ধর্ম ডেস্ক
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:০৪ পিএম
নামাজ শুধু কয়েক রাকাত আদায় করেই শেষ হয়ে যায় এমন নয়। হাদিসে এমন কিছু নামাজির কথা এসেছে, যাদের জন্য নামাজ শেষ হওয়ার পরও ফেরেশতারা দোয়া করতে থাকেন। আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও রহমত কামনা করেন। তারা কারা? মূলত তারা সেই সৌভাগ্যবান বান্দা, যারা নামাজ আদায়ের পরও মসজিদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন।
রাসুলুল্লাহ (স.) স্পষ্ট করে বলেছেন- ‘তোমাদের কেউ যতক্ষণ তার সালাতের স্থানে থাকে এবং তার অজু ভঙ্গ না হয়, ততক্ষণ ফেরেশতারা তার জন্য এ দোয়া করতে থাকে- হে আল্লাহ, তাকে ক্ষমা করুন; হে আল্লাহ, তাকে রহম করুন।’ (সহিহ বুখারি: ৬৫৯)
এই হাদিস অনুযায়ী, যে নামাজি ফরজ নামাজ আদায়ের পর অজু অটুট রেখে মসজিদে বসে থাকেন তিনিই সেই ব্যক্তি, যার জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন।
নামাজের আগে বা পরে মসজিদে অবস্থানকে হালকা করে দেখার সুযোগ নেই। হজরত আনাস (রা.) বলেন- ‘নবীজি (স.) এক রাতে এশার সালাত বিলম্ব করে আদায় করেন। সালাত শেষে বলেন, লোকেরা নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে গেছে; কিন্তু তোমরা যতক্ষণ নামাজের জন্য অপেক্ষা করেছ, ততক্ষণ তোমরা সালাতরত হিসেবেই গণ্য হবে।’ (সহিহ বুখারি: ৬৬১)
অর্থাৎ, ফরজ নামাজের অপেক্ষায় থাকা কিংবা নামাজের পর মসজিদে বসে থাকা দুটিই সালাতের সওয়াবের অন্তর্ভুক্ত।
আরও পড়ুন: নামাজ আল্লাহর কাছে গৃহীত হওয়ার জন্য ৫ বিষয় খেয়াল রাখবেন
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- ‘কোনো মুসলিম যতক্ষণ মসজিদে সালাত ও জিকিরে রত থাকে, আল্লাহ তাঁর প্রতি ততটাই আনন্দিত হন, যেমন প্রবাসী ব্যক্তি ঘরে ফিরলে তার পরিবার আনন্দিত হয়।’ (ইবনে মাজাহ: ৮০০)
এই হাদিস প্রমাণ করে, নামাজ শেষে মসজিদে বসে থাকা আল্লাহর কাছে বিশেষভাবে প্রিয় আমল।
নামাজ শেষে মসজিদে অবস্থানকারীদের মর্যাদা এতটাই বেশি যে আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাদের সামনে তাদের নিয়ে গর্ব করেন। হজরত আবদুর রহমান বিন আমর (রা.) বলেন- ‘রাসুলুল্লাহ (স.) আমাদের বললেন, আল্লাহ আসমানের একটি দরজা খুলে ফেরেশতাদের কাছে বলেন- ‘আমার বান্দাদের দেখো, তারা এক ফরজ আদায়ের পর আরেক ফরজের অপেক্ষা করছে।’ (ইবনে মাজাহ: ৮০১)
আরও পড়ুন: ফজর নামাজের ১০ ফজিলত
ফজরের নামাজের পর মসজিদে অবস্থান অনেক মর্যাদাপূর্ণ আমল। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- ‘যে ব্যক্তি ফজরের সালাত জামাতে আদায় করে, তারপর সূর্য ওঠা পর্যন্ত বসে আল্লাহর জিকির করে এবং পরে দুই রাকাত সালাত আদায় করে, তার জন্য পূর্ণ হজ ও পূর্ণ ওমরার সওয়াব রয়েছে।’ (তিরমিজি: ৫৮৬)
নবীজি (স.) নিজেই নিয়মিত এ আমল করতেন। জাবের বিন সামুরা (রা.) বলেন- ‘রাসুলুল্লাহ (স.) ফজরের সালাত আদায়ের পর সূর্য ওঠা পর্যন্ত নিজের সালাতের স্থানে বসে থাকতেন।’ (তিরমিজি: ৫৮৫)
আমরা অনেক সময় নামাজ শেষ হতেই দ্রুত মসজিদ ছেড়ে বেরিয়ে যাই। অথচ সামান্য কিছু সময় মসজিদে বসে থাকলেই আমরা সেই সৌভাগ্যবান নামাজিদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারি, যাদের জন্য ফেরেশতারা ক্ষমা ও রহমতের দোয়া করেন।