ধর্ম ডেস্ক
২৭ জুন ২০২৫, ০৩:০৯ পিএম
বর্তমান সময়ে সবচেয়ে প্রচলিত সমস্যাগুলোর একটি হলো মানসিক চাপ বা স্ট্রেস। এটি শুধু মনকে ভারাক্রান্ত করে না, শারীরিকভাবেও দুর্বল করে তোলে। তবে ইসলাম কেবল একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। কোরআনুল কারিম এমন বহু নির্দেশনা দিয়েছে, যেগুলো মানসিক প্রশান্তি ও চাপমুক্ত জীবনের পথ দেখায়।
চলুন দেখে নিই, কোরআনের আলোকে মানসিক চাপ কমানোর ৫টি উপায়।
আল্লাহ তাআলা বলছেন- ‘স্মরণ রেখো, আল্লাহর জিকিরেই অন্তরসমূহ প্রশান্ত হয়।’ (সুরা রাদ: ২৮)
যখন মানুষের অন্তর আল্লাহর স্মরণে মগ্ন হয়, তখন চিন্তা ও উদ্বেগ হালকা হয়ে যায়। প্রতিদিন কিছু সময় নির্জনে বসে আল্লাহর নাম স্মরণ করুন। যেমন সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার— এগুলো শুধু ইবাদত নয়, বরং মানসিক প্রশান্তির উৎস।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তিনিই তার জন্য যথেষ্ট হন।’ (সুরা তালাক: ৩)
দুশ্চিন্তার বড় কারণ হলো — ভবিষ্যতের অজানা ভয়। কিন্তু একজন মুসলমানের উচিত- চেষ্টা করা কিন্তু ফলাফলের দায়িত্ব আল্লাহর ওপর ছেড়ে দেওয়া। এতে মানসিক চাপ অনেকটাই হালকা হয়।
আরও পড়ুন: আদর্শ পরিবার গঠনে কোরআনে বর্ণিত দোয়া
আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন- ‘ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তা কঠিন, কিন্তু বিনয়ীদের জন্য সহজ।’ (সুরা বাকারা: ৪৫)
কঠিন সময় ধৈর্য ধরে চললে ও নামাজে কান্নাভেজা সিজদা দিলে অন্তর হালকা হয়ে যায়। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত আদায় করা মানসিক ভার লাঘবের কার্যকর পন্থা।
আল্লাহ তাআলা বলছেন- ‘তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করে দেন।’ (সুরা যুমার: ৫৩)
মানসিক চাপ অনেক সময় আসে নিজের ভুল ও পাপ নিয়ে হতাশা থেকে। কিন্তু কোরআন জানিয়ে দিয়েছে— যত বড় ভুলই হোক, আল্লাহ ক্ষমাশীল। এই আশা মানুষকে ভারমুক্ত করে।
আরও পড়ুন: মৃত মা-বাবার জন্য কোরআনে বর্ণিত তিন দোয়া
পবিত্র কোরআন বলছে- ‘নিশ্চয়ই কষ্টের সঙ্গে রয়েছে স্বস্তি।’ (সুরা ইনশিরাহ: ৫–৬)
দুইবার একই কথা বলা হয়েছে বোঝাতে যে, প্রতিটি বিপদের পরেই সুখ অপেক্ষা করে। আল্লাহ তাঁর বান্দাকে কখনো চিরস্থায়ী দুঃখে ফেলেন না। এই বিশ্বাস মানসিক চাপের মাঝে আশার প্রদীপ জ্বালায়।
শেষ কথা, মানসিক চাপকে হালকাভাবে নেওয়া ঠিক নয়, তবে একে দূর করার পন্থা আমাদের হাতেই রয়েছে। কোরআনের আলোয় জীবন পরিচালনা করলে অন্তরে প্রশান্তি আসে, উদ্বেগ দূর হয়। তাই আমাদের উচিত — প্রতিদিনের জীবনে এই নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে অন্তরের শান্তি ও মানসিক প্রশান্তি দান করুন। আমিন।