নেত্রকোনার শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে শহরের মোক্তারপাড়া এলাকায় প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে চাকরিপ্রত্যাশী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি,ট্রেজারার ও রেজিস্ট্রারকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
বিকেল ৪টার দিকে শুরুর পর ঘণ্টাব্যাপী চলা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন চাকরিপ্রার্থী রাজিব মণ্ডল, জহিরুল ইসলাম, মাহামুদুল হাসান, আবদুল্লাহ আল মামুন, মাসুদ হাসান, মো. ইকবাল হয়দার, মোজাম্মেল হক, মো. সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।
রাজিব মণ্ডল বলেন, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ অধিকাংশ নিয়োগে আর্থিক লেনদেন, স্বজনপ্রীতিসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি হয়ে আসছে। নিয়োগপ্রাপ্ত অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে ইউজিসির নিয়ম না মেনে অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন দেখিয়ে বৈধ করে নেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৭, ২৮ ও ২৯ জুন অনুষ্ঠিত কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে আবার গ্রহণ ও তদন্ত কমিটি গঠন করে বিগত সময়ের নিয়োগের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তিনি।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পি এম সফিকুল ইসলামের অব্যাহতি চেয়ে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক এনামুল হক ওরফে আরাফাতের বহিষ্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: হাসিনার ফাঁসির দাবি ইবি শিক্ষার্থীদের
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, গত বৃহস্পতিবার থেকে তারা শেখ হাসিনার নাম পরিবর্তন, রাজনীতি নিষিদ্ধ, দুই মাসের মধ্যে স্থায়ী ক্যাম্পাস চালুসহ ১১ দফা দাবি পূরণের নিশ্চয়তা দিতে উপাচার্যকে ৭২ ঘণ্টার সময় বেঁধে দেন। তাদের দাবির মুখে উপাচার্য গোলাম কবীর গত রোববার সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেন। এরপর শিক্ষার্থীরা কোষাধ্যক্ষের পদত্যাগ ও জনসংযোগ দপ্তরের সহকারী পরিচালক এনামুল হকের বহিষ্কারের দাবিতে সরব হন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের ১১ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। প্রতিষ্ঠার পরপরই একনেকে দুই হাজার ৬৩৭ কোটি ৪০ লাখ ৯৯ হাজার টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়। শহরের রাজুর বাজার এলাকায় টিটিসির একটি তিনতলা ভবনে যাত্রা শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি ও পরের বছর থেকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং—এই চারটি বিভাগে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়। সদর উপজেলার রামপুর, সাহিলপুর, গোবিন্দপুর, কান্দুলিয়া ও রায়দুমরুহি মৌজায় ৪৯৮ দশমিক ৪৫ একর জায়গায় পূর্ণাঙ্গভাবে বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হবে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনটি অনুষদের অধীনে ৪টি বিভাগের শিক্ষার্থীসংখ্যা ৫১৩। শিক্ষকসংখ্যা ১৯। কর্মকর্তা ও কর্মচারী ৮৬ জন।
প্রতিনিধি/ এমইউ