ হাজার ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ, দান ও বিতরণ চালিয়েছে সংগঠনটি। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম চালিয়ে আসছে সংগঠনটি। এরই ধারাবাহিকতায় বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয়, হেপাটাইটিস বি সচেতনতা, টিকা প্রদান, করোনা সচেতনতা, থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা, বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিসহ বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্য-সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করে আসছে সংগঠনটি।

/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর