শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

ইতিবাচক মানসিকতা দেখিয়েছি, এখন আইএমএফের পালা: অর্থ উপদেষ্টা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৩৮ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএএফ) ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, রাজস্ব সংগ্রহ করা, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা এবং মুদ্রা বিনিময় হার বাজার ওপরে ছেড়ে দেওয়াসহ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের সর্বোচ্চ প্রয়াস চলমান রয়েছে। আমাদের যা যা করার তা করেছি। এখনও করছি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা আমাদের ইতিবাচক মানসিকতা দেখিয়েছি। এখন আইএমএফ ঋণের কিস্তি (টাকা) দিক বা না দিক এসব বিষয়ে তাদের। এখন আইএমএফ’র মনোভাব দেখানোর পালা। আমরা আশাবাদী।

রোববার (৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে ঢাকা সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। 


বিজ্ঞাপন


একইদিনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি, বিনিয়োগ পরিস্থিতি, ব্যাংকের খেলাপি ঋণ, বাজার ভিত্তিক বৈদেশিক মুদ্রার বিনিমিয় হার, তারল্য সংকট, মূল্যস্ফীতি এবং রাজস্ব আদায়ের অগ্রগতি বিষয়ে খোঁজ-খবর নেয়।

ড. সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, আইএমএফ রাজস্ব সংগ্রহের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখভাল করেছে। তারা জানিয়েছে যে, লাখ লাখ মানুষ জিরো রিটার্ন দেয়। বাংলাদেশের ট্যাক্স জিডিপি রেশিও সাড়ে ৭ শতাংশ। অন্যদিকে নেপালের ১২-১৩ শতাংশ। ভারতে ১৭-১৮ শতাংশ। আমরা তাদের এসব বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ ও অগ্রগতি তাদেরকে অবহিত করেছি। এছাড়া খেলাপি ঋণ আদায়, একক বিনিময় হার নিয়ে তাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেখিয়েছেন তারা। আমরা তাদেরকে সবকিছু জানিয়েছি।

এক প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল এবং সঠিক পথে রয়েছে বলে আইএমএফ মনে করে। তবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি, বিনিময় হার স্থিতিশীল করা, বাজেট ঘাটতি কমানোর বিষয়ে তারা দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আর বাংলাদেশের অর্থনীতি স্থিতিশীল থাকায় আইএমএফ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ওদের (আইএমএফ) মূল ফোকাস ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বাড়ানো, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আর একটু স্থিতিশীল করা, বাজেটে ঘাটতি কমানো। আমরা ভ্যাটের হার সিঙ্গেল রেটে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছি।


বিজ্ঞাপন


ভ্যাট সিঙ্গেল রেটে নামিয়ে আনার বিষয়ে আপনাদের অবস্থান কী? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সিঙ্গেল রেটের বিষয়ে আমরা চেষ্টা করব। তবে আমরা একবারে সিঙ্গেল রেটে পৌঁছাতে পারব না।

আইএমএফ’র ঋণের কিস্তির বিষয়ে তিনি বলেন, দুই কিস্তির অর্থ একবারে দেবে। ওরা এখন রিভিউ করবে। আমরা ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বাড়াবো কীভাবে, মাত্র ৭ শতাংশ আছে। তারপর আমাদের ট্যাক্স কালেকশন কীভাবে করবো। ট্যাক্স অ্যাডমিনিস্ট্রেশন লিকেজ যেন না হয়। বেসিকলি আইএমএফের কনসার্ন হলো রেভিনিউ জেনারেশন, আমাদের বাজেট সাইজ কত হবে, ডেফিসিট (ঘাটতি) কত হবে, এগুলো নিয়ে আপাতত কথা হয়েছে। আমার সঙ্গে ডিটেইল কথা হয়নি, এনবিআরের সঙ্গে কথা হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা হবে লোন রেজুলেশন নিয়ে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সার্বিকভাবে ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা, খেলাপি ঋণ আদায়, এনবিআরের ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বাড়াবো কীভাবে, কোন কোন ক্ষেত্রে বাড়াবো এগুলো নিয়ে আমার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। সবার সঙ্গে ওরা ইন্ডিভিজুয়ালি বসবে। তারপর আপনারা কয়দিন পরে জানতে পারবেন।

একইদিনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে গত ডিসেম্বরে করা প্রতিশ্রুতির অগ্রগতি বিষয়ে জানতে চায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঢাকায় সফররত মিশনের সদস্যরা। সংস্থাটির পক্ষ থেকে  ঋণের শর্ত হিসেবে জুড়ে দেওয়া শর্তগুলো বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংক কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে তার হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিনিধি দলটি।

সেইসঙ্গে তাদের গৃহীত পদক্ষেপ ব্যাংক খাতের সুশাসন ফেরাতে কতটা সহায়তা করছে সেই বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন তারা। পাশাপাশি দেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতীশীলতা, রাজস্ব আদায়, জিডিপির তুলনায় রাজস্ব আদায়ের হার, বিনিয়োগে পরিস্থিতি, মূল্যস্ফীতি এবং তারল্য সহায়তা দেওয়ার পর সেই ব্যাংকগুলোর অগ্রগতি জানতে চেয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।

টিএই/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর