images

ইসলাম

কুড়িয়ে পাওয়া টাকার মালিককে না পেলে কী করবেন?

ধর্ম ডেস্ক

০৮ জুন ২০২৩, ১২:৫৮ পিএম

অর্থকড়ি বা ধন-সম্পদ দুনিয়াবি জীবন পরিচালনার জন্য সবচেয়ে জরুরি। মানুষ যখন এই জরুরি বস্তুটি হারিয়ে ফেলে তখন বিপদে পড়ে যায়। এই বিপদ দূর করার জন্য সংশ্লিষ্টকে দায়িত্ব দিয়েছে ইসলাম। কোনো দায়িত্ব পালন ছাড়াই মালিকের হারানো সম্পদটি নিজের মনে করে ভোগ করলে গুনাহগার হতে হবে। কেননা তা মানুষের হক এবং ইসলামে এটি খুবই সংবেদনশীল ইস্যু। প্রকৃত মুমিনকে পরের হকের ব্যাপারে সবসময় সজাগ থাকতে হয়।

আমরা জানি যে বিভিন্ন সময় রাস্তা-ঘাটে ও পথে-গাড়িতে টাকা-পয়সা পাওয়া যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি ও চেষ্টার পরও মালিককে পাওয়া যায় না। এই অবস্থায় কী দায়িত্ব পালন করতে হবে?
 
এর জবাব হলো- কুড়িয়ে পাওয়া টাকা-পয়সার ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধান হলো- যদি টাকার পরিমাণ এত কম হয় যে মালিক তা অনুসন্ধান করবে না, তাহলে কোনো ফকিরের কাছে তা সদকা করে দেবে। আর যদি অনেক টাকা বা মূল্যবান কোনো বস্তু পাওয়া যায় এবং মালিক এর খোঁজে থাকবে বলে মনে হয়, তাহলে ওই স্থান ও আশপাশ এবং নিকটবর্তী জনসমাগমের স্থানে প্রাপ্তির ঘোষণা দিতে থাকবে এবং প্রকৃত মালিক পাওয়া গেলে— তার কাছে হস্তান্তর করে দেবে।

আরও পড়ুন
কুড়িয়ে ফল খেলে পরের হক নষ্ট হবে কি?
বান্দার যে হক নষ্ট করলে ভুক্তভোগীর ক্ষমাও অগ্রহণযোগ্য

জাইদ ইবনু খালিদ আল-জুহানি (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে, কোনো হারানো জিনিস প্রাপ্তি প্রসঙ্গে আল্লাহর রাসুল (স.)-কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এক বছর না হওয়া পর্যন্ত এর ঘোষণা দিতে থাক। যদি শনাক্তকারী কোনো লোক পাওয়া যায়, তাহলে তাকে তা ফেরত দাও। এর ব্যতিক্রম হলে, তুমি এর থলে ও থলের বন্ধনী সঠিকভাবে চিনে রাখো এবং এর মধ্যকার জিনিস গণনা করার পর কাজে ব্যবহার করো। তারপর মালিক এসে গেলে, তার কাছে এটা ফিরিয়ে দিও। (ইবনে মাজাহ: ২৫০৭; তিরমিজি: ১৩৭৩)

ঘোষণার পরও মালিকের সন্ধান পাওয়া যাবে না বলে প্রবল ধারণা হলে তা কোনো গরিব-মিসকিনকে সদকা করে দেবে। ঘোষণাটি এমন স্থানে হতে হবে, যেখানে ঘোষণা দিলে তা মালিকের কানে পৌঁছবে বলে প্রবল ধারণা হয়। বিশেষ করে যেখানে পাওয়া গিয়েছিল সেখানে এবং এর আশেপাশের সমাগমস্থলে যেমন- বাজার, মসজিদের দরজা; যখন মুসল্লিরা মসজিদ থেকে বের হন। যদি দৃঢ় বিশ্বাস হয় মালিক তা খুঁজতে আসবে না, তাহলে তা গরিবদের মধ্যে সদকা করে দেবে। নিজে গরিব হলে নিজেও ব্যবহার করতে পারবে। তবে কোনোসময় মালিক এসে যদি খুঁজে তাহলে তাকে ফিরিয়ে দিতে হবে। 
(ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ২/২৮৯; আদ্দুররুল মুখতার: ৪/২৭৮; ফাতহুল কাদির: ২/২০৮; আলমুহিতুল বুরহানি: ৮/১৭১; ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ৬/৪৪৪, রহিমিয়া: ৯/১৯৩)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুড়িয়ে পাওয়া টাকা-পয়সা বা ধন-সম্পদ শরিয়ত নির্দেশিত উপায়ে মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।