images

ইসলাম

দোয়া কবুল হওয়ার জন্য কেমন একনিষ্ঠতা জরুরি

ধর্ম ডেস্ক

১০ মার্চ ২০২২, ০১:২৪ পিএম

দোয়া মুমিনের হাতিয়ার। দোয়া কবুলের মাধ্যমে অসম্ভবকেও সম্ভব করে দেন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা। ‘তোমরা আমার কাছে দোয়া করো; আমি তোমাদের দোয়া কবুল করব’(সূরা মুমিন: ৬০)। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘দোয়া ছাড়া আর কিছুই আল্লাহর সিদ্ধান্তকে বদলাতে পারে না।’(তিরমিজি: ২১৩৯) 

আল্লাহ তাআলা দোয়া কবুল করবেন—এ কথার ওপর দৃঢ় সংকল্প সহকারে দোয়া করতে হবে। হাদিসে এসেছে, “আল্লাহ তোমার দোয়ার জবাব দেবেন, এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে আল্লাহকে ডাকো। তবে, এটাও জেনে রাখো যে, গাফেল (অমনোযোগী ও অসাড়) অন্তরের দোয়ার জবাব দেওয়া হয় না।” (তিরমিজি: ৭৪৭৯)

দোয়া কবুলের ব্যাপারে মনে কোনো দ্বিধা রাখা যাবে না। সংশয় রাখার কোনো কারণও নেই। কারণ, আল্লাহ তাআলা শয়তানের দোয়াও কবুল করেছেন। শয়তান দোয়া করেছিল, তাকে যেন পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দেওয়া হয়। “(ইবলিস) বলল, ‘আমাকে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত অবকাশ দিন’। (আল্লাহ) বললেন, ‘তুই অবকাশপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত’ (সুরা আরাফ: ১৪-১৫) 

এমনকি অবিশ্বাসীরাও (মুশরিক) বিপদে পড়লে আল্লাহকে ডাকে এবং তিনি তাতে সাড়াও দেন। 

“আর যখন তারা কোনো জলযানে আরোহন করে, তারা আল্লাহকে একনিষ্ঠভাবে ডাকে। অতঃপর তিনি যখন নিরাপদে তাদের স্থলে পৌঁছে দেন, তারা তাঁর সঙ্গে শরিক করতে থাকে।” (সুরা আনকাবুত: ৬৫)

আল্লাহ জানেন যে, তাদেরকে নিরাপদে তীরে পৌঁছে দেওয়ার পর তারা আবারও শিরক করবে। তারপরও তাদের দোয়া আল্লাহ কবুল করেছেন। কারণ, তারা ক্ষণিকের জন্য হলেও আল্লাহকে ডেকেছে ইখলাস বা একনিষ্ঠতার সঙ্গে। এই উপায়ে দোয়া করলে যদি মুশরিকের দোয়াও কবুল করা হয়, তাহলে তাওহিদের অনুসারীদের দোয়া ফিরিয়ে দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। তাই দরকার ইখলাস বা একনিষ্ঠতা।

সুতরাং, মুমিন মুসলমানের জন্য বাঞ্ছনীয়- রাতারাতি দোয়া কবুল না হলেও ক্রমাগত দোয়া করতে থাকা। হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। বরং দোয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে হবে। এমনটি বলা যাবে না যে, আমি এত দোয়া করলাম, অথচ আল্লাহ কবুল করলেন না। এভাবে বান্দা মূলত নিজের দোয়াকে নিজেই ধ্বংস করে ফেলে।

সালাফদের মধ্যে দেখা যায়, কেউ ২০ বছর ধরে একটি জিনিস চেয়ে পাননি, তারপরও তাঁরা আশা ছেড়ে দেননি। অবিরত দোয়া করে গেছেন এই আশায় যে, একদিন আল্লাহ তাআলা তাঁর দোয়া কবুল করবেন।

আরও দেখুন: দোয়া কবুল না হওয়ার কারণ

উল্লেখ্য, কবুল হওয়ার জন্য দোয়ার শুরু ও শেষে এবং মাঝখানে দরুদ পাঠ করা গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে আবু সুলায়মান আদ-দারানি সুন্দর একটি কথা বলেছেন যে—

 “নবীর প্রতি দরুদ এমনিতেই কবুল হয়। আর আল্লাহ কোনো দোয়ার শুরু এবং শেষ অংশ কবুল করবেন, মাঝখানের অংশ প্রত্যাখ্যান করবেন, এমনটি হতে পারে না”।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে একনিষ্ঠভাবে কাকুতি-মিনতি করে তাঁর কাছে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।