ধর্ম ডেস্ক
২৬ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৪৫ পিএম
পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতা ইসলামের মূল ভিত্তি। কিছু বিশেষ কারণে শরীর অপবিত্র হয় এবং তখন গোসল করা ফরজ হয়ে যায়। যেমন, স্ত্রী সহবাস, স্বপ্নদোষ এবং নারীদের হায়েজ ও নেফাসের পর গোসল করা ফরজ। এমন অপবিত্র অবস্থায় একজন মুসলিমের কিছু ইবাদত ও কাজ থেকে বিরত থাকা আবশ্যক। আল্লাহ তাআলা পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন মানুষদের ভালোবাসেন।
পবিত্র কোরআনে তিনি বলেন- ‘সেখানে এমন লোক আছে, যারা উত্তমরূপে পবিত্রতা অর্জন করতে ভালোবাসে। আর আল্লাহ পবিত্রতা অর্জনকারীদের ভালোবাসেন।’ (সুরা তাওবা: ১০৮)
গোসল ফরজ অবস্থায় নিম্নোক্ত আমলগুলো সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ
বড় নাপাকি অবস্থায় গোসল না করে সালাত আদায় করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আল্লাহ তাআলা বলেন- ‘হে ঈমানদাররা, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা সালাত আদায় করো না, যতক্ষণ না পর্যন্ত বুঝতে পার যে তোমরা কী বলছ। বড় নাপাকি অবস্থায়ও সালাত আদায় করো না, যতক্ষণ না গোসল করেছ।’ (সুরা নিসা: ৪৩)
আরও পড়ুন: ফরজ গোসলে যে ভুল করলে নামাজ কবুল হবে না
অপবিত্র অবস্থায় কোরআন শরিফ স্পর্শ করা যাবে না। পবিত্র কোরআনে এসেছে- ‘এটি স্পর্শ করে না, যারা সম্পূর্ণ পবিত্র তারা ছাড়া।’ (সুরা ওয়াকেয়া: ৭৯)
হাদিসে ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন- ‘পবিত্র না হয়ে কোরআন কারিম স্পর্শ করবে না।’ (দারাকুতনি: ৪৩১)
গোসল ফরজ অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত করা বৈধ নয়। আলী (রা.) বলেন- ‘রাসুলুল্লাহ (স.) সবসময় আমাদেরকে কোরআন পাঠ করাতেন, তবে যখন তিনি বড় নাপাকি অবস্থায় থাকতেন তখন ছাড়া।’ (তিরমিজি: ১৪৬; আহমদ: ১০১৪)
আরও পড়ুন: গোসল ফরজ অবস্থায় কোরআন শোনা যাবে?
গোসল ফরজ অবস্থায় মসজিদে প্রবেশ ও অবস্থান নিষিদ্ধ। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- ‘হায়েজ নারী ও গোসল ফরজ ব্যক্তির জন্য মসজিদে প্রবেশ বৈধ নয়।’ (আবু দাউদ: ২৩২)
তবে, মসজিদের ভেতর দিয়ে কেবল অন্য কোথাও যাওয়ার জন্য অতিক্রম করা বৈধ।
গোসল ফরজ অবস্থায় কাবা শরিফ তাওয়াফ করা বৈধ নয়। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- ‘কাবা শরিফ তাওয়াফ করা সালাত আদায়ের সমান।’ (নাসায়ি: ২৯২০)
পবিত্রতা ইসলামি ইবাদতের মূল ভিত্তি। তাই যাদের উপর গোসল ফরজ হয়েছে, তাদের জন্য যত দ্রুত সম্ভব গোসল করে পবিত্র হওয়া অপরিহার্য। কারণ পবিত্রতা ছাড়া ইবাদত গ্রহণযোগ্য হয় না। এই নির্দেশনাগুলো মেনে চলা একজন মুসলিমের জন্য অত্যাবশ্যক, যাতে তার ইবাদতসমূহ আল্লাহর কাছে কবুল হয় এবং তিনি সন্তুষ্ট হন।