images

ইসলাম

জুমার দিনের দোয়া

ধর্ম ডেস্ক

০১ আগস্ট ২০২৫, ১২:৫৩ পিএম

মুসলমানদের জন্য জুমার দিন হচ্ছে সপ্তাহের সর্বোৎকৃষ্ট দিন। হাদিসে এই দিনের বিশেষ আমলের উল্লেখ রয়েছে। তার মধ্যে এক বিশেষ আমল হলো আল্লাহ তাআলার কাছে একাগ্রচিত্তে দোয়া করা। কারণ জুমার দিনে দোয়া কবুলের একটি বিশেষ সময় থাকে।

আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- ‘জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন কোনো মুসলিম নামাজ আদায় করে আল্লাহর কাছে কিছু চায়, আল্লাহ অবশ্যই তার দোয়া কবুল করবেন।’ (সহিহ বুখারি: ৬৪০০)

আরেক হাদিসে এসেছে, ‘সেই সময়টি তোমরা আছরের শেষ সময়ে অনুসন্ধান করো।’ (আবু দাউদ: ১০৪৮)

বিশেষত আছরের নামাজের পর দোয়া করা উত্তম ও কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তাই জুমার দিনে আছর নামাজের পর নিম্নলিখিত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া পড়া বিশেষভাবে সুপারিশ করা হয়।

১. দুনিয়া ও আখেরাতে কল্যাণের দোয়া

আরবি: رَبَّنَا آتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَفِي الْآخِرَةِ حَسَنَةً وَقِنَا عَذَابَ النَّارِ

উচ্চারণ: রাব্বানা আতিনা ফিদ্ দুনইয়া হাসানাহ, ওয়াফিল আখিরাতি হাসানাহ, ওয়াকিনা আজাবান্নার।

অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা! দুনিয়াতে আমাদের কল্যাণ দাও, আখেরাতেও কল্যাণ দাও এবং আমাদেরকে আগুন থেকে রক্ষা করো। (সুরা বাকারা: ২০১)

আরও পড়ুন: দরুদ ও সালামের অবিশ্বাস্য ফজিলত

২. উত্তম জীবনযাপনের দোয়া

আরবি: اَللَّهُمَّ اِنِّى أَسْألُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাল হুদা; ওয়াত তুক্বা; ওয়াল আফাফা; ওয়াল গেনা।

অর্থ: হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছ থেকে হেদায়েত, তাকওয়া (ভয়), সতীত্ব এবং সম্পদ কামনা করি। (মুসলিম: ২৭২১; তিরমিজি: ৩৪৮৯; ইবনে মাজাহ: ৩৮৩২)

৩. মা-বাবাসহ সকল মুমিনের জন্য দোয়া

আরবি: رَبَّنَا اغْفِرْ لِي وَلِوَالِدَيَّ وَلِلْمُؤْمِنِينَ يَوْمَ يَقُومُ الْحِسَابُ

উচ্চারণ: রব্বানাগ-ফিরলি ওয়ালি ওয়ালিদাইয়্যা ওয়ালিল মুমিনিনা ইয়াওমা ইয়াকুমুল হিসাব।

অর্থ: হে আমাদের পালনকর্তা! আমাকে, আমার পিতা-মাতাকে এবং সকল মুমিনদের সেই দিনের জন্য ক্ষমা কর, যেদিন হিসাব নিকাশ হবে। (সুরা ইবরাহিম: ৪১)

আরও পড়ুন: আপনাকে প্রাণবন্ত রাখবে যেসব জিকির

বিশেষ দোয়া দরুদ শরিফ

জুমার দিনের সবচেয়ে বড় আমল হলো নবীজি (স.)-এর উপর দরুদ পাঠ করা। রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন- ‘তোমরা জুমার দিনে আমার ওপর বেশি বেশি দরুদ পাঠ করো, কারণ তোমাদের পাঠানো দরুদ আমার কাছে উপস্থাপিত হয়।’ (আবু দাউদ: ১০৪৭)

আরেক হাদিসে এসেছে- ‘জুমার দিন ও রাতে আমার উপর অধিক পরিমাণ দরুদ পাঠ করো, কারণ যে আমার জন্য একবার দরুদ পাঠ করে, আল্লাহ তার ওপর ১০টি রহমত নাজিল করেন।’ (সহিহুল জামে: ১২০৯)

দরুদ ইব্রাহিম (উচ্চারণ ও অর্থসহ)

আরবি: اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা সাল্লি ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা ‘আলা ইব্রাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম মজিদ।
আল্লাহুম্মা বারিক ‘আলা মুহাম্মাদিন ওয়া ‘আলা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাকতা ‘আলা ইব্রাহীমা ওয়া ‘আলা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামিদুম মজিদ।

অর্থ: হে আল্লাহ! হে প্রভু! হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তার পরিবারে বরকত দাও, যেমন বরকত দিছো হযরত ইব্রাহীম ও তার পরিবারে। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও মহিমান্বিত। হে আল্লাহ! হে প্রভু! হযরত মুহাম্মদ (সা.) ও তার পরিবারে বরকত দাও, যেমন বরকত দিছো হযরত ইব্রাহীম ও তার পরিবারে। নিশ্চয়ই তুমি প্রশংসিত ও মহিমান্বিত।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জুমার দিনের এই গুরুত্বপূর্ণ দোয়া ও দরুদ পড়ার তাওফিক দান করুন, বিশেষ করে দোয়া কবুলের সময়গুলোতে বেশি বেশি ইবাদত ও দোয়া করার হেকমত দান করুন। আমিন।