images

ইসলাম

বদনজর থেকে বাচ্চাদের মুক্ত রাখার দোয়া 

ধর্ম ডেস্ক

২০ ডিসেম্বর ২০২২, ০৩:৩০ পিএম

ইসলামে বদনজর সত্য। এর প্রভাবও সত্য। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘তোমরা বদ নজরের প্রভাব থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করো। কেননা নজরের প্রভাব সত্য’ (ইবনে মাজাহ: ৩৫০৮)। আল্লামা ইবনে কাসির (রহ.) বলেছেন, ‘..বদনজরের কুপ্রভাবের বাস্তবতা রয়েছে আল্লাহর হুকুমে। (তাফসিরে ইবনে কাসির: ৪/৪১০)

আরও পড়ুন: যেসব গুনাহের কারণে আল্লাহ রাগ করেন

শিশু-কিশোর, যুবক, বৃদ্ধ— যে কেউ বদনজরের শিকার হতে পারেন। তাই সতর্ক থাকার পাশাপাশি দোয়া পড়ার শিক্ষা রয়েছে হাদিসে। সতর্কতা বলতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর দোয়া-দরুদ, আয়াতুল কুরসি, সুরা ফালাক ও নাস ইত্যাদি পড়া। পবিত্র থাকা বা সবসময় অজু অবস্থায় থাকাও যেকোনো অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ট উপকারী আমল। বাচ্চাদের বদনজর থেকে বাঁচাতে নবীজি (স.) কোলে নিয়ে বিভিন্ন দোয়া পড়ে ফুঁ দিতেন। এখানে তেমনই একটি দোয়া উদ্ধৃত করা হচ্ছে। যে দোয়াটি পড়ে নবীজি (স.) আদরের নাতি হজরত হাসান ও হুসাইন (রা.)-কে ফুঁ দিতেন। 

দোয়াটি হলো— أُعِيذُكُمَا بِكَلِمَاتِ اللَّهِ التَّامَّاتِ مِنْ كُلِّ شَيْطَانٍ وَهَامَّةٍ وَمِنْ كُلِّ عَيْنٍ لامَّةٍ ‘উইজুকুমা বিকালিমাতিল্লাহিত তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন ওয়া হাম্মাতিন ওয়া মিন কুল্লি আইনিন লাম্মাতিন।’ অর্থ: ‘আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহর কালামের আশ্রয়ে রাখতে চাই সবধরনের শয়তান হতে, কষ্টদায়ক বস্তু হতে এবং সব ধরনের বদ নজর হতে। (বুখারি: ৩৩৭১)

সুতরাং জ্বিন ও মানুষের কুদৃষ্টি থেকে বাঁচাতে এ দোয়াটি পড়ে বাচ্চাদের ফুঁ দেওয়া সুন্নত।

আরও পড়ুন: সন্তানের জন্য পাঁচটি দোয়া করতে ভুলবেন না

এছাড়াও সহিহ মুসলিমে আরেকটি দোয়ার উল্লেখ রয়েছে। যেটি ফেরেশতা জিব্রাইল (আ.) নবীজিকে অসুস্থতার সময় পড়ে ফুঁ দিয়েছিলেন। দোয়াটি হলো— بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ، مِنْ كُلِّ شَيْءٍ يُؤْذِيكَ، مِنْ شَرِّ كُلِّ نَفْسٍ أَوْ عَيْنِ حَاسِدٍ، اللهُ يَشْفِيكَ بِاسْمِ اللهِ أَرْقِيكَ ‘বিসমিল্লাহি আরকিকা, মিন কুল্লি শাইয়িন ইয়ু’যিকা, ওয়া মিন কুল্লি আইনিন ও ওয়া হাসিদিন আল্লাহু ইয়াশফিকা, বিসমিল্লাহি আরকিকা।’ অর্থ: ‘আল্লাহর নামে আপনাকে ফুঁ দিচ্ছি; যেসব জিনিস আপনাকে কষ্ট দেয়, সেসব প্রাণের অনিষ্ট কিংবা হিংসুকের বদ নজর থেকে আল্লাহ আপনাকে শিফা দিন; আল্লাহর নামে আপনাকে ফুঁ দিচ্ছি। (মুসলিম: ৫৫১২)

আবু সাঈদ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) একবার কোনো রোগে আক্রান্ত হলেন। তখন ফেরেশতা জিবরাইল (আ.) নবীজি (স.)-এর কাছে এসে বললেন, হে মুহাম্মদ! আপনি কি অসুস্থতা বোধ করছেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তখন জিব্রাইল (আ.) দোয়াটি পড়ে নবীজিকে ফুঁ দিলেন। সুতরাং দোয়াটি পড়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে বারবার ফুঁ দিলে ধীরে ধীরে বদনজর কেটে যাবে ইনশাল্লাহ।

আরও পড়ুন: যেখানে নবীজিকে নামাজ শিখিয়েছেন জিব্রাইল (আ.)

এছাড়াও সুরা ফালাক ও নাস তিনবার পড়ে আক্রান্ত ব্যক্তিকে ফুঁ দেওয়ার মাধ্যমেও বদনজরসহ মানুষ ও জিনের যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করা যায়। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) জ্বিন এবং মানুষের কু-দৃষ্টি হতে আশ্রয় চাইতেন। তারপর সুরা ফালাক ও নাস নাজিল হলে তিনি এ সুরা দুটি গ্রহণ করেন এবং বাকিগুলো পরিত্যাগ করেন।’ (তিরমিজি: ২০৫৮)

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে বদনজরের কুপ্রভাব থেকে হেফাজত রাখুন। আমিন।