images

ইসলাম

তিন কু-সংস্কার থেকে বেঁচে থাকলে বিনা হিসাবে জান্নাত

ধর্ম ডেস্ক

১৫ জানুয়ারি ২০২৩, ০২:৫১ পিএম

কুসংস্কার নামক ব্যাধি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। অথচ ইসলামে এর কোনো স্থান নেই। আল্লাহর ওপর আস্থা ও নির্ভরতা বহুলাংশে লোপ পায় এই কুসংস্কারের কারণেই। কেয়ামতের কঠিন দিনেও কিছু মানুষের বিচার হবে না কুসংস্কার থেকে বেঁচে থাকার পুরস্কার হিসেবে। হাদিস অনুযায়ী, বিনা হিসেবেই তারা জান্নাতে যাবেন। আসুন, জেনে নিই- কারা সেই সৌভাগ্যবান? কোন ধরণের কুসংস্কার থেকে তারা বেঁচে ছিলেন?

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, একদিন রাসুল (স.) ইরশাদ করেন, ‘আমার কাছে সব উম্মতের লোকদের উপস্থাপন করা হলো। আমি দেখলাম, কোনো নবীর সঙ্গে মাত্র সামান্য ক’জন (তিন থেকে সাতজন অনুসারী) আছে। কোনো নবীর সঙ্গে আছে একজন বা দুজন। কোনো নবীর সঙ্গে দেখলাম কেউ নেই! ইতোমধ্যে বড় একটি জামাত আমার সামনে পেশ করা হলো। আমি মনে করলাম, এটাই বুঝি আমার উম্মতের জামাত। কিন্তু আমাকে বলা হলো যে, এটা হলো মুসা (আ.) ও তাঁর উম্মতের জামাত; আপনি অন্য দিগন্তে তাকান।

আরও পড়ুন: পৃথিবীতে নবী-রাসুলদের আগমনের ধারা

অতঃপর আমি সেই দিকে তাকাতেই এক বিরাট জামাত দেখতে পেলাম। আমাকে বলা হলো—এরা আপনার উম্মত। আর তাদের সঙ্গে এমন ৭০ হাজার লোক আছে, যারা বিনা হিসাবে ও বিনা আজাবে সরাসরি জান্নাতে প্রবেশ করবে। এ কথা বলে তিনি (আল্লাহর রাসুল) উঠে নিজ ঘরে প্রবেশ করলেন। এদিকে লোকেরা (উপস্থিত সাহাবিরা) ওসব জান্নাতি লোকদের ব্যাপারে আলোচনা শুরু করে দিলো, (কারা হবে সেই লোক) যারা বিনা হিসাবে ও বিনা আজাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে!

কেউ কেউ বলল, সম্ভবত ওসব ব্যক্তি তারাই, যারা আল্লাহর রাসুল (স.)-এর সাহাবা। কিছু লোক বলল, বরং সম্ভবত ওরা হলো তারা, যারা ইসলামে জন্মগ্রহণ করেছে এবং আল্লাহর সঙ্গে কখনো কাউকে শরিক করেনি। আরো অনেকে অনেক কিছু বলল। কিছুক্ষণ পরে আল্লাহর রাসুল (স.) তাদের কাছে বের হয়ে এসে বলেন, তোমরা কী ব্যাপারে আলোচনা করছ? তারা ব্যাপারটি খুলে বললে আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, (বিনা বিচারে জান্নাতি লোক) হলো তারা, যারা—(ক) দাগ কেটে রোগের চিকিৎসা করায় না, (খ) অন্যের কাছে রুকইয়া বা ঝাড়ফুঁক করে দিতে বলে না এবং (গ) কোনো জিনিসকে অশুভ লক্ষণ বলে মনে করে না, বরং তারা শুধু আল্লাহর ওপর ভরসা রাখে।

আরও পড়ুন: দুঃখ হতাশা বিষণ্ণতা থেকে মুক্তির আমল

এ কথা শুনে উক্কাশাহ ইবনে মিহসান নামক একজন সাহাবি উঠে দাঁড়ালেন এবং বলেন, (হে আল্লাহর রাসুল!) আপনি আমার জন্য দোয়া করুন, আল্লাহ যেন আমাকে তাদের দলভুক্ত করে দেন! তিনি (স.) বলেন, তুমি তাদের মধ্যে একজন। অতঃপর আরেক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলল, আপনি আমার জন্যও দোয়া করুন, যেন আল্লাহ আমাকেও তাদের দলভুক্ত করে দেন। তিনি বলেন, উক্কাশাহ (এ ব্যাপারে) তোমার অগ্রগামী হয়ে গেছে।’ (সহিহ বুখারি: ৫৭০৫, ৩৪১০; তিরমিজি: ২৪৪৬)

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দাগ কেটে রোগের চিকিৎসা, ঝাড়ফুঁক, অশুভ লক্ষণ ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকার এবং মহান রবের ওপর ভরসা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।