images

তথ্য-প্রযুক্তি

ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট লক প্রযুক্তি কতটা কার্যকর?

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

০২ জুলাই ২০২৫, ১০:৫০ এএম

স্মার্টফোনে সুরক্ষার অন্যতম জনপ্রিয় ও ব্যবহারবান্ধব পদ্ধতি হচ্ছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। শুরুতে এটি ফোনের পেছনে বা পাশে দেখা গেলেও এখন অনেক স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হচ্ছে ডিসপ্লের নিচে ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রযুক্তি বা ইন ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর। তবে প্রশ্ন হলো, এই ডিসপ্লেতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রযুক্তি আসলে কতটা কার্যকর? এর সুবিধা, অসুবিধা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

ডিসপ্লেতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রযুক্তি কীভাবে কাজ করে?

ডিসপ্লের নিচে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর দুই ধরনের হতে পারে:

অপটিক্যাল সেন্সর (Optical Sensor)

এটি আঙুলের ছবি তুলে ডিসপ্লের আলো ব্যবহার করে স্ক্যান করে।

তুলনামূলকভাবে সস্তা এবং ধীর।

আল্ট্রাসনিক সেন্সর (Ultrasonic Sensor)

এটি উচ্চ-ফ্রিকোয়েন্সির সাউন্ডওয়েভ ব্যবহার করে আঙুলের ত্বকের গভীর ছাপ স্ক্যান করে।

আরও নিরাপদ, দ্রুত ও নির্ভুল।

সাধারণত প্রিমিয়াম ফোনে ব্যবহার হয়। যেমন: Samsung Galaxy S সিরিজ।

disply

সুবিধাসমূহ:

ডিজাইন ও নান্দনিকতা

– ফোনে বাড়তি বোতাম বা সেন্সরের দরকার পড়ে না। ফলে ফোনের ডিজাইন থাকে সরল ও প্রিমিয়াম।

ব্যবহার সুবিধা

– ফোন হাতে থাকলেও শুধু স্ক্রিনে টাচ করলেই আনলক করা যায়। পাশে বা পেছনে হাত নিতে হয় না।

সুরক্ষা

– আল্ট্রাসনিক প্রযুক্তি খুবই সঠিকভাবে আঙুল শনাক্ত করতে পারে, যা পাসওয়ার্ড বা প্যাটার্নের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ।

ভেজা আঙুলেও কাজ করে (বিশেষ করে আল্ট্রাসনিক সেন্সর)

– যেখানে অপটিক্যাল সেন্সর ব্যর্থ হয়, সেখানে উন্নত সেন্সর কিছুটা কার্যকর।

সীমাবদ্ধতা ও চ্যালেঞ্জ:

গতি ও নির্ভুলতা

– অপটিক্যাল সেন্সর অনেক সময় ধীরে কাজ করে বা ভুল স্ক্যান করে। বিশেষ করে যখন স্ক্রিনে ময়লা বা আঙুলে ঘাম থাকে।

ফোনের কভারে সমস্যা

– অনেক স্ক্রিন প্রটেক্টর বা মোটা গ্লাস ডিসপ্লে সেন্সরের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়।

কম দামের ফোনে অপ্টিমাইজড না

– বাজেট বা মিড রেঞ্জ ফোনে এই প্রযুক্তি অনেক সময় সঠিকভাবে কনফিগার করা থাকে না, ফলে ভুল-পজিশন বা বারবার চেষ্টা করতে হয়।

ভিজুয়াল ফিডব্যাকের অভাব

– ফিজিক্যাল বাটনের মতো অনুভূতি না থাকায় নতুন ব্যবহারকারীদের জন্য বিভ্রান্তিকর হতে পারে।

disply_pic

কোন ফোনে এই প্রযুক্তি ভালোভাবে কাজ করে?

Samsung Galaxy S23/S24 সিরিজ (Ultrasonic)

OnePlus 11, 12

Vivo X সিরিজ

Xiaomi 13 Pro

এগুলোতে যথেষ্ট নিখুঁত ও দ্রুত ফিঙ্গারপ্রিন্ট রেসপন্স পাওয়া যায়।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা:

ইন-ডিসপ্লে প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এটি দিন দিন আরও উন্নত হচ্ছে। গবেষণা চলছে এমন প্রযুক্তির ওপর, যেখানে পুরো স্ক্রিনজুড়ে যে কোনো অংশে ছোঁয়া দিলেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যান সম্ভব হবে।

ডিসপ্লেতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রযুক্তি নিঃসন্দেহে একটি আধুনিক ও নান্দনিক উদ্ভাবন। প্রিমিয়াম ফোনে এর কার্যকারিতা বেশ নির্ভরযোগ্য হলেও বাজেট ফোনে এখনো কিছু সমস্যা থেকে যায়। তবে ভবিষ্যতে উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে এটি আরও বেশি কার্যকর ও ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠবে—এতে কোনো সন্দেহ নেই।

আরও পড়ুন: তার ছাড়াই বিদ্যুৎ পরিবহন করা সম্ভব?

আপনি যদি নিরাপত্তা ও নান্দনিকতাকে গুরুত্ব দেন, তবে আল্ট্রাসনিক ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রযুক্তি সুবিধাজনক হতে পারে। তবে ফোন কেনার আগে সেন্সরের ধরণ ও ব্যবহারিক পর্যালোচনা জেনে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

এজেড