তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক
২৮ নভেম্বর ২০২৫, ১১:০৮ এএম
শক্তিশালী ভূমিকম্পের পরপরই বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকদিন বা কখনও কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত মাঝেমধ্যে ছোট-বড় কম্পন অনুভূত হয়। এগুলোকেই বলা হয় আফটারশক। মূল ভূমিকম্পের মতো শক্তিশালী না হলেও এই ধাক্কাগুলো ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। কেন এমন হয়—এর পিছনে রয়েছে পৃথিবীর ভেতরের জটিল ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া।
পৃথিবীর ভূত্বকে চাপের সামঞ্জস্যহীনতা
পৃথিবীর ভূত্বক একাধিক প্লেটে বিভক্ত। এসব প্লেট সবসময় নড়াচড়া করে। একটি বড় ভূমিকম্প যখন হয়, তখন প্লেটের একটি অংশ হঠাৎ সরে গিয়ে প্রচণ্ড শক্তি মুক্ত করে। ফলে আশপাশের অংশে চাপের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। চাপ পুনরায় সামঞ্জস্যে ফিরতে সময় লাগে—এই সময়ই একের পর এক ছোট ভূকম্পন ঘটে।

ফল্ট লাইনে লুকানো শক্তির মুক্তি
যে ফল্ট লাইনে বড় ভূমিকম্প ঘটে, তার আশেপাশের অংশেও চাপ জমে থাকে। বড় কম্পনের পর সেই এলাকা আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে আটকে থাকা ছোট ছোট চাপ ধীরে ধীরে মুক্ত হয়। প্রতিবার চাপ মুক্ত হওয়ার সময়ই সৃষ্টি হয় আফটারশক।
শিলাস্তরের অভ্যন্তরে পুনর্বিন্যাস
ভূমিকম্প পৃথিবীর গভীরে শিলাস্তরের গঠনও নড়িয়ে দেয়। বড় ধাক্কার পর শিলাগুলো নতুনভাবে নিজেদের স্থিতি খুঁজে নেয়। এই পুনর্বিন্যাস প্রক্রিয়াও কম্পন তৈরি করে। যার প্রক্রিয়া দীর্ঘ হতে পারে, তাই আফটারশক কয়েকদিন–কয়েক সপ্তাহ চলতে পারে।
আরও পড়ুন: আগ্নেয়গিরি থেকে অগ্ন্যুৎপাত কেন হয়, কখন হয়?
কেন আফটারশক বিপজ্জনক?
দুর্বল কাঠামো আরও ভেঙে পড়তে পারে
ভীত-সন্ত্রস্ত মানুষ অস্থির হয়ে পড়ে
উদ্ধারকাজ ব্যাহত হতে পারে
ভূমিধস বা ভবনের ক্ষতি আরও বাড়তে পারে

ভূমিকম্পের পর আফটারশক কতদিন চলতে পারে?
ভূমিকম্পের শক্তির ওপর নির্ভর করে আফটারশক দিনের পর দিন, কখনও মাসজুড়েও চলতে পারে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর সংখ্যা ও তীব্রতা কমে আসে।
ভূমিকম্পে কীভাবে সতর্ক থাকবেন?
ভবনের নিরাপদ জায়গা আগে থেকেই চিহ্নিত রাখুন
বড় ভূমিকম্পের পরে কয়েকদিন অপ্রয়োজনীয়ভাবে ভবনের ভেতরে অবস্থান না করাই ভালো
জরুরি ব্যাগ, টর্চ, পানি ও প্রয়োজনীয় নথি হাতের কাছে রাখুন

সরকারি বার্তা ও বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা অনুসরণ করুন
মোট কথা, শক্তিশালী ভূমিকম্পের পর আফটারশক হওয়া একেবারেই স্বাভাবিক। কারণ পৃথিবীর ভূত্বক বড় কম্পনের ধাক্কা সামলাতে সময় নেয়। এই পুনর্বিন্যাস ও চাপমুক্তির প্রক্রিয়াই একের পর এক ছোট কম্পনের জন্ম দেয়।
এজেড