নেত্রকোনার কলমাকান্দায় এক গৃহবধূকে মারধরের পর মাথার চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ননদ ও ননদের স্বামীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ননদ রেশমা (২০) ও ননদের স্বামী মো. নয়ন মিয়ার (২৬) বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী।
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ লুৎফুল হক মঙ্গলবার (২১ মে) বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
এরআগে গত সোমবার (২০ মে) বাদ মাগরিব উপজেলার পোগলা ইউনিয়নের কুঁতিগাও গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী গৃহবধূর নাম শিখা আক্তার শিল্পী (৩৬)। তিনি উপজেলার কুঁতিগাও গ্রামের মৎস ব্যবসায়ী মো. ফজলুল হকের স্ত্রী।
আর অভিযুক্তরা হলেন— ভুক্তভোগী গৃহবধূর ননদ একই গ্রামের রেশমা আক্তার (২০) ও ননদের স্বামী মো. নয়ন মিয়া (২৬)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দুই বছর আগে রেশমার অন্যত্র বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের কিছুদিন পর প্রতিবেশী নয়নের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে রেশমার। ওই স্বামীকে ছেড়ে দেড় বছর আগে নয়নকে বিয়ে করে রেশমা। কিন্তু রেশমার পরিবার এ বিয়ে মেনে নেয়নি। এ নিয়ে বড় ভাই ফজলুল হক ও তার স্ত্রী শিখা আক্তার শিল্পীর প্রতি ক্ষিপ্ত ছিল রেশমা। এরই জেরে গত সোমবার মাগরিব নামাজের সময় ঘরে ঢুকে শিল্পীকে বেধরক মারধর করে রেশমা ও তার স্বামী নয়ন। এক পর্যায়ে শিল্পীর চুল কেটে দেয় তারা। পরে শিল্পীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা।
বিজ্ঞাপন
এদিকে, এ ঘটনায় শিল্পীর স্বামী ফজলুল হক বাদী রেশমা ও তার স্বামী নয়ন মিয়ার বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী শিখা আক্তার শিল্পী বলেন, ঘটনার সময় বাড়িতে নিজের ঘরে একাই ছিলাম। মাগরিব নামাজ শেষে জায়নামাজে তসবিহ পাঠ করছিলাম। এ সময় ননদ রেশমা ও তার স্বামী নয়ন ঘরে ঢুকে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করতে শুরু করে। আমি চিৎকার করতে চাইলে আমার মুখ বেঁধে ফেলে। তখন আর চিৎকার করতে পারছিলাম না। পরে আমার মাথার চুল কেটে দেয়। তাদেরই চিৎকার চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা দৌড়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে কলমাকান্দা হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গৃহবধূ শিল্পীর স্বামী মো. ফজলুল হক বলেন, আমার বোন রেশমা প্রেম করে নয়নকে বিয়ে করে। এ বিয়ে মেনে না নেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে গত সোমবার সন্ধ্যায় ঘরে ঢুকে মারপিট করে শিল্লীকে গুরুতর আহত করে রেশমা ও নয়ন। এসময় ঘরে থাকা নগদ টাকা স্বর্ণঅলংকারসহ আমার স্ত্রী মাথার চুল কেটে নিয়ে যায় তারা। আমি এর ন্যায় বিচার চাই।
ভুক্তভোগী শিল্পীর বাবা আব্দুল কুদ্দুছ জানান, আমার মেয়েকে ঘরে একা পেয়ে এমন নির্মম অপমান অপদস্ত করে মেরেছে। আমি এর বিচার চাই।
রেশমার স্বামী মো. নয়ন মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ ঘটনার কিছুই জানি না। গত সোমবার আমরা বাড়িতে ছিলাম না।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার কলমাকান্দা হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সৌরভ ঘোষ জানান, শিল্পীর মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তিনি এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ওসি মোহাম্মদ লুৎফুল হক বলেন, ঘটনার পর সোমবার রাতেই রেশমা ও নয়নকে ধরতে অভিযান চালানো হয়েছিল। তবে পুলিশের অভিযানের খবর পেয়ে তারা কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ভুক্তভোগীর স্বামী বাদী হয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রেকর্ড করা হচ্ছে।
প্রতিনিধি/টিবি

