শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ঢাকা

ভল্টের ৫ কোটি টাকা উধাও: ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

জেলা প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:২৬ পিএম

শেয়ার করুন:

ভল্টের ৫ কোটি টাকা উধাও: ব্যাংকের ৫ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জনতা ব্যাংকের তামাই শাখার ভল্ট থেকে ৫ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনায় শাখা ব্যবস্থাপকসহ পাঁচ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৩ থেকে ৪ জনকে আসামি করা হয়েছে। সোমবার (১ এপ্রিল) দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে ওই কার্যালয়েই মামলাটি দায়ের করেন।

বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. খায়রুল হক।


বিজ্ঞাপন


মামলার আসামিরা হলেন— জনতা ব্যাংক পিএলসির শাখা ব্যবস্থাপক আল আমিন শেখ (৪২), সহকারী ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম (৩৪), সাবেক ক্যাশ অফিসার  খালেদ ইউনুছ (৩১), অফিসার রাশেদুল হাসান (৩৪) ও বর্তমান ক্যাশ অফিসার শাহ মখদুম উদ্দৌলা (২৯)। এর মধ্যে এই ঘটনায় বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন জনতা ব্যাংক তামাই শাখার ব্যবস্থাপক আল আমিন শেখ, সহকারী শাখা ব্যবস্থাপক রেজাউল করিম ও ব্যাংক কর্মকর্তা রাশেদুল হাসান। 

মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিগণ কর্তৃক জনতা ব্যাংক পিএলসির সিরাজগঞ্জের বেলকুচির তামাই শাখার ভল্ট থেকে পাচঁ কোটি বাইশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা আত্মসাৎ করায় জনতা ব্যাংক পিএলসির সিরাজগঞ্জ এরিয়া অফিসের উপ মহাব্যবস্থাপক মো. নজরুল ইসলাম গত ২৫ মার্চ তারিখে বেলকুচি থানার ওসি বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয় (যার নম্বর- ১৩২০)।

উক্ত অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশনের তফসিলভুক্ত অপরাধ হওয়ায় বেলকুচি থানার একটি স্মারক মূলে দুদকের পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক বরাবর প্রেরণ করা হয়। পরবর্তীতে প্রাপ্ত অভিযোগটি দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয় পাবনার একটি স্মারক মূলে দুদকের মহাপরিচালক (তদন্ত-২) ও অভিযোগ যাচাই বাছাই কমিটির (যাবাক) আহ্বায়ক বরাবর প্রেরণ করা হয়। এরপর দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে আসামিগণের বিরুদ্ধে মামলা রুজুর অনুমোদন প্রদান করা হয়।

অভিযোগের সূত্র ধরে মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, গত ২০ মার্চ জনতা ব্যাংক পিএলসি তামাই শাখায় পরীক্ষামূলক পরিদর্শন করে কতৃপক্ষ। পরিদর্শনকালে টিম দেখতে পায় যে, ১নং আসামি মো. আল আমিন শেখ ব্যবস্থাপক হিসেবে জনতা ব্যাংক পিএলসি, তামাই শাখায় গত ২০১৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি হতে অদ্যাবধি কর্মরত কিন্তু পরিদর্শনকালীন তাকে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিত অফিসে অনুপস্থিত পাওয়া যায়। এছাড়াও পরিদর্শনকালে ক্যাশ যাচাই/গণনা করে দেখা যায় যে, গত ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি তারিখ হতে গত ১৪ মার্চ পর্যন্ত সময়ে ব্যাংকের নগদ ক্যাশ আসামিরা একে অপরের সহযোগিতায় প্রতারণা, অপরাধমূলক অসদাচারন এবং অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে তামাই শাখার ভল্টে রক্ষিত পাঁচ কোটি বাইশ লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন মর্মে পরিদর্শনকালে প্রতীয়মান হওয়ায় বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে বিভাগীয় কার্যালয়, রাজশাহী-এর মহাব্যবস্থাপকসহ প্রধান কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়। 


বিজ্ঞাপন


পরবর্তীতে ২৪ মার্চ তারিখে ১নং আসামি আল আমিন শেখ উক্ত ব্যাংকে যোগদান করলে উক্ত আত্মসাৎকৃত টাকার বিষয়ে ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট স্বীকারোক্তি প্রদান করেন এবং সঠিক হিসেব দিতে ব্যর্থ হন। এসময় আসামি আল আমিন শেখ ওইদিনই আত্মসাৎকৃত টাকার দায় স্বীকার করে দায় পরিশোধের নিমিত্তে সানড্রি ডিপোজিট হিসাবে বিশ লাখ টাকা স্বেচ্ছায় ব্যাংকে জমা করেন এবং অবশিষ্ট টাকা জমা করতে ব্যর্থ হন। 

এ ব্যাপারে দুদক পাবনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. খায়রুল হক বলেন, থানার অভিযোগের কপিটি আসার পরে সেটা যাচাই-বাছাই করে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে মামলার অনুমতি আসার পরে এখানে মামলা দায়ের হয়েছে। এরপর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উল্লেখ্য, সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে জনতা ব্যাংকের তামাই শাখা থেকে ৫ কোটি ২২ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে শাখা ব্যবস্থাপকসহ কয়েক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাধারণ ডায়েরির (জিডি) প্রেক্ষিত তিনজনকে (৫৪ ধারায়) আটক করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

প্রতিনিধি/এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর