ধর্ম ডেস্ক
২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৩:৫৮ পিএম
আজান হলো সাধারণত মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ের জন্য আহ্বান বা ডাকধ্বনি। দিনে পাঁচবার আজান দেওয়ার মাধ্যমে মুসল্লিদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য আহ্বান করা হয়। নামাজের জন্য আজান দেওয়া সুন্নতে মুয়াক্কাদা।
আজান সম্পর্কে হাদিসে বলা হয়েছে, আবদুল্লাহ ইবনে ইউসুফ (রহ.) আবদুল্লাহ ইবনে আবদুর রহমান আনসারি মাজিনি (রহ.) থেকে বর্ণনা করেন যে, আবু সাঈদ খুদরি (রা.) তাকে বললেন, আমি দেখছি তুমি বকরি চরানো এবং বন-জঙ্গলকে ভালোবাস। তাই তুমি যখন বকরি চরাতে থাকো বা বন-জঙ্গলে থাকো তখন উচ্চকণ্ঠে আজান দাও। কেননা, জ্বিন, ইনসান বা যেকোনো বস্তুই যতদূর পর্যন্ত মুয়াজ্জিনের আওয়াজ শুনবে, কেয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দেবে। আবু সাঈদ (রা.) বলেন, একথা আমি রাসুলুল্লাহ (স.) এর কাছে শুনেছি। (বুখারি: ৫৮২)
আরও পড়ুন: আজানের পর দোয়া ও দরুদ পড়ার ফজিলত
তাই নামাজের জন্য আজানের গুরুত্ব অপরিসীম। কেউ যদি শরিয়তসম্মত কারণে অফিস অথবা বাসায় নামাজ পড়ে এবং তার বাসা বা অফিস পর্যন্ত এলাকার মসজিদের আজানের শব্দ শোনা যায় তাহলে এলাকার মসজিদের আজান তার জন্য যথেষ্ট হবে। তখন অফিস-বাসায় আজান না দিয়েও জামাতে নামাজ পড়া যাবে। তবে এক্ষেত্রেও আজান দেওয়া মোস্তাহাব।
আবার বাসা-অফিসে জামাতে নামাজ পড়ার ক্ষেত্রে এলাকার কোনো আজান শোনা না যাওয়ার পরও আজান একামত না দেওয়া মাকরুহ ও গুনাহের কাজ। অর্থাৎ বাসা-অফিস থেকে এলাকার মসজিদ এতটুকু দূরে যে সেখানে আজানের শব্দ পৌঁছায় না—এমন পরিস্থিতিতে আজান একামত দিতে হবে। নইলে গুনাহ হবে। তবে এক্ষেত্রেও আজান-একামত ছাড়া নামাজ পড়ে নিলে নামাজ হয়ে যাবে।
আরও পড়ুন: আল্লাহু আকবর ধ্বনির মাহাত্ম্য
এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, আলী (রা.) বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি নির্জন মরুভূমির দিকে যাত্রা করে এবং পথিমধ্যে নামাজের ওয়াক্ত হয়ে যায়, তাহলে সে চাইলে আজান-একামত দিয়ে নামাজ পড়তে পারবে। আর চাইলে সে শুধুমাত্র একামত দিয়েও নামাজ পড়তে পারবে। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ২২৮৪)
উল্লেখ্য, ছাতার ব্যবস্থা থাকলে সাধারণ বৃষ্টির কারণে মসজিদের জামাত ত্যাগ করা উচিত নয়। কেবল প্রবল বর্ষণের ক্ষেত্রেই মসজিদের জামাতে উপস্থিত না হওয়ার অনুমতি রয়েছে।
(ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/ ৫৪, আল ইনায়া শরহুল হেদায়া: ১/২৫৩; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ২/৩৫৯; মাবসুত, সারাখসি: ১/১৩৩; আল বাহরুর রায়েক: ১/২৬৫; ফতোয়ায়ে খানিয়া: ১/৭৮)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে আজান, একামত ও নামাজের নিয়মকানুনসহ শরিয়তের সকল বিধি-বিধান যথাযথ মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।