শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

কোন জ্বালানিতে বিমান চলে

নিশীতা মিতু
প্রকাশিত: ২৭ মে ২০২২, ০৩:০২ পিএম

শেয়ার করুন:

কোন জ্বালানিতে বিমান চলে

যান চলাচলের জন্য প্রয়োজন হয় জ্বালানির। বিমানের ক্ষেত্রেও তাই। কিছু বিশেষ জ্বালানির মাধ্যমে আকাশযান উড়ে থাকে। সেসব সম্পর্কে জানুন। 

আরও পড়ুন: বিমানবালা: শারীরিক সৌন্দর্য নাকি যোগ্যতা জরুরি


বিজ্ঞাপন


এভিয়েশন ফুয়েল 

একটি বিশেষ ধরনের পেট্রোলিয়াম ভিত্তিক জ্বালানী এভিয়েশন ফুয়েল। এটি পাওয়ার এয়ারক্রাফটে ব্যবহৃত হয়। হিটিং বা রোড ট্রান্সপোর্টের মতো কম তাৎপর্যপূর্ণ ব্যবহৃত জ্বালানির তুলনায় এটি উচ্চ মানের হয়ে থাকে। এতে কিছু বিশেষ মিশ্রণ থাকে যার কারণে উচ্চ তাপমাত্রায় আইসিং বা বিস্ফোরণের ঝুঁকি কমায় এটি। 

fuelজেট জ্বালানি বা কেরোসিন 

বর্তমানে বাণিজ্যিক বিমান সংস্থা এবং সামরিক বিমানগুলো সর্বাধিক জ্বালানী দক্ষতা এবং সর্বনিম্ন ব্যায়ের জন্য জেট জ্বালানি ব্যবহার করে। জানলে অবাক হবেন যে এক্ষেত্রে সুপরিচিত কেরোসিন ব্যবহৃত হয়ে থাকে। জেট ফুয়েল বলতে পরিশোধিত কেরোসিন ভিত্তিক জ্বালানিকে বোঝায় যা টারবাইন ইঞ্জিন, টার্বোপ্রপস এবং জেট ইঞ্জিনসহ বিমানে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়। 


বিজ্ঞাপন


আরও পড়ুন: ডানা মেলল এয়ার অ্যাস্ট্রা, আকাশপথে যাত্রায় নতুন দ্বার উন্মোচন

দুই ধরনের জেট ফুয়েল রয়েছে। এগুলো হলো জেট এ এবং জেট এ১। এই দুই ধরনের জ্বালানির মধ্যে উৎপাদনগত মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। জেট এ১ এর ফ্রিজিং পয়েন্ট -৪৭ ডিগ্রি। অর্থাৎ এই তাপমাত্রায় এই জ্বালানি হিমায়িত হয়। অন্যদিকে, জেটএ এর ফ্রিজিং পয়েন্ট -৪০ ডিগ্রি। নিম্ন হিমাঙ্ক হওয়ায় দীর্ঘ আন্তর্জাতিক উড়ানে জেট এ১ ব্যবহৃত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জেট এ জ্বালানি বেশি প্রচলিত। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশে জেট এ১ বেশি ব্যবহৃত হয়। 

fuelঅ্যাভগাস 

জেট বিমানগুলো যে জ্বালানি দিয়ে চলে তা অ্যাভগাস। এভিয়েশন পেট্রল বা অ্যাভগাস হলো বিমানচালনা জ্বালানির একটি রূপ যা ছোট পিস্টন-ইঞ্জিন বিশিষ্ট বিমানকে শক্তি দেয়। সাধারণত ফ্লাইট ট্রেনিং জেট, ফ্লায়িং ক্লাব এবং প্রাইভেট পাইলটরা এই জ্বালানি দিয়ে পূর্ণ বিমান পরিচালনা করে থাকেন। 

অ্যাভগাসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে টেট্রাইথাইল সীসা থাকে। এই সীসা ইঞ্জিনের বিস্ফোরণ বা নক প্রতিরোধ করে, যা ইঞ্জিনের ব্যর্থতার কারণ হতে পারে। তবে মানবদেহের জন্য এই জ্বালানি ক্ষতিকর। এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে রক্তে মিশে বিষক্রিয়া করতে পারে। তাই এটি সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করতে বলা হয়। 

fuelদুই ধরনের অ্যাভগাস রয়েছে। একটি অ্যাভগাস ১০০ এবং অন্যটি অ্যাভগাস ১০০ এলএল। এখানে ১০০ দিয়ে অকটেনের রেটিং বোঝানো হয়। দুই ধরনের অ্যাভগাসে মূল পার্থক্য সীসার পরিমাণ আর রঙে। অ্যাভগাস ১০০ তে উচ্চ পরিমাণে টেট্রাইথাইল সীসা থাকে। কিন্তু অ্যাভগাস ১০০ এলএলে এর পরিমাণ থাকে কম। অ্যাভগাস ১০০ এলএল নীল রঞ্জক বিশিষ্ট হয়ে থাকে আর অ্যাভগাস ১০০ হয় সবুজ রঞ্জক বিশিষ্ট।

আরও পড়ুন: বিমানে চড়ার আগে যেসব বিষয় জানা জরুরি

বিমানে গ্যাসের পরিবর্তে জেট ফুয়েল ব্যবহৃত হয় কেন? 

এই ব্যাপারটি পরিষ্কার যে, বিমান ধোঁয়ায় চলতে পারে না। তাই, ইঞ্জিনের শক্তির যোগান দিতে এটি জ্বালানিতে সঞ্চিত রাসায়নিক শক্তি ব্যবহার করে। এছাড়াও এর পেছনে আরও কিছু কারণ রয়েছে। 

fuelনিম্ন হিমাঙ্ক বিন্দু- কেরোসিন বা জেট ফুয়েলের হিমাঙ্ক কম থাকে, যা স্বাভাবিকভাবেই হিমাঙ্কের তাপমাত্রা থেকে রক্ষা করে। এটি মেরু অঞ্চলের উপর দিয়ে যাওয়া ফ্লাইটের জন্য উপকারী।

নিম্ন ফ্রিজিং পয়েন্ট- কেরোসিন বা জেট ফুয়েলের ফ্রিজিং পয়েন্ট কম থাকে। এটি স্বাভাবিকভাবে ফ্রিজিং টেম্পারেচার থেকে বিমানকে রক্ষা করে। মেরু অঞ্চলের ওপর দিয়ে বিমান উড়ানোর জন্য যা জরুরি।

আরও পড়ুন: বিমানের ১০ গোপন তথ্য জানাতে চায় না কর্তৃপক্ষ

উচ্চ ফ্ল্যাশ পয়েন্ট- একটি রাসায়িনিক কোন তাপমাত্রায় জ্বলবে বা বাষ্পে পরিণত হবে তা নির্দেশ করে ফ্ল্যাশ পয়েন্ট। জেট ফুয়েলের উচ্চতর ফ্ল্যাশ পয়েন্ট থাকায় এটি ফ্লাইটের সময় অধিক শক্তি অর্জনের জন্য উচ্চ অকটেন প্রদান করে। 

সাশ্রয়ী- গ্যাসের তুলনায় কেরোসিন সস্তায় পাওয়া যায়। সাশ্রয়ী হওয়ায় বেশিরভাগ কোম্পানিই বিমানের জ্বালানি হিসেবে এটি বেছে নেন। 

এনএম/এজেড

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর