শুক্রবার, ১১ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

কচুরিপানায় বন্ধ নৌপথ, বিপদে গরু ব্যবসায়ীরা

মো. সেলিম মিয়া
প্রকাশিত: ২৩ জুন ২০২৩, ০৬:১৯ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার জামসা ব্রিজের নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া কালিগঙ্গা নদীর দু’পার ঘেঁষে প্রায় আধা কিলোমিটার বিস্তৃতি কচুরিপানার ঝাঁক। সে কারণে ৫ দিন ধরে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রতিদিন কোরবানির গরু বোঝাই ঢাকাগামী শতাধিক ট্রলার চলাচল বন্ধ রয়েছে।

৫ থেকে ৬ঘন্টার নৌপথ ঘুরে পদ্মা নদী দিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছে এসব ট্রলার। তবে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন জানিয়েছেন অতি দ্রুত কচুরিপানা সরিয়ে নৌযান চলাচল সাভাবিক করা হবে।


বিজ্ঞাপন


শুক্রবার (২৩ জুন) সকালের দিকে এই প্রতিবেদক সরেজমিনে জামসা ব্রিজের নিচে গিয়ে দেখতে পান, নদীর ৪০ ফুট পানির উপরে ব্রিজের খুঁটিতে বেঁধে প্রায় আধা কিলোমিটার বিস্তৃত বিশাল পানার ঝাঁক। সেই পানার ওপর দিয়ে মানুষ যাচ্ছেন এপার থেকে ওপার। ছেলেরা খেলছেন ফুটবল, চালাছেন মোটরসাইকেল, ছোট বড় সববয়সী মানুষ নদীর পানির ওপরদিয়ে হাঁটার আনন্দ উপভোগ করতে নিজ এলাকাসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছেন। ইতোমধ্যে এই কচুরিপানার উপর দিয়ে ফুটবল খেলা, মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল চালানোর ভিডিও নেট দুনিয়া ভাইরাল হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। অন্য দিকে দেখা গেছে কচুরিপানা সরানোর জন্য কাজ করছেন শ্রমিকেরা।

সোহেল উদ্দিন বলেন, আমি দুইটি ট্রলারে বাঁশ জাগ নিয়ে মুন্সিগঞ্জ দিকে যাচ্ছিলাম। সে জন্য এই নদীপথ দিয়ে আসছি। কচুরিপানার ঝাকের কারণে আটকে পড়েছি। সে জন্য ৫দিন ধরে ১০ জন মানুষ নিয়ে কচুরিপানা সরানোর কাজ করছি। এখনও বের হতে পারিনি।


বিজ্ঞাপন


সিংগাইর কলেজের শিক্ষক আবুল বাশার বলেন, পাবনা, রাজবাড়ি, সিরাজগঞ্জ জেলাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশু বোঝাই প্রতিদিন ১০০ এর মতো ট্রলার চলাচল করে। এছাড়াও মালবাহী ট্রলারও চলাচল করে। কিন্তু আজ ৫দিন ধরে কচুরির পানার জন্য কোনো নৌযান চলাচল করতে পারছে এখান দিয়ে।

স্থানীয় নাছির উদ্দিন বলেন, ৪ দিন আগে কোরবানির গরু বোঝাই একটি ট্রলার এই কচুরিপানার মাঝে আটকে পড়েছিল। মাঝ নদীতে আটকে পড়ায় ট্রলার বোঝই গরু নিয়ে বিপদে পড়েছিল ব্যাপারীরা। তাদের এই বিপদ দেখে গ্রামবাসী ডেকোরেটরের দোকান থেকে টেবিল এনে কচুরিপানার ওপর দিয়ে বিছিয়ে বিছিয়ে, গরু পারে আনে। পরে ব্যাপারীরা ট্রাকে করে সেই গরু ঢাকা নিয়ে যায়।

স্থানীয় মোরাদ হোসেন বলেন, নদী দিয়ে অনেক পানা আসতে থাকে। তখন ব্রিজের পিলারে বেধে এই পানার এত বড় ঝাঁক হয়। নদীতে স্রোত থাকার কারণে পানার নিচ দিয়ে পানা গিয়ে প্রায় ৫ থেকে ৬ফুট উঁচা হয়ে যায়। সে জন্য এই পানার ওপর দিয়ে মোটরসাইলে চালানো, খেলাধুলা করা যায়। এই সব নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় থেকে মানুষ দেখতে আসছেন।

ইয়াসমিন আক্তার বলেন, নদীর পানির ওপর দিয়ে হাঁটা যায় এমন ভিডিও দেখে পরিবারে সবাইকে নিয়ে দেখতে এসেছি। আমার বাঁচ্চারা পানার উপরে হাঁটতে পারায় খুব খুশি। তারা লাফিসে বেড়াছে। আমাদেরও ভালো লগছে বলে জানান।

গরু ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, অন্য নদীপথের চেয়ে ট্রলারে করে গরু এই নদী দিয়ে ঢাকা নিলে ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা সময় কম লাগে। সে জন্য কোরবানির পশু এই নদীপথ দিয়ে না নিতে পারলে বিপদেই পড়ে জাবেন বলে জানান।

এই বিষয়ে সিংগাইর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দিপন দেবনাথ বলেন, নৌযান চলাচল সাভাবিক করার জন্য ইতোমধ্যে কচুরিপানা সরানোর কাজ শুরু হয়ে গেছে। আমরা দু’টি বাল্কহেডের মাধ্যেমে টেনে কুচরিপানা সরানোর কাজ চলছে। এছাড়াও লোকজন নিয়ে করাত দিয়ে কেটে বাঁশ দিয়ে ঠেলে ঠেলে সরানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, কচুরিপানার স্তর মোটা হওয়ার কারণে একটু সময় লাগছে। আশা করছি অতি তাড়াতাড়ি কচুরিপানা সরিয়ে ফেলব।

প্রতিনিধি/এসএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর