ধর্ম ডেস্ক
০৫ মার্চ ২০২৩, ০১:০৬ পিএম
নামাজ ফরজ ইবাদত। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বাদ দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের সুযোগ নেই। তাই আল্লাহর প্রিয় বান্দারা নামাজের প্রতি যত্নশীল। কিছু মুসল্লি এমনও আছেন যারা এক ওয়াক্ত আদায় করার পর আরেক ওয়াক্তের জন্য অপেক্ষা করেন। হাশরের কঠিন দিনে যে সাত শ্রেণির মানুষ আরশের ছায়া পাবেন, তাঁদের মধ্যে একপ্রকার তাঁরাই, যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত। (সূত্র: সহিহ বুখারি: ৬৬০)
নামাজের জন্য অপেক্ষা মানে নামাজে রত
হাদিস শরিফে নামাজের জন্য অপেক্ষমাণ ব্যক্তিকে নামাজরত বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ অপেক্ষার কারণে নামাজ পড়লে যে সওয়াব পেতেন, সেই সওয়াব লাভ করবেন নামাজের জন্য অপেক্ষাকারী। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘নামাজের প্রতীক্ষা যতক্ষণ (কাউকে) আবদ্ধ রাখে, ততক্ষণ সে আসলে নামাজের মধ্যেই থাকে; যখন নামাজ ছাড়া অন্য কোনো কিছু (তাকে) তার স্বীয় পরিবারের কাছে ফিরে যেতে বাধা না দেয়।’ (বুখারি: ৩২২৯, ৪৭১৭; মুসলিম: ৬৪৯; তিরমিজি: ২১৫, ২১৬, নাসায়ি: ৭৩৩,৭৩৮; আবু দাউদ: ৪৬৯)
আরও পড়ুন: নামাজ জামাতে পড়ার তাগিদ কেন?
ফেরেশতাদের সঙ্গে মহান রবের গর্ব
হাদিস থেকে জানা যায়, নামাজের জন্য অপেক্ষমাণ বান্দার জন্য আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করেন। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, আমরা আল্লাহর রাসুল (স.)-এর সঙ্গে মাগরিব আদায় করলাম, অতঃপর যারা ফিরে যাওয়ার ফিরে গেল এবং যারা থাকার থাকল, রাসুলুল্লাহ (স.) দ্রুত ফিরে এলেন, তাঁর নিঃশ্বাস জোরে পড়ছিল, তার হাঁটুর কাপড় উঠে যাচ্ছিল। তিনি বললেন, ‘তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো, তোমাদের প্রতিপালক আসমানের একটি দরজা খুলে তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করছেন। তিনি বলছেন, আমার বান্দাদের দেখো, তারা এক ফরজ শেষ করে অপর ফরজের অপেক্ষা করছে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৮০১)
গুনাহ মুছে যায় এবং সওয়াব বাড়িয়ে দেওয়া হয়
কেউ নামাজের জন্য অপেক্ষা করলে আল্লাহ তাআলা তার গুনাহসমূহ মুছে দিবেন এবং তার পূণ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দিবেন। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছেন, ‘আমি কি তোমাদের এমন জিনিসের সন্ধান দেবো না যার দ্বারা আল্লাহ তোমাদের গুনাহসমূহ মুছে দিবেন এবং পূণ্যের পরিমাণ বাড়িয়ে দিবেন? তারা বলেন, হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল! তিনি বলেন, কষ্টের সময় পূর্ণাঙ্গভাবে অজু করা, মসজিদের দিকে ঘন ঘন যাতায়াত করা এবং এক ওয়াক্তের নামাজ আদায়ের পর পরবর্তী ওয়াক্তের নামাজের জন্য অপেক্ষারত থাকা।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৪২৭)
আরও পড়ুন: আউয়াল ওয়াক্তে নামাজ পড়ার ফজিলত
উল্লেখ্য, জামাতে সালাত আদায় করার সওয়াব অনেকগুণ বেশি। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘জামাতে সালাত আদায়ের ফজিলত একাকী সালাত আদায় অপেক্ষা ২৫ গুণ বেশি। যদি লোকসংখ্যা বেশি হয়, তাহলে মসজিদে যে পরিমাণ লোক থাকবে ততগুণ বেশি সওয়াব পাবে। একজন লোক জিজ্ঞেস করল, যদি লোকসংখ্যা ১০ হাজার হয়? তিনি বলেন, হ্যাঁ, ৪০ হাজার হলেও’ (ইবনে আবি শায়বা: ৮৪৮৫)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘জামাতে সালাতের ফজিলত একাকী আদায়কৃত সালাতের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি।’ (বুখারি: ৬৪৫)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহর অন্তরে নামাজের প্রতি টান সৃষ্টি করে দিন। সবসময় নামাজের অপেক্ষায় থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।