জামালপুরের বকশীগঞ্জে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন প্রধান আসামি ও বরখাস্ত হওয়া চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু। বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের বরখাস্ত হওয়া এই চেয়ারম্যানকে আগামী ছয় মাসের জন্য জামিন দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আনোয়ারা শাহজাহান গণমাধ্যমে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি জানান, সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আলোচিত এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুকে ছয় মাসের জামিন দেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
তবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন জানিয়েছেন, হাইকোর্টের দেওয়া এই জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আগামীকাল বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) চেম্বার জজ আদালতে ওই আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হতে পারে।
আরও পড়ুন
এর আগে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জামিন আবেদন করেন হত্যা মামলার প্রধান আসামি ও বরখাস্ত চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু।
সংবাদ প্রকাশের জেরে গত ১৪ জুন সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। ওই রাতে বকশীগঞ্জে বাসায় ফেরার পথে উপজেলার পাটহাটি এলাকায় এই হামলার পর গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ জুন বিকেল ৩টার দিকে মারা যান নাদিম।
ওই ঘটনায় গত ১৮ জুন ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী। মামলার প্রধান আসামি সাধুরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবু, জাকিরুল, রেজাউল, মনিরুলসহ আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এছাড়া পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন অন্য আসামি গোলাম কিবরিয়া সুমন। তবে পুলিশ অজ্ঞাতনামা আরও আটজনকে গ্রেফতার করলেও মামলায় তাদের নাম উল্লেখ ছিল না।
পরবর্তীতে গ্রেফতার আসামিদের আদালতে সোর্পদ করে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডের আবেদন করা হয়। এরপর আদালত ১৩ জনেরই বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরমধ্যে প্রধান আসামি মাহমুদুল আলম বাবুর পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন আদালত। পরবর্তীতে রিমান্ড শেষে সব আসামিকেই আদালতে সোর্পদ করা হলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- বকশীগঞ্জ উপজেলার কামালেরবার্তি গ্রামের ফাহিম ফয়সাল রিফাত (২২), নামাপাড়া গ্রামের ননির ছেলে এমডি রাকিবিল্লাহ রাকিব (২৮), আরচাকান্দির গাজী আমর আলী মেম্বার (৫৫), কাগমারীপাড়া গ্রামের সাফিজল হকের ছেলে শরীফ মিয়া (২২), মালিরচর তকিরপাড়ার আব্দুল করিমের ছেলে লিপন মিয়া (৩০), পূর্ব কামালেরবার্তী গ্রামের মফিজল হকের ছেলে মনিরুজ্জামান মনির (৩৫), নামাপাড়ার শেখ ফরিদ (৩০), টাঙ্গারীপাড়ার কামালের ছেলে ওমর ফারুক (৩২), বটতলী সাধুরপাড়ার আবুল কালামের ছেলে রুবেল মিয়া (৩৫), খেতারচর দক্ষিণপাড়ার জহুরুল হকের ছেলে সুরুজ মিয়া আইড়মারি শান্তি নগরের জলিলের ছেলে বাদশা মিয়া (৩৬), মদনেরচরের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে আবু সাঈদ (২৮), আরচাকান্দির মজিবুর রহমানের ছেলে ইমান আলী (৩৩), কুতুবের চরের সাবেক মেম্বার রফিকুল ইসলাম (৫০) ও সুর্য্যনগর গ্রামের কারিমুল মাস্টারের ছেলে আমান উল্লাহ (৩০)।
/আইএইচ