ধর্ম ডেস্ক
২১ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
জুমাবার মুসলমানদের কাছে এক কাঙ্ক্ষিত ও বরকতময় দিন। হাদিসে এই দিনকে সাপ্তাহিক ঈদ বলা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদ।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮)
পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন হওয়া, উত্তম পোশাক পরা, আগেভাগে মসজিদে যাওয়া, খুতবা শোনা ইত্যাদি এই দিনের বিশেষ আমল। পাশাপাশি কিছু আদবের প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে যেমন, মুসল্লিদের টপকে সামনে না যাওয়া, অনর্থক কথা না বলা ইত্যাদি।
এসব আমলের মধ্যে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব সহকারে এসেছে এবং বারবার বলা হয়েছে তা হলো- মসজিদে গিয়ে কথাবার্তা না বলা এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা। এই আদব রক্ষা করলে জুমাবারের সকল ফজিলত লাভ হয়; আর এ বিষয়ে গাফিলতি করলে জুমার আমল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘জুমার সালাতে তিন ধরনের লোক হাজির হয়… ১. যারা মসজিদে এসে তামাশা করে; তারা তামাশা ছাড়া কিছুই পায় না। ২. যারা হাজির হয়ে দোয়া করে; আল্লাহ যাকে চান তাকে দেন। ৩. যারা চুপ থাকে, মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনে, কারও কাঁধ ডিঙিয়ে সামনে যায় না; তাদের দশ দিনের গুনাহ ক্ষমা করা হয়।’ (আবু দাউদ: ১১১৩)
আরও পড়ুন: সুরা কাহাফ ও দরুদপাঠ জুমার দিনের বিশেষ আমল
ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন- ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে ইমামের খুতবার সময় কথা বলে, সে যেন পুস্তক বহনকারী গাধার মতো!’ এবং অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘তার কোনো জুমা নেই।’ (মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ২/১৮৪)
আরও ইরশাদ হয়েছে- ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে গোসল করে, উত্তম পোশাক পরে, সুগন্ধি ব্যবহার করে, খুতবার সময় নীরব থাকে—আগের জুমা থেকে পরের জুমা পর্যন্ত তার সব ছোট পাপ মাফ করা হয়।’ (আবু দাউদ: ৩৪৩)
আরেক হাদিসে রয়েছে- ‘…ইমামের কাছে ঘেঁষে বসে, কথা না বলে মনোযোগসহ খুতবা শোনে, তার প্রতিটি কদমে এক বছরের রোজা ও নামাজের সওয়াব লেখা হয়।’ (তিরমিজি: ৪৫৬)
আরও পড়ুন: মুসল্লিদের টপকে সামনে আগানো জুমার আদবের পরিপন্থী
আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন- ‘রাসুল (স.) বলেন, ‘জুমার খুতবা চলাকালে যদি তুমি পাশেরজনকে বলো ‘চুপ করো’, তাহলে তুমি অনর্থক কাজে লিপ্ত হলে।’ (বুখারি: ৯৩৪; মুসলিম: ৯৩১)
জুমার দিন সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। তাই মুসল্লিদের উচিত পরিপাটি হয়ে মসজিদে যাওয়া, খুতবার সময় সম্পূর্ণ নীরব থাকা, মনোযোগসহ খুতবা শোনা এবং নামাজ আদায় করা। তবেই জুমার প্রকৃত ফজিলত লাভ হয়। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দিন। আমিন।