তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:২৬ পিএম
সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জীবনের দৈনন্দিন অভ্যাসই বদলে দিয়েছে। ঘুম থেকে উঠে অনেকেই প্রথমেই ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম খুলে দেখেন কে কী পোস্ট করেছে, কার নতুন ছবি এসেছে বা কে নতুন বন্ধু যোগ করেছে। ধীরে ধীরে এই অভ্যাসই আমাদের রুটিনের অংশ হয়ে উঠেছে। তবে যতটা সুবিধা, ঠিক ততটাই লুকিয়ে রয়েছে ঝুঁকি। একটু অসতর্ক হলেই সোশ্যাল মিডিয়া হয়ে উঠতে পারে প্রতারণার ফাঁদ।
আপনার সোশ্যাল অ্যাকাউন্টে কারা নজর রাখছে
সোশ্যাল মিডিয়া মানুষের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করেছে, বন্ধুত্বের পরিধি বাড়িয়েছে। কিন্তু এই সুবিধার আড়ালেই সক্রিয় রয়েছে ভুয়া অ্যাকাউন্ট, হ্যাকার এবং স্ক্যামাররা। অনেক সময় অজান্তেই আমরা এমন কিছু ভুল করি, যার ফলে শুধু ব্যক্তিগত গোপনীয়তাই নয়, পুরো অ্যাকাউন্টই বিপদের মুখে পড়ে। বন্ধুত্বের ভান করে তারা ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয় এবং সুযোগ বুঝে অ্যাকাউন্ট দখলে নেয়।
অপরিচিতদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণে সতর্ক থাকুন
বর্তমানে জাল ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট তৈরি করা খুব সহজ। অনেক স্ক্যামার আকর্ষণীয় বা পরিচিত মুখের ছবি ব্যবহার করে ভুয়া প্রোফাইল বানায় এবং বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠায়। একবার রিকোয়েস্ট গ্রহণ করলেই তারা আপনার ছবি, পোস্ট বা ব্যক্তিগত তথ্য দেখতে পায় এবং পরে সেগুলোর অপব্যবহার করে।

ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করার সহজ লক্ষণ
ভুয়া অ্যাকাউন্টে সাধারণত মাত্র একটি বা দুইটি প্রোফাইল ছবি থাকে। পোস্টের সংখ্যা খুব কম থাকে কিংবা ফলোয়ারও অস্বাভাবিকভাবে কম দেখা যায়। বন্ধু তালিকায় আপনার পরিচিত বা সাধারণ বন্ধু প্রায় থাকে না। অনেক সময় বন্ধুত্ব হওয়ার পরপরই তারা ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে চ্যাট শুরু করে, যা সন্দেহজনক।
কখনোই যেসব তথ্য শেয়ার করবেন না
ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রামে কারও সঙ্গে কথা বলার সময় পাসওয়ার্ড, ওটিপি বা ব্যাংক সংক্রান্ত কোনো তথ্য শেয়ার করা উচিত নয়। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য, ফোন নম্বর, বাড়ির ঠিকানা বা বর্তমান অবস্থানও গোপন রাখা জরুরি। একইভাবে ব্যক্তিগত ছবি বা ভিডিও অপরিচিত কারও কাছে পাঠানো বিপজ্জনক হতে পারে।
জাল লিঙ্ক ও প্রতারণামূলক বার্তা থেকে সাবধান
হ্যাকাররা প্রায়ই অফিসিয়াল নোটিসের মতো দেখতে জাল লিঙ্ক বা বার্তা পাঠায়। এগুলোতে ক্লিক করলেই আপনার লগইন তথ্য চুরি হয়ে যেতে পারে এবং মুহূর্তের মধ্যেই অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই অচেনা লিঙ্কে ক্লিক করার আগে ভালোভাবে যাচাই করা জরুরি।

অ্যাকাউন্ট সুরক্ষায় জরুরি কিছু নিরাপত্তা ব্যবস্থা
ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম উভয় ক্ষেত্রেই টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালু রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কয়েক মাস অন্তর অন্তর পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করলে নিরাপত্তা আরও বাড়ে। নতুন কোনো ডিভাইসে লগইন করার পর প্রয়োজনে সব ডিভাইস থেকে লগআউট করে নেওয়া ভালো। পাশাপাশি গোপনীয়তা সেটিংস নিয়ন্ত্রণ করে কে আপনার পোস্ট দেখতে পারবে, তা নির্ধারণ করে রাখা উচিত।
আরও পড়ুন: চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করার সময় এই ৫টি কাজ কখনোই করবেন না
সব মিলিয়ে বলা যায়, সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্ধুত্ব করার আগে একটু ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সামান্য সচেতনতা আর সতর্কতাই পারে আপনার ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টকে হ্যাকিং ও প্রতারণা থেকে নিরাপদ রাখতে।
এজেড