রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া অর্থ দ্রুত দেশে ফেরাতে নানামুখী তৎপরতা হাতে নিয়েছে অর্ন্তবর্তী সরকার। যদিও চুরির অর্থ ফেরাতে গৃহীত পদক্ষেপে দীর্ঘদিন নির্লিপ্ততা দেখিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত সরকার। কিন্তু পালাবদলের পর সেই অবস্থা চলতে দিতে নারাজ বর্তমান সরকার। সেজন্য সরকার নতুন সিদ্ধান্ত নিতে ব্যাপক তোড়জোর শুরু করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকারের বিশেষ ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
সর্বশেষ রিজার্ভ চুরির অর্থ দেশে ফেরাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে রোববার (১৩ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফয়জুল কবির খান বৈঠক করেছেন।
বিজ্ঞাপন
সূত্র জানিয়েছে, দেশের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া ঘটনার সঙ্গে দেশীয় ওবং বিদেশি চক্রের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে বলে বিভিন্ন গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সেজন্য প্রায় ৯ বছরেও মামলার তেমন অগ্রগতি হয়নি। কোনো বিশেষ মহলে মামলা ধাপাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে।যদিও চুরি হওয়া অর্থের ২০ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইন সরকারের উদ্যোগে ফেরত দেওয়া হয়েছিল। বাকি প্রায় ৮১ মিলিয়ন ডলার ফেরত আনার কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
মূলত যুক্তরাষ্ট্র ও ফিলিপাইনে চলমান মামলায় সেই অর্থ আটকে রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তার যোগসাজসে এতদিন রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরানোর প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টে যাদের নাম উঠে এসেছে তাদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। অপরপক্ষে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় চলমান মামলায় জিতে বাকি অর্থও ফেরাতে করণীয় নির্ধারণে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান বলেন, রিজার্ভ চুরির অর্থ ফেরত আনা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য নেই। তবে গভর্নরের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং মুহাম্মদ ফয়জুল কবির খান সকালে বৈঠক করেছেন। বৈঠকের বিষয়গুলো গণমাধ্যমে প্রকাশের কোনো নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানানো হয়নি।
গত ফেরব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, রিজার্ভের অর্থ ফেরাতে তৎপরতা বাড়ানো হবে। সেসব অর্থ উদ্ধারে কাজ চলছে। বিদেশিরাও সহযোগিতা করছে। এমনকি পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনসহ (এফবিআই) অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
টিএই/এফএ