শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ডিজির ‘ভুয়া’ প্রতিনিধি দেখিয়ে নিয়োগ, হয়েছেন এমপিওভুক্তও

বোরহান উদ্দিন
প্রকাশিত: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ এএম

শেয়ার করুন:

ডিজির ‘ভুয়া’ প্রতিনিধি দেখিয়ে নিয়োগ, হয়েছেন এমপিওভুক্তও

শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতিনিধি থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও দেখানো হয়েছে ভুয়া প্রতিনিধির তালিকা। যেসব শিক্ষককে ডিজি’র প্রতিনিধি হিসেবে দেখানো হয়েছে তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কখনো এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিতে যাননি। অথচ এমন অনিয়ম করে দুইবারে নিয়োগ পাওয়া ছয় শিক্ষক ২০১৯ সালে এমপিওভুক্তও হয়েছেন। ২০০৯ ও ২০১১ সালে নিয়োগ পাওয়া এই শিক্ষকরা মাসের পর মাস সরকারি তহবিল থেকে তুলছেন টাকা।

এমন সুক্ষ্ম জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত নওয়াব হাবিবুল্লাহ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।


বিজ্ঞাপন


গত ২৬ সেপ্টেম্বর মাউশির সহকারী পরিচালক তপন কুমার দাস স্বাক্ষরিত চিঠিতে সরকারি বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ এবং তার মনোনীত দুজন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাকে নিয়ে সরেজমিন তদন্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদিও প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা মির্জা মাহমুদা এমন অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, ‘নিয়ম মাফিক নিয়োগ পেয়ে তারা এমপিওভুক্ত হয়েছেন।’ তিনি নিজেও নিয়োগ পাওয়া ওই ছয় শিক্ষকের একজন।

আরও পড়ুন

ভারতীয় নাগরিক হয়েও কলেজ অধ্যক্ষ পদে বহাল!

এদিকে মাউশির নির্দেশনার আলোকে ইতোমধ্যে তদন্তের প্রাথমিক কাজও শুরু করেছেন সংশ্লিষ্টরা। বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. কামরুল হাসান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক কিছু কাজ করছি। শিগগিরই সরেজমিন তদন্ত করে অর্পিত দায়িত্ব শতভাগ নিষ্ঠার সঙ্গে করব। কোনো অনিয়ম পেলে অবশ্যই তদন্তে উঠে আসবে।’

এদিকে যে শিক্ষকদের ২০০৯ ও ২০১১ সালের নিয়োগকালে ডিজি’র প্রতিনিধি হিসেবে ঢাকা কলেজের ছয় শিক্ষক ছিলেন বলে দাবি করা হচ্ছে সেই সংক্রান্ত কোনো তথ্য ঢাকা কলেজের সংরক্ষণে নেই। যা গত ২৮ মার্চ ঢাকা কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ ইউসুফ লিখিতভাবে জানিয়ে দিয়েছেন বলে জানা গেছে। নিয়োগ সংক্রান্ত এসব তথ্যাদি ঢাকা মেইলের কাছে সংরক্ষণে আছে।


বিজ্ঞাপন


এ নিয়ে বরখাস্ত হওয়া প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মো.  শাহিনুর মিয়া ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের কাছে ২০০৯ ও ২০১১ সালের নিয়োগের ডিজি প্রতিনিধি নিয়োগ সংক্রান্ত চিঠির বিষয় নিশ্চিত করতে আবেদন করেছিলেন। যেখানে ২০০৯ সালের এমপিও হওয়া শিক্ষকদের ডিজি’র প্রতিনিধির চিঠির স্মারক দেখানো হয়েছে ঢা:ক:/৮৬৭/২০০৯। আর ২০১১ সালের নিয়োগের ডিজির প্রতিনিধির স্মারক: ঢা:ক:/৪৬৭/২০১১।

সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে দুই স্মারকের কথা উল্লেখ করে ঢাকা কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ বলেন, ‘এই দুই নিয়োগের ডিজির প্রতিনিধির অফিস আদেশের দুটি চিঠির কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। এ কারণে এ বিষয়ে সত্যতা যাচাই করাও সম্ভব হয়নি।’

আরও পড়ুন

দুর্নীতির আখ্যা দিয়ে ববির নবনিযুক্ত ট্রেজারারকে যোগদানে বাধা

ঢাকা কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াসও একই কথা বলেছেন। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ‘এই নিয়োগের সময়ের কোনো তথ্য সংরক্ষণে নেই। ভবন সংস্কার কাজের সময় অনেক কাগজপত্র হয়তো হারিয়ে যেতে পারে।’ অবশ্য ২০০৯ ও ২০১১ সালের নিয়োগের সময়ের এমন চিঠি সংরক্ষণে নেই দাবি করলেও কলেজটির ২০১০ সালের একটি নিয়োগের তথ্য সংরক্ষণে আছে কলেজে। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে!

যদিও তদন্তের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছেন প্রতিষ্ঠানটিতে প্রশ্নবিদ্ধ নিয়োগ নিয়ে বহাল তবিয়তে থাকা শিক্ষকরা। যেসব শিক্ষককে ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে দাবি করা হচ্ছে, তারা উপস্থিত ছিলেন বলে স্বীকারোক্তি নেওয়ারও চেষ্টা চলছে। একইসঙ্গে নিজেদের মতো করে কলেজটিতে গভর্নিং বডি গঠনের জন্যও জোর চেষ্টা করছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মির্জা মাহমুদাসহ আরও কয়েকজন শিক্ষক ও অভিভাবক। যেখানে স্থানীয় একজন রাজনীতিককে সভাপতি করার প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বর্তমানে সভাপতি হিসেবে আছেন ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মিজানুর রহমান। শিক্ষকদের একাংশ চাচ্ছেন প্রশাসনের এই কর্মকর্তা সভাপতি হিসেবে থাকুক। এতে নিরপেক্ষ তদন্ত হবে। সত্য উম্মোচিত হবে। প্রতিষ্ঠানও ভালো চলবে। ইতোমধ্যে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের কাছে এমন আবেদনও করা হয়েছে।

এদিকে ২০০৯ সালের নিয়োগে ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে নাম আসা ঢাকা কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষক আহম্মেদ করিমের সঙ্গে কথা বলে ঢাকা মেইল। বিষয়টি শুনে অনেকটা বিস্মিত হয়ে এই শিক্ষক বলেন, ‘নবাব হাবিবুল্লাহ কলেজ কর্তৃপক্ষ যে দাবি করছে এটা সত্য নয়। আমি ওখানে নিয়োগ পরীক্ষায় বিশেষজ্ঞ হিসেবে উপস্থিত ছিলাম না। ২০০৯ সালের ১১ জুলাইয়ের নিয়োগ পরীক্ষার নম্বরপত্রে আমার যে স্বাক্ষর ব্যবহার হয়েছে তাও আমার নয়। যে সিল দেওয়া হয়েছে সেখানে নামের বানান ভুল। কোনো আইডি নম্বরও ব্যবহার করা হয়নি।’

habib-2একই তালিকায় বাংলা বিষয়ের বিশেষজ্ঞ হিসেবে নাম উল্লেখ করা হয়েছে একই কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহনাজ পারভীনের। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ‘স্মৃতিতে যতটুকু আছে তাতে মনে পড়ে না কখনো নবাব হাবিবুল্লাহ তো দূরের কথা, উত্তরার কোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পরীক্ষা নিতে যাওয়া হয়নি। গেলে অবশ্যই কলেজের চিঠি থাকত। ঢাকা কলেজে তো কোনো চিঠিই নেই। চিঠি ছাড়া কোনো নিয়োগে যাওয়ার সুযোগ নেই।’

যেসব শিক্ষকের নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন!

মাউশি, দুর্নীতি দমন কমিশনে জমা দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির ছয় শিক্ষকের নিয়োগের সময় ডিজির প্রতিনিধি ছিলেন না। ঢাকা কলেজের ছয় শিক্ষককে ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে দেখিয়ে ‘ভুয়া’ চিঠি তৈরি করেন ২০১৬ থেকে তিন বছর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক হারুনুর রশিদ। অথচ তার নিয়োগেও ডিজির প্রতিনিধি ছিলেন না।

এছাড়াও বর্তমান অধ্যক্ষ মির্জা মাহমুদা (বাংলা), মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন (জীববিজ্ঞান), মোহাম্মাদ ওসমান গনি (হিসাব বিজ্ঞান) ও মো. ওসমান গনি (গণিত)। এদের মধ্যে পাঁচজন নিয়োগ পেয়েছেন ২০০৯ সালে। আর ২০১১ সালে গণিতে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক ওসমান গণির নিয়োগেও ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগের ভুয়া চিঠি ব্যবহার করে এমপিওভুক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অথচ এই শিক্ষকরা কখনো এমপিও দাবি করতে পারবেন না নিয়োগের সময় দেওয়া শর্তে তা স্পষ্ট উল্লেখ ছিলো।

যে কারণে ডিজির প্রতিনিধি নিয়োগের চিঠি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে তা খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, এই শিক্ষকদের নিয়োগের সাল ২০০৯ হলেও এদের এমপিও করানোর চেষ্টা শুরু হয় ২০১৮ সালে। পরের বছর আবেদন করে তারা এমপিওভুক্ত হন। শুধু তাই নয়, নিয়োগের সময় থেকে নিয়ম অনুযায়ী তারা জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের স্কেলের বেতন পেলেও প্রতিষ্ঠানের তহবিল থেকে এরা প্রত্যেকে সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতন তুলছেন।

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ডিজির প্রতিনিধির ‘ভুয়া’ চিঠি দিয়ে এমপিও আবেদনের সময় তৎকালিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ তড়িঘড়ি করে কাগজপত্র প্রস্তুত করেন। যেখানে ঢাকা কলেজের ছয় শিক্ষক যথাক্রমে ড. মো. আশরাফ আলী খান, ড. মো. আনোয়ার আলম খান, সেলিমা বেগম, দীপক কুমার কর্মকার, শাহনাজ পারভীন ও আহম্মেদ করিমের নাম উল্লেখ করা হয়।

আরও পড়ুন

অফিস না করে বেতন উত্তোলনের অভিযোগ শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে

যদিও এদের মধ্যে দুজন শিক্ষক স্পষ্ট জানিয়েছেন তারা এই প্রতিষ্ঠানে কখনো কোনো নিয়োগে যাননি। তাদের একজন আশরাফ আলী খান। অবসরে গিয়ে এখন অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত আছেন তিনি।

আশরাফ আলী খান ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘অনেক আগের ঘটনা তো সেভাবে মনে করতে পারছি না। আমার অন্য কলিগরা গেলে তো আমারও যাওয়ার কথা। দেখেন তারা কী বলেন!’

রাজবাড়ী সরকারি কলেজ থেকে এলপিআরে যাওয়া দীপক কুমার কর্মকার ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘অনেক আগের বিষয় আমার স্মরণে নেই। তবে আমি চাই তদন্তে যাতে সত্যটা বের হয়ে আসে। কেউ অন্যায় করলে যেন শাস্তি হয়। আবার কেউ অযথা যাতে হয়রানির শিকার না হয়।’

প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, এই চিঠি তৈরির সময় সভাপতির দায়িত্বে থাকা প্রয়াত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের ঘনিষ্ঠ অ্যাড. মো. আবু হানিফ বরখাস্ত হওয়া অধ্যক্ষ মো. শাহিনুর মিয়াকে চাপ দেন। ফলে সচেতন শিক্ষকরাও এর প্রতিবাদ করতে পারেননি। শাহিনুর মিয়া বর্তমানে কারাগারে আছেন।

প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে মাউশির উপপরিচালক তপন কুমার দাস ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘আমরা লিখিত অভিযোগ আমলে নিয়ে নিয়োগে অনিয়মসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে তদন্ত করছি। তদন্তের রিপোর্ট পেয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এদিকে ঢাকা মেইলের হাতে আসা ডিজির প্রতিনিধি ও নিয়োগ সংক্রান্ত তথ্যাদি যাচাই করে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে জনবল কাঠামোর নির্দেশনার কথা স্পষ্ট করে উল্লেখ থাকার কথা থাকলেও কলেজটির দেওয়া চিঠিতে তা নেই।

ইংরেজি বিভাগের জন্য বিশেষজ্ঞ হিসেবে ঢাকা কলেজের দীপক কুমার কর্মকারের কথা উল্লেখ করা হলেও পরীক্ষার খাতায় স্বাক্ষর রয়েছে রাজউক কলেজের একজন শিক্ষকের। জানা গেছে, স্বাক্ষরকারী শিক্ষকের নাম মাহবুব হোসেন। যিনি জীববিজ্ঞান বিভাগে নিয়োগ পাওয়া মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেনের ভাই। এছাড়াও ইংরেজিতে দ্বিতীয় হওয়া আসাদুজ্জামানের মৌখিকের নম্বর ৮ থেকে কেটে ৪ করা হয়েছে। নম্বরপত্রে প্রতিনিধি হিসেবে যাদের কথা বলা হয়েছে তাদের সবার স্বাক্ষরও নেই। কোথাও আবার স্বাক্ষর থাকলে সিল নেই। নম্বরপত্রে ড. মো. কলিমুল্লাহ নামে টঙ্গী কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের স্বাক্ষর রয়েছে। যদিও নিয়োগ সংক্রান্ত প্রতিনিধিদের কোনো তালিকায় তার নাম দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন

পাল্টে গেছে ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির চিত্র!

ব্যবসায় নীতি বিষয়ের নম্বরপত্রে ঢাকা কলেজের আহম্মেদ করিমের স্বাক্ষর থাকলেও স্বাক্ষর সঠিক নয় বলে তিনি জানিয়েছেন। ঢাকা মেইলকে আহম্মেদ করিম বলেন, ‘স্বাক্ষর আমার নয়। নামের বানানও ভুল দিয়েছে।’

এদিকে প্রতিষ্ঠানটির এসব বিষয় নিয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসন থেকেও একটি তদন্ত হয়েছে। সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো. রোকনুজ জামান ইতোমধ্যে সরেজমিন তদন্ত করেছেন।

বর্তমান সভাপতির দায়িত্বে থাকা ঢাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মিজানুর রহমানকে একাধিকবার কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।

যা বলছেন প্রতিষ্ঠানের বর্তমান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ

নিয়োগ পরীক্ষায় ডিজির প্রতিনিধি না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মির্জা মাহমুদা ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এটার তদন্ত হচ্ছে, এ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’ সাংবাদিকদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘দুনিয়ার এতো প্রতিষ্ঠানে কত অনিয়ম তা নিয়ে আপনাদের (সাংবাদিক) মাথা ব্যথা নেই। সবাই শুধু আমাদের এটা নিয়েই সারাদিন জ্বালাতন করছেন। এসব আর ভালো লাগে না।’

ঢাকা কলেজের যেসব শিক্ষককে প্রতিনিধি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তারাও নিয়োগে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করছেন না বললে আরও চটে যান মির্জা মাহমুদা। একজন শিক্ষকের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাকে তো তিনি বলেছেন নিয়োগে এসেছেন। এখন না বলেন কী করে? সে কি তাহলে পাগল হয়ে গেছে? আমি এখনই তার সঙ্গে কথা বলতেছি।’

এদিকে এই শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত হওয়ার সময় দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানে যতো নিয়োগ হয়েছে তার মধ্যে আমাদের ছয়জনের নিয়োগ শতভাগ সঠিক হয়েছে। কোনো অনিয়ম হয়নি। এখন তদন্ত হচ্ছে। আমরা তথ্য দিয়েছি। আশা করি সত্য উদঘাটন হবে।’

তিনিও এ বিষয় নিয়ে কেন এতো লেখালেখি হচ্ছে সেই প্রশ্ন তুলে ঢাকা মেইলের প্রতিবেদককে বলেন, ‘এতো আগে নিয়োগ পেয়েছি, মাঝে কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলাম সেই সময়ের জিনিস নিয়ে এতো লেখালেখি কেন? মাঝে তো আরও অনেকের সময় অনেক ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে তো সাংবাদিকদের কোনো লেখালেখি দেখি না।’

বিইউ/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর