স্পোর্টস ডেস্ক
৩০ ডিসেম্বর ২০২২, ০২:০৬ পিএম
ঐতিহাসিক মারাকানায় ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ ফাইনালে উরুগুয়ের কাছে ২-১ গোলে হেরে যায় স্বাগতিক ব্রাজিল। শিরোপা লড়াইয়ের সেই ম্যাচে সেলেসাওদের হার দেখে কেঁদেছিলেন পেলের বাবা। বাবার কান্না দেখে পেলে বলেছিল, ‘বাবা কেঁদো না, দেখো একদিন ওই বিশ্বকাপটা ঠিকই এনে দেব আমি।’ মাত্র ১০ বছর বয়সী পেলে এভাবেই বাবাকে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন শিরোপা আনার। সেই কথা তিনি রেখেছেন। একটি নয়, সেলেসাওদের তিন তিনটি শিরোপা এনে দেন ফুটবলের এই সম্রাট।
আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির ‘বিংশ শতাব্দীর সেরা ক্রীড়াবিদ’, ফিফার ‘সর্বকালের সেরা’ ও ফুটবল ভক্তদের ‘সম্রাট’ তিনি। বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনকে কাঁদিয়ে অমর হয়ে ওঠা ‘পেলে’ ক্যান্সারের সঙ্গে যুদ্ধ করে শেষ পর্যন্ত পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে চলে গেলেন। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ব্রাজিলের সাও পাওলোর আলবার্ট আইনস্টাইন হাসপাতালে ৮২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ‘ফুটবল সম্রাট’।
আরও পড়ুন- পেলের মৃত্যুতে ব্রাজিলে তিন দিনের শোক ঘোষণা
ব্রাজিলের সাও পাওলোর এক বস্তিতে জন্ম নেওয়া এই ফুটবলারের অভাব অনটন মেটানোর জন্য ছোটবেলা থেকেই চায়ের দোকানে কাজ করতে হয়। এর সঙ্গে রেলস্টেশনে ঝাড়ু দেওয়ার পাশাপাশি কিছুদিন জুতা পরিষ্কারের কাজও করেছিলেন। ফুটবল কেনার টাকা ছিল না বলে মোজার ভেতরে কাগজ ঢুকিয়ে বানানো ফুটবল দিয়ে করতেন অনুশীলন। এরপর তার জাদুকরি ছন্দে মুগ্ধ হয়ে ব্রাজিল সরকার তাকে জাতীয় সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করে।
ব্রাজিলের জার্সি গায়ে মাত্র ১৬ বছর বয়সে অভিষেক হয় পেলের। এরপর প্রায় দুই দশক ধরে তিনি মাঠ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন আপন রঙে। ক্লাব ক্যারিয়ারে বেশিরভাগ সময় কেটেছে ব্রাজিলের ঐতিহ্যবাহী ক্লাব সান্তোসে এফসিতে। যে ক্লাবের হয়ে নিজের নামের পাশে যোগ করেছেন ছয়শর বেশি গোল। তাছাড়াও মাত্র ১৭ বছর বয়সে বিশ্বকাপ জিতেন এই ফুটবল সম্রাট। ১৯৫৮ বিশ্বকাপের সেমিতে হ্যাটট্রিক ও ফাইনালে জোড়া গোল করে শিরোপা উঁচু করে ধরেন পেলে।
আরও পড়ুন- সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ঋষভ পান্থ
জীবনের শেষ সময়টায় এসে পরিবারের সঙ্গেই কাটিয়েছেন পেলে। তবে শেষ পর্যন্ত ক্যান্সারের কাছে হেরে বিদায় নিতে হলো এই মহাতারকার।
এফএইচ