images

তথ্য-প্রযুক্তি

ঢাকায় ঘন ঘন ভূমিকম্প কীসের ইঙ্গিত?

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

০২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪০ এএম

অতি সম্প্রতি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। একটির পর একটি ঝাঁকুনি অনেককে আতঙ্কিত করে তুলেছে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, এগুলো কি বড় ভূমিকম্পের ‘সিগন্যাল’? নাকি সাধারণ আফটারশক? ভূমিকম্পের কারণ কী, কেন বারবার এমন কম্পন হচ্ছে—এসব নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে তৈরি হয়েছে নানা প্রশ্ন।

এই প্রতিবেদনে ঘন ঘন ভূমিকম্পের কারণ ব্যাখা করা হলো-

ঢাকায় ঘন ঘন ভূমিকম্প— কীসের ইঙ্গিত?

ঢাকা ভূমিকম্প-সংবেদনশীল অঞ্চলে অবস্থান করায় ছোট-বড় কম্পন নতুন নয়। কিন্তু কম সময়ের মধ্যে অনেকগুলো ভূমিকম্প কয়েকটি ইঙ্গিত দেয়—

ভূগর্ভে চাপ (Stress) জমছে

টেকটনিক প্লেটের সরে যাওয়া বা চাপ বৃদ্ধির ফলে ভূগর্ভে শক্তি জমতে থাকে। এই চাপ দীর্ঘদিন জমে বড় ধরনের ভূমিকম্পের কারণ হতে পারে।

earthquake_5_may_0

আফটারশকও হতে পারে

একটি বড় ভূমিকম্পের পর কিছুদিন ছোট ছোট কম্পন স্বাভাবিক। তবে এগুলো যদি একই উৎস থেকে আসে, সেগুলোকে আফটারশক ধরা হয়।

আবার ‘ফোরশক’ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে

কখনো ছোট কম্পনগুলো বড় ভূমিকম্পের পূর্বাভাসও হতে পারে, যাকে ফোরশক বলা হয়। তবে কোন কম্পন ফোরশক আর কোনটি আফটারশক—এটি আগে থেকে নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।

ভূমিকম্প কেন হয়? (কারণ ও ব্যাখ্যা)

টেকটনিক প্লেটের সংঘর্ষ

পৃথিবীর ভূ-পৃষ্ঠ কয়েকটি বড় প্লেট দিয়ে তৈরি। এই প্লেটগুলো সবসময় নড়াচড়া করে। বাংলাদেশের নিচ দিয়ে ভারতীয় প্লেট ও বার্মা প্লেট সরে যায় এবং একে অপরকে ঠেলে দেয়। ফলে বিশাল চাপ তৈরি হয় এবং সেই চাপ হঠাৎ মুক্ত হলেই হয় ভূমিকম্প।

earthquake_21_nov

ফল্ট লাইনের নড়াচড়া

বাংলাদেশের কাছে কয়েকটি প্রধান ফল্ট লাইন আছে—

ডাউকি ফল্ট

চিটাগাং-টাইগ্রিস ফল্ট

মিয়ানমারের সক্রিয় ফল্টগুলো

এই ফল্টগুলোতে সামান্য নড়াচড়াও ঢাকায় কম্পন অনুভব করতে দেখা যায়।

ভূগর্ভে শক্তি সঞ্চয়

দীর্ঘদিন ধরে চাপ জমে থাকলে তা একসময়ে শক্তি হিসেবে বের হয়—এটাই ভূমিকম্প। ঢাকা ভূমিকম্পপ্রবণ তিনটি জোনের মাঝামাঝি অবস্থান করায় ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি।

Earthquake-Vulnerability-in-Dhaka

এগুলো আফটার শক নাকি ফোরশক?

বিশেষজ্ঞদের মতে—

এগুলো আফটারশক হলে উৎস হবে একই জায়গায়।

ফোরশক হলে পরবর্তী সময়ে বড় কম্পন হতে পারে।

আরও পড়ুন: ভূমিকম্পের পূর্বাভাস কেন পাওয়া যায় না?

তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—

এমন বারবার ঝাঁকুনি মানেই ভূগর্ভে সক্রিয়তা বাড়ছে।

যেকোনো সময় বড় কম্পনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা তাই ‘সতর্কতা’ ও ‘প্রস্তুতি’ বাড়ানোর পরামর্শ দেন।

ঢাকায় ভূমিকম্পের প্রভাব কেন বেশি হয়?

অতিরিক্ত ঘনবসতি

দুর্বল বিল্ডিং

অপরিকল্পিত নগরায়ণ

নরম মাটি (soft soil) — যেখানে কম্পন কয়েকগুণ বাড়তে পারে

তাই ঢাকায় ৫ মাত্রার ভূমিকম্পও বড় ক্ষতি করতে পারে।

93c606cd6d371d92dc7eec9410ef54f38529490a80ab2600

কী করা উচিত

ভবনের ভূমিকম্প-সহনক্ষমতা পরীক্ষা

বাসা ও অফিসে নিরাপদ কোণ (Safe Zone) চিহ্নিত করা

ভারী জিনিস দেয়ালে আটকানো

জরুরি কিট প্রস্তুত রাখা

ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কিত না হয়ে 'ডাক–কভার–হোল্ড' নিয়ম মানা।

এজেড