আধিপাত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে বরিশাল জেলার হিজলা উপজেলায় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুফিয়ান সরদারকে (৩২) কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৩ জুলাই) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের চরদুর্গাপুর গ্রামে হত্যায় অভিযুক্ত মাইনুল মাতুব্বরের বাড়ির সামনে ১৫-১৮ জন এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) হিজলা থানায় ৩৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন সুফিয়ানের বাবা আওয়ামী লীগ নেতা জামাল সরদার। এ মামলায় রিফাত মাতুব্বর নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সুফিয়ানের সঙ্গে থাকা তিন বন্ধু ও অটোরিকশা চালক আহত হয়েছে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুবাইর আহমেদ। ওসি বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে কোপাকুপির ঘটনা ঘটেছে। এতে অপর পক্ষের ৩-৪ জন আহত হয়েছে।
হত্যার শিকার সুফিয়ান সরদার (৩২) উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়নের চর দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা জামাল সরদারের ছেলে। সুফিয়ান মেমানিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি। গ্রেফতার রিফাত মাতুব্বর হিজলার মোস্তফা মাতুব্বরের ছেলে।
হত্যার শিকার সুফিয়ানের বাবা জামাল সরদারের অভিযোগ, উপজেলার মেমানিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগেরসহ সভাপতি ওহাব আলী গোলদার ও ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মাইনুল ইসলাম মাতুব্বরের সঙ্গে পূর্বে থেকে বিরোধ চলছিল সুফিয়ানের। মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় মাছ ঘাট দেওয়া ও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সুফিয়ানের ক্ষোভ আরও বৃদ্ধি পায় তাদের। সেই বিরোধকে কেন্দ্র করে বুধবার রাতে অটোরিকশাযোগে বন্ধুদের নিয়ে ফিরছিল। তখন অভিযুক্ত মাইনুল মাতুব্বর তার বাড়ির সামনে দলবল নিয়ে হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে। এ হামলায় মাইনুল ইসলাম মাতুব্বর, ওহাব আলী গোলদার, মুনসুর মাতুব্বর, মাইদুল মাতুব্বর, মাইদুল গোলদার, লোকমান সরদার, নাইম সরদার, শফিকুল সরদার, আমিনুল মাতুব্বর, আমির গোলদার, রিফাত মাতুব্বর ও মেহেদি হাসানসহ ১৫-১৮ অংশ নেয়।
সুফিয়ানের বাবা জামাল আরও বলেন, ঘটনার আগে সন্ধ্যায় উপজেলার টেকেরহাট বাজারে মোক্তার কসাইয়ের দোকানে জলদস্যু তাহের, হিজলার গৌরবদী ইউনিয়নের ইউপি সদস্য কালাম সরদারকে নিয়ে মাইনুল ইসলাম মাতুব্বর ও ওহাব আলী গোলদার বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হামলা চালানো হয় বলে দাবি জামাল সরদারের।
আহতদের একজন বারেক সরদার জানান, যখন মারধর করা হয় তখন মেমানিয়া ইউনিয়নে পরিষদের মোকলেসুর রহমান দাঁড়িয়ে ছিল। এ সময় মাইনুলসহ ১৫-১৮ জন ধারাল অস্ত্র, শাবল, লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে সবাইকে আহত করে। হামলায় গুরুতর আহত সুফিয়ানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
হিজলা থানার ওসি জুবাইর আহমেদ বলেন, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় আইনানুযায়ী পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে জানান তিনি।
অভিযুক্তরা জানিয়েছেন, হামলা চালিয়ে উল্টো মিথ্যা দায় চাপানো হচ্ছে। এ অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি অভিযুক্তদের কয়েকজনের।
প্রতিনিধি/এসএস