images

নারী ও শিশু

চার জেলায় ধর্ষণের ঘটনায় মহিলা পরিষদের ক্ষোভ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০৮ পিএম

দেশের চার জেলায় ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এসব ঘটনায় নারী-কন্যাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন ও তাদের নিরাপত্তা হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ১৬ এপ্রিল দেশের বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমে জানা যায় যে, বাগেরহাট জেলার মোল্লাহাট উপজেলার সরসপুর গ্রামে এক নৃত্যশিল্পীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ১২ এপ্রিল শুক্রবার এক বিয়ে অনুষ্ঠানে নাচতে আসে ওই নৃত্যশিল্পী। অনুষ্ঠান শেষে রাতে ফকিরহাটে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নির্যাতনের শিকার ওই নারী ও তার স্বামীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে রওনা দেয় কয়েকজন যুবক। যুবকরা ওই নারী ও তার স্বামীকে ভুল বুঝিয়ে অন্য সড়কে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে তারা ওই নৃত্যশিল্পীকে ঘাটবিলা এলাকায় উপজেলা চেয়ারম্যানের জমিতে থাকা পরিত্যক্ত টিনশেডের ঘরে নিয়ে গিয়ে তাকে পালাক্রমে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।

অপরদিকে গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায় এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গত ১১ এপ্রিল অভিযুক্ত এমদাদুল ওই কিশোরীকে নিকটবর্তী জনৈক মোক্তারের মুদি দোকান থেকে কোমল পানীয় জাতীয় জিনিস কিনে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বাড়ির পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানেই তাকে ধর্ষণ করে। নির্যাতনের শিকার কিশোরীর কান্নায় আশেপাশের লোকজন ছুটে এলে এমদাদুল ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

আরও পড়ুন

‘ধর্ষকের সাথে ভুক্তভোগীর বিয়ে সমর্থন করে না মহিলা পরিষদ’

এছাড়া নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার হরণী ইউনিয়নের বয়ারচর গ্রামে এক কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, অভিযুক্ত নাহিদ হোসেন কৌশলে ওই কিশোরীর ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করে।

সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। গত ১৫ এপ্রিল নির্যাতনের শিকার ছাত্রী নিজ বাসার গোয়ালঘর পরিষ্কার করছিল। এ সময় বাড়িতে কেউ না থাকায় এ সুযোগে রাসেল ওই ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধরে ঘরের ভেতর নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। ছাত্রীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘরে এলে রাসেল সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

উদ্বেগ প্রকাশ করে মহিলা পরিষদ বলছে, আমরা লক্ষ্য করছি যে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারী ও কন্যাশিশুরা ঘরে-বাইরে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণের মতো সহিংসতার শিকার হচ্ছে। এ ধরনের সহিংসতার ঘটনায় নারী-কন্যাদের স্বাভাবিক জীবন-যাপন ও তাদের নিরাপত্তা হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ধরনের ঘটনা নারী-কন্যাদের যেমন কর্মক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করছে তেমনি তাদের অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধকতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এসব ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতকরণের দাবি জানাচ্ছে। একইসঙ্গে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছে। সেই সাথে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে যুক্ত করে সমন্বিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছে।

এমএইচ/জেবি