ধর্ম ডেস্ক
৩০ মে ২০২৫, ১২:০৪ পিএম
জিলহজ মাস ইসলামি বর্ষপঞ্জির অন্যতম ফজিলতপূর্ণ মাস। এটি হজ, কোরবানি ও আরাফার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের সময়কাল। পবিত্র কোরআন ও সহিহ হাদিসে এ মাসের ফজিলত সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এ ফজিলতপূর্ণ মাসকে ঘিরে অনেক জাল ও ভিত্তিহীন আমল সমাজে ছড়িয়ে পড়েছে। অথচ ইবাদতের নামে ভিত্তিহীন আমল চালু করা শরিয়তবিরোধী কাজ।
আল্লাহ তাআলা বলেন- وَالْفَجْرِ وَلَيَالٍ عَشْرٍ (সুরা ফজর: ১-২) তাফসিরবিদদের মতে, এখানে দশ রজনী বলতে জিলহজ মাসের প্রথম দশ দিন বোঝানো হয়েছে। (তাফসির ইবনে কাসির: ৪/৪৩৯)
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন- ‘আল্লাহর নিকট নেক আমলের জন্য বছরের এমন কোনো দিন নেই, যা জিলহজের দশ দিনের চেয়ে অধিক প্রিয়।’ (সুনানে আবু দাউদ: ২৪৩৮)
আরাফার দিনের রোজা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আরাফার দিনের রোজা পূর্ববর্তী এক বছর এবং পরবর্তী এক বছরের গুনাহ মাফ করে দেয়।’ (সহিহ মুসলিম: ১১৬২)
আরও পড়ুন: জিলহজের প্রথম ১০ দিনের ফজিলতপূর্ণ ১০ আমল
ইমাম ইবনে কাইয়্যিম (রহ) বলেন, ‘যে হাদিসগুলোতে অতিরঞ্জিত ফজিলত পাওয়া যায়, অথচ সহিহ সূত্র নেই, সেগুলো পরিত্যাগ করাই উচিত।’ (আল-মানারুল মুনিফ) ইমাম নববি (রহ) বলেন, ‘ইবাদতের ব্যাপারে জাল হাদিস গ্রহণ করা হারাম এবং কবিরা গুনাহ।’ (মুকাদ্দিমা, শরহ মুসলিম) আল্লামা আব্দুল হাই লখনবি (রহ.) বলেন, ‘বরকতময় দিনগুলোতে নির্দিষ্ট রাকাত ও পদ্ধতির কোনো নামাজ সহিহ হাদিসে নেই। এসব বানানো।’ (আলআসারুল মারফুআহ, পৃ: ৮)
হাদিস বিশারদ ইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, ‘এই বর্ণনাগুলো যদি জাল না হয়, তবে দুনিয়ায় আর কোনো জাল হাদিস নেই।’ (লিসানুল মিজান: ৭/৪০৫)
শেষ কথা, জিলহজ ও জিলকদ মাস সম্মানিত ঠিকই, তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে জাল ও বানোয়াট বর্ণনার অনুসরণ আত্মার ওপর জুলুম। আল্লাহ তাআলা বলেন- فَلَا تَظْلِمُوْا فِیْهِنَّ أَنْفُسَكُمْ ‘সুতরাং তোমরা এ মাসসমূহে নিজদের উপর কোন জুলুম করো না।’ (সুরা তাওবা: ৩৬)
তাই আসুন, আমরা দলিলভিত্তিক সহিহ আমল করি এবং জাল-বানোয়াট হাদিস থেকে দূরে থাকি। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহিহ দলিলভিত্তিক আমলের তাওফিক দান করুন। আমিন।