তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০৩ পিএম
নতুন স্মার্টফোন কেনার আগে সাধারণ গ্রাহক থেকে শুরু করে টেক-প্রেমী—সবারই প্রথম নজর থাকে ফোনের প্রসেসরের দিকে। স্মার্টফোনের প্রাণ হিসেবে পরিচিত এই 'সিস্টেম অন চিপ' (SoC) নির্ধারণ করে আপনার ফোনটি কতটা দ্রুত কাজ করবে বা এর ব্যাটারি কতক্ষণ টিকবে। অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের জগতে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুই নাম কোয়ালকমের 'স্ন্যাপড্রাগন' এবং তাইওয়ানের 'মিডিয়াটেক'। তবে কেনার আগে কোন প্রসেসরটি আপনার প্রয়োজনের জন্য আদর্শ, তা জানা থাকা জরুরি।
স্ন্যাপড্রাগন (Snapdragon): পারফরম্যান্স ও আস্থার নাম
মার্কিন সেমিকন্ডাক্টর জায়ান্ট 'কোয়ালকম'-এর তৈরি স্ন্যাপড্রাগন চিপসেট বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয়। এর মূল বৈশিষ্ট্য হলো দুর্দান্ত গতি এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী (Battery Efficient) ক্ষমতা।
ফ্ল্যাগশিপ সিরিজ: বাজারে বর্তমানে স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন সিরিজের (Snapdragon 8 Gen Series) প্রসেসরগুলো সবচেয়ে শক্তিশালী।
মিডরেঞ্জ ও বাজেট: মাঝারি বাজেটের ফোনের জন্য রয়েছে স্ন্যাপড্রাগন ৭ ও ৬ সিরিজ এবং সাশ্রয়ী ফোনের জন্য রয়েছে ৪ সিরিজ। যাঁরা গেমিং করেন বা ফোনের ওপর অতিরিক্ত চাপ দেন, তাঁদের জন্য স্ন্যাপড্রাগন সবসময়ই প্রথম পছন্দ।
মিডিয়াটেক (MediaTek): কম দামে শক্তিশালী বিকল্প
তাইওয়ানের সংস্থা মিডিয়াটেক গত কয়েক বছরে তাদের 'ডাইমেনসিটি' (Dimensity) সিরিজের মাধ্যমে বাজারে বড় পরিবর্তন এনেছে।
বৈশিষ্ট্য: কম দামে শক্তিশালী প্রসেসর দেওয়ার ক্ষেত্রে মিডিয়াটেক অতুলনীয়। সাশ্রয়ী ফোনের জন্য তাদের হেলিও (Helio) ও 'জি' সিরিজের চিপসেটগুলো বেশ জনপ্রিয়।
সীমাবদ্ধতা: প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, মিডিয়াটেক চিপসেটগুলো স্ন্যাপড্রাগনের তুলনায় কিছুটা বেশি ব্যাটারি খরচ করে এবং দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহারের ক্ষেত্রে সুরক্ষার প্রশ্নে কিছু বিতর্ক রয়েছে।

এক্সিনোস (Exynos): স্যামসাংয়ের নিজস্ব শক্তি
দক্ষিণ কোরিয়ার টেক জায়ান্ট স্যামসাং তাদের নিজস্ব ব্র্যান্ডের অধীনে 'এক্সিনোস' প্রসেসর তৈরি করে। মূলত স্ন্যাপড্রাগনের সঙ্গে পাল্লা দিতেই এই চিপসেটগুলো তৈরি করা হয়। স্যামসাংয়ের বেশিরভাগ প্রিমিয়াম ও মিডরেঞ্জ ফোনে এটি দেখা গেলেও, জনপ্রিয়তার বিচারে এটি স্ন্যাপড্রাগনের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে।
ইউনিসক (Unisoc): বাজেট ফোনের সঙ্গী
চীনা সেমিকন্ডাক্টর প্রস্তুতকারী সংস্থা ইউনিসক মূলত এন্ট্রি-লেভেল বা একদম কম বাজেটের ফোনের জন্য চিপসেট তৈরি করে। মোটোরোলাসহ বেশ কিছু ব্র্যান্ডের সাশ্রয়ী ফোনে এটি ব্যবহার করা হয়। তবে পারফরম্যান্স এবং কার্যক্ষমতার দিক থেকে এটি স্ন্যাপড্রাগন বা মিডিয়াটেকের চেয়ে অনেকটাই পিছিয়ে।
আরও পড়ুন: ফোনে কোন প্রসেসর ভালো?
কেনার আগে যা মনে রাখবেন
আপনি যদি গেমিং, হাই-রেজোলিউশন ভিডিও এডিটিং এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ চান, তবে স্ন্যাপড্রাগন চালিত ফোন কেনা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। অন্যদিকে, সীমিত বাজেটের মধ্যে ভালো গতি এবং মাল্টিটাস্কিং পারফরম্যান্স চাইলে মিডিয়াটেক ডাইমেনসিটি সিরিজের ফোনগুলো দারুণ বিকল্প হতে পারে।
এজেড