নেত্রকোনার কলমাকান্দায় জোর করে অন্যর জমি দখল, হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় করা মামলায় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও তার ছেলেসহ পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন আদালত।
সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার রংছাতী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান পাঠান বাবুল (৬২), তার ছেলে হৃদয় পাঠান (২৬), ভাই মাসুম পাঠান (৪০), ভাতিজা সাইদুল পাঠান (৩০) ও জিল্লু পাঠান (৩৪)।
বিজ্ঞাপন
তাদের মধ্যে রংছাতী ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান পাঠান বাবুলকে ১৫ মাসের সাজা, তার ছেলে হৃদয় পাঠানকে ১৮ মাস, ভাতিজা সাইদুল পাঠানকে ১৮ মাস ও জিল্লু পাঠানকে ১৫ মাস এবং ভাই মাসুম পাঠানকে ৩ মাসের সাজা দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৯ মে) নেত্রকোনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক রিমি সাহা এ রায় দেন।
রায় প্রদানের সময় চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান পাঠান বাবুল, তার ছেলে হৃদয় পাঠান ও ভাতিজা সাইদুল পাঠান আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। অন্য দু’জন অনুপস্থিত ছিলেন।
নেত্রকোনা কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক মো. জাফর ইকবাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান পাঠান বাবুল উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বলে জানা গেছে।
মামলার অভিযোগ ও বাদীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২০২২ সালের ৫ অক্টোবর রংছাতী ইউনিয়ন পরিষদের পাশে থাকা ইউনুছ মাস্টারের একটি জমি আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান, তার ছেলে ও ভাই-ভাতিজাদের নিয়ে জোর করে দখল করেন। এ সময় মালিক পক্ষ বাধা দিলে তাদের ওপর হামলা চালান চেয়ারম্যান ও তার লোকজন। এতে ইউনুছ মাস্টারের পক্ষের ৬ জন আহত হয়। হামলা শেষে চেয়ারম্যানের লোকজন ইউনুছ মাস্টারের ৭ হাজার ফুট স্তুপকৃত বালু ও ২-৩ লাখ টাকার কাঠ নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় এদিনই ইউনুছ মাস্টারের স্ত্রী আছমা আক্তার বাদী হয়ে ওই পাঁচ জনের বিরুদ্ধে কলমাকান্দা থানায় হামলা ও লুটপাটের মামলা করেন। মামলার পরপরই পুলিশ চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান ও তার ছেলে হৃদয় পাঠানকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। পরে তারা জামিনে মুক্তি পায়।
দীর্ঘ শুনানির শেষে মঙ্গলবার আদালত তাদের বিরুদ্ধে এ রায় দেন।
মামলার বাদী আছমা আক্তারের স্বামী ইউনুছ মাস্টার জানান, চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান একজন জঘন্য রকমের মানুষ। তার বিরুদ্ধে এক ডজনের বেশি মামলা রয়েছে। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা স্বত্বেও আমাদের কেনা জমি জোর করে দখল করে নেয়। বাধা দিলে হামলা চালিয়ে আমাদের ৬ জনকে আহত করে। এ সময় ৭ হাজার ফুট স্তুপকৃত বালু ও ২-৩ লাখ টাকার কাঠ নিয়ে যায়। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাই আইনের আশ্রয় নিয়েছি। আদালত ন্যায় বিচার করেছেন।
প্রতিনিধি/এসএস