images

তথ্য-প্রযুক্তি

স্মার্টফোনে স্ক্রিন প্রোটেক্টর লাগানো কতটা জরুরি?

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক

১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:২৬ পিএম

নতুন একটি স্মার্টফোন কেনার পর বেশিরভাগ মানুষ দুইটি কাজ করে থাকেন। প্রথমটি হচ্ছে স্ক্রিন প্রটেক্টর লাগান, আর ব্যাক কভার লাগান। নতুন স্মার্টফোন কেনার পর অনেকেই প্রথমেই এটির সুরক্ষার বিষয়ে চিন্তা করেন। বিশেষ করে স্ক্রিন প্রোটেক্টর লাগানোর বিষয়ে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন। প্রশ্ন আসে, যে ফোনের স্ক্রিন ইতিমধ্যেই গরিলা গ্লাসের মত উন্নত প্রযুক্তির প্রোটেকশন দেওয়া থাকে, সেখানে কি আদৌ স্ক্রিন প্রোটেক্টরের প্রয়োজন আছে? এই প্রশ্নের উত্তর সহজ নয় এবং এটি বিভিন্ন পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।

গরিলা গ্লাস ফোনের ডিসপ্লের নিরাপত্তার জন্য যথেষ্ট?

বর্তমানে বেশিরভাগ স্মার্টফোন বিশেষ করে প্রিমিয়াম এবং মিড-রেঞ্জের মডেলগুলি কর্নিং গরিলা গ্লাসের সঙ্গে আসে। এটি এমন এক ধরনের গ্লাস যা ফোনের স্ক্রিনকে স্ক্র্যাচ এবং সামান্য ধাক্কা থেকে সুরক্ষা দেয়। কর্নিং গরিলা গ্লাসের বহুল ব্যবহারের ফলে অনেক ব্যবহারকারী মনে করেন যে আলাদা করে স্ক্রিন প্রোটেক্টর লাগানোর প্রয়োজন নেই। কিন্তু, সবসময় গরিলা গ্লাস স্ক্র্যাচ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত রাখার নিশ্চয়তা দেয় না। দৈনন্দিন ব্যবহারের সময় ধুলা, পকেটে থাকা চাবি বা অন্যান্য ছোটোখাটো বস্তু স্ক্রিনে সূক্ষ্ম স্ক্র্যাচ ফেলতে পারে।

protector

কখন স্ক্রিন প্রোটেক্টর লাগানো উচিত?

যদি আপনি এমন একজন ব্যবহারকারী হন যিনি ফোন ব্যবহার করার সময় অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করেন, তাহলে স্ক্রিন প্রোটেক্টর না লাগালেও সমস্যা নেই। তবে যদি আপনার ফোন ব্যবহারের পদ্ধতি একটু অনিয়মিত বা অসতর্ক হয়, তাহলে স্ক্রিন প্রোটেক্টর একটি ভালো বিনিয়োগ হতে পারে।

যদি আপনি দীর্ঘ সময় ফোনটি ব্যবহার করতে চান, তবে স্ক্রিন প্রোটেক্টর ফোনের স্ক্রিনে স্ক্র্যাচ পড়া থেকে রক্ষা করে এবং ফোনটি নতুনের মত রাখতে সাহায্য করে। এটি পরবর্তীতে ফোন বিক্রি করার সময় তার রিসেল ভ্যালুকে বাড়িয়ে তোলে।

screen

এছাড়া, কিছু স্ক্রিন প্রোটেক্টর বিশেষ ধরনের সুবিধা দেয়। যেমন, অ্যান্টি-গ্লেয়ার প্রোটেক্টর সূর্যের আলোতে স্ক্রিন দেখা সহজ করে তোলে। আবার কিছু প্রোটেক্টর প্রাইভেসি প্রোটেকশন দেয়, যাতে আপনার ফোনের স্ক্রিন পাশ থেকে কেউ দেখতে না পায়।

কোন ধরনের স্ক্রিন প্রোটেক্টর সেরা?

বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন ধরনের স্ক্রিন প্রোটেক্টর পাওয়া যায়। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হল টেম্পার্ড গ্লাস স্ক্রিন প্রোটেক্টর। এটি ফোনের স্ক্রিনকে বড় ধরনের আঘাত থেকে রক্ষা করে এবং স্ক্র্যাচ প্রতিরোধে কার্যকর। প্লাস্টিক ফিল্ম প্রোটেক্টরও ব্যবহার করা হয়, তবে এটি তুলনামূলকভাবে কম কার্যকর। লিকুইড প্রোটেক্টর নামে আরেকটি পণ্য বাজারে পাওয়া যায়, যা তরল আকারে ফোনের স্ক্রিনে লাগানো হয় এবং এটি স্ক্রিনে একটি পাতলা স্তর তৈরি করে।

স্ক্রিন প্রোটেক্টরের অসুবিধা

তবে স্ক্রিন প্রোটেক্টর ব্যবহারের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। কিছু কম মানের স্ক্রিন প্রোটেক্টর ফোনের টাচ সেন্সিটিভিটিকে প্রভাবিত করতে পারে, ফলে স্ক্রিনে টাইপিং বা গেমিং করার সময় সমস্যা হতে পারে। তাছাড়া, স্ক্রিন প্রোটেক্টর ফোনের ডিসপ্লের উজ্জ্বলতা এবং রঙের স্পষ্টতা কিছুটা কমিয়ে দিতে পারে। প্রোটেক্টর যদি সঠিকভাবে না লাগানো হয়, তাহলে স্ক্রিনে বুদবুদ (বাবল) দেখা দিতে পারে, যা দেখতে খারাপ লাগে এবং স্ক্রিনের ব্যবহারেও সমস্যা তৈরি করতে পারে।

আরও পড়ুন: আন্ডারওয়াটার ফটোগ্রাফি করতে পারবেন এই ফোন দিয়ে 

ফোন কেনার সময় কি স্ক্রিন প্রোটেক্টর লাগানো জরুরি?

ফোন কেনার পর স্ক্রিন প্রোটেক্টর লাগানো একান্তই ব্যক্তিগত পছন্দ এবং প্রয়োজনের ওপর নির্ভর করে। আপনি যদি মনে করেন যে আপনার ফোন যথেষ্ট সুরক্ষিতভাবে ব্যবহার করা হবে এবং অতিরিক্ত সুরক্ষার প্রয়োজন নেই, তাহলে স্ক্রিন প্রোটেক্টর না লাগানোই ভাল। তবে, আপনি যদি মনে করেন যে ফোন ব্যবহারের সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, কিংবা আপনি দীর্ঘমেয়াদী সুরক্ষা চান, তাহলে স্ক্রিন প্রোটেক্টর ব্যবহার করা উচিত। ফোনের স্ক্রিন সুরক্ষিত রাখার জন্য এটি একটি সহজ এবং কার্যকর উপায় হতে পারে।

এজেড