চিংড়ি ঘের নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়ন কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মুছা গাজীকে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আটজনের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে এ মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে শুক্রবার (৫ জুলাই) বিকেলে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মর্গে আবুল কাশেমের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে রাত সাড়ে ৯টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: শিবগঞ্জে জেলা পরিষদ সদস্য হত্যা মামলার ৪ আসামি গ্রেফতার
নিহতের স্ত্রী ফিরোজা বেগম বলেন, শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নের খোলপেটুয়া গ্রামের চিংড়ি ঘেরের ২৫ বিঘা জমি নিয়ে আমার স্বামী আবুল কাশেম ও স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি লোকমান গাজীর মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে তিনি ও তার স্বামী আবুল কাশেম বাড়ি থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে মাছ ধরতে যান।
তখন রাত ১২টার দিকে তারা আটল ঝাড়ার জন্য নৌকায় উঠলে স্থানীয় দুদু গাজীর ছেলে লোকমান গাজী, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুছা, রুহুল আমিন গাজীর ছেলে সালাউদ্দিন গাজী, দাউদ গাজীর ছেলে সেকেন্দার গাজী, রহিম গাজীর ছেলে সুমন গাজী এবং আবু সাইদসহ ২০/২২ জন তাকে (ফিরোজা) ঘেরের মধ্যে মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত ডিঙি নৌকার মধ্যে বেঁধে ফেলে রাখে। পরে তার স্বামীকে নৌকা থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে ঘেরের পানিতে ফেলে রেখে চলে যায়।
সাতক্ষীরা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি বেগম মাহফুজা সুলতানা রুবি বলেন, ঘের নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে গাবুরা ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জেলা কৃষকলীগের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে নতুন কর্মসূচি নেওয়া হবে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন: চোরের ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল নারীর
এদিকে শ্যামনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ এস এম জগলুল হায়দার বলেন, ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় যে বা যারা জড়িত থাক না কেন, সবাইকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক।
শ্যামনগর থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সরল বিশ্বাস জানান, আবুল কাশেম হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে খোলপেটুয়া গ্রামের আফছার গাজীর ছেলে মুছা গাজীকে প্রধান আসামি করে ১৫জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭/৮জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। সুন্দরবন উপকুলীয় এলাকায় আসামিদের বাড়ি হওয়ায় তারা বনের মধ্যেই আত্মগোপন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
প্রতিনিধি/ এমইউ