গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ বরপক্ষকে উদ্ধার করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ। এ সময় আত্মরক্ষায় পাশের বাড়িতে আশ্রয় নেওয়া পুলিশকে উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় নামীয় ও অজ্ঞাতসহ ৫৫৯ জনের বিরুদ্ধে সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেছে পুলিশ।
রোববার (৬ এপ্রিল) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাকিম আজাদ।
বিজ্ঞাপন
এর আগে শনিবার (৫ এপ্রিল) রাতে ওই থানার সাব-ইন্সপেক্টর রুহুল আমিন বাদী হয়ে পুলিশের ওপর আক্রমণ ও কাজে বাধা দেওয়াসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগে এই মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দিবাগত রাতে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ছাপড়হাটী ইউনিয়নের পশ্চিম ছাপড়হাটী হাজিপাড়া গ্রামের প্রবাসী দুখু মিয়ার মেয়ের সঙ্গে পাশের রামজীবন ইউনিয়নের আয়নাল হকের ছেলে সবুজ সরকারের (২৮) বিয়ে হয়। ওই দিন বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে গিয়ে গেটের টাকা ও ‘নরম ভাত’ ঘিরে কনে পক্ষ ও বর পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাসহ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অধিকাংশ বরযাত্রী পালিয়ে যান। তবে বরসহ কয়েকজনকে আটক করে এলাকাবাসী। পরে বরপক্ষের লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে থাকেন।
এ ঘটনার পরের দিন শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দিবাগত রাতে অবরুদ্ধ থাকা লোকজনকে উদ্ধারে তাদের পরিবার সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেয়। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কনের বাড়িতে অবরুদ্ধ হওয়া বরপক্ষের লোকজনকে উদ্ধার করতে যায় ওসিসহ সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কনে পক্ষের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়ে। গাড়িতে লাঠি দিয়ে ভাঙচুর চালায় এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। প্রাণ রক্ষায় পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয় ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা।। পরে ওই বাড়িটিও ঘিরে ফেলে বিয়ে বাড়ির উত্তেজিত লোকজন। পরে পুলিশের খবরে অন্যান্য পুলিশ সদস্য ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অবরুদ্ধ ওসিসহ অন্যান্যদের উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় শনিবার রাতেই বিয়ে বাড়ির ৫৯ জন নামীয় ও ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ।
এ বিষয়ে সেনাবাহিনীর সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. ওয়াজেদ হোসেন বলেন, ওসি সাহেবেরর ফোন পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই এবং তাদেরকে উদ্ধার করি। এ সময় এলাকাবাসীর আচরণে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাকিম আজাদ বলেন, বিয়ের বাড়িতে বরসহ তার কয়েকজন অবরুদ্ধদের উদ্ধারে গেলে আমাদের লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। আমাদের ওপর হামলা করা হলে আমি পাশের একটি বাড়িতে আশ্রয় নেই। পরে ওই বাড়িটিও ঘিরে ফেলেন তারা। পরে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাবাহিনীর সহায়তায় আমরা উদ্ধার হই। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ৫৯ জন নামীয় এবং ৪০০-৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
প্রতিনিধি/ এমইউ