images

ইসলাম

জাকাত কি রমজানে দেওয়া বাধ্যতামূলক?

ধর্ম ডেস্ক

২৩ মার্চ ২০২৩, ০৫:০৮ পিএম

জাকাত ফরজ ইবাদত এবং ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ। পবিত্র কোরআনে নামাজের পরই সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জাকাতকে। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, সালাত প্রতিষ্ঠা করেছে এবং জাকাত দিয়েছে, তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের নিকট। আর তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।’ (সুরা বাকারা: ২৭৭)

মুমিনদের পরিচয় সম্পর্কে বলা হয়েছে- ‘তারা এমন লোক- যাদেরকে আমি পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা দান করি, তারা নামাজ কায়েম করে, জাকাত প্রদান করে, সৎকাজের আদেশ করে ও মন্দকাজে বাধা প্রদান করে।’ (সুরা হজ: ৪১)

জেনে রাখা জরুরি যে, যার কাছে নিসাব পরিমাণ সম্পদ আছে— এমন স্বাধীন ও পূর্ণবয়স্ক মুসলিম নর-নারীর ওপর জাকাত ফরজ। আবার, নিসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ একবছর অতিক্রম করলেই কেবল জাকাত আদায় করতে হবে। 

আরও পড়ুন: জাকাত কী, কেন কাকে দিতে হয়?

অনেকে মনে করেন যে, জাকাত শুধু রমজান মাসে আদায় করার আমল। অথচ এ ধারণা সঠিক নয়। কারণ, নিসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর এক চান্দ্রবছর অতিবাহিত হলে সেই সম্পদের জাকাত দেওয়া ফরজ। উদাহরণস্বরূপ— যদি আপনি শাবান মাসে নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হন এবং সেই সম্পদ যদি একবছর পূর্ণ হয়, তাহলে হিসাব অনুযায়ী একবছর পর শাবান মাসেই আপনার ওপর জাকাত ফরজ হবে। আর জাকাত ফরজ হওয়ার পর তা অবিলম্বে আদায় করা উচিত; যদিও বাধ্যতামূলক নয়। কেননা তা গরিবের হক। যত দ্রুত আদায় করা যায়, ততই শ্রেয়। 

কিন্তু কাউকে দেখা যায়, তাদের জাকাতবর্ষ রমজান মাসের আগে, এমনকি রমজানের ৪-৫ মাস আগে জাকাত ফরজ হয়েছে। এরপরও তারা জাকাত আদায় করে না; বরং রমজানের অপেক্ষা করতে থাকে। এমন করা উচিত নয়। আর যাদের জাকাতবর্ষ রমজান মাসে পূর্ণ হবে— তারা রমজানেই আদায় করবেন। কেউ কেউ রজব-শাবানে ফরজ হওয়া জাকাতকে রমজানে আদায় করাকে ফরজ মনে করেন। এটি ঠিক নয়। 

তবে, হ্যাঁ যদি কারো জাকাত রমজানের অল্প ক’দিন আগে ফরজ হয়, সেক্ষেত্রে তারা রমজানে সেটা আদায় করার অবকাশ আছে। অর্থাৎ রমজানে জাকাত দিলেও তাদের জাকাত আদায় হবে। এতে শরিয়তের কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই।

জাকাতের মাসয়ালা অনুযায়ী, কেউ চাইলে অগ্রিমও জাকাত দিতে পারেন। যেমন রমজানের পরের মাস শাওয়ালে কারো জাকাত ফরজ হবে, তিনি চাইলে তা রমজানেই আদায় করতে পারেন। তাতেও জাকাত আদায় হয়ে যাবে। যেহেতু রমজানে যেকোনো নেক আমলের সওয়াব বেশি, রমজানের ফজিলত লাভের জন্য জাকাত আগে-ভাগে দেওয়ায় ক্ষতি নেই, বরং তা উত্তম আমল হিসেবে গণ্য হবে। দান-সদকাসহ যেকোনো পরোপকার জাতীয় আমল রমজানে করতে পারলে বেশি উপকার। হাদিসে আছে, নবীজি (স.) রমজান মাসে কল্যাণবাহী বায়ুর চেয়ে অধিক দানশীল ছিলেন। (বুখারি: ০৬; মুসলিম: ২৩০৮; মুসনাদে আহমদ: ২৬১৬)

আরও পড়ুন: রমজানে দান-সদকায় অফুরন্ত সওয়াব

সুতরাং জাকাত, দান-সদকা রমজানে বেশি বেশি করা সুন্নত এবং ফজিলত লাভের মাধ্যম। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে সহিহ শুদ্ধভাবে জাকাত আদায় করার তাওফিক দান করুন। দান-সদকা করার তাওফিক দান করুন। সুন্দরভাবে সিয়াম পালন করার তাওফিক দান করুন। আমিন।