ধর্ম ডেস্ক
১৬ মে ২০২৫, ০৫:৩০ পিএম
মানবজীবনে মানসিক প্রশান্তি ও আত্মিক স্থিরতা অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে বলেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহর স্মরণেই অন্তর প্রশান্ত হয়।’ (সুরা রাদ: ২৮) আল্লাহর স্মরণে অন্তর প্রশান্তি লাভ করে এবং মানসিক অস্থিরতা দূর হয়। তাই, দৈনন্দিন জীবনে আমরা ছোট ছোট জিকিরের মাধ্যমে আল্লাহর স্মরণে লিপ্ত থাকতে পারি। নিচে কিছু সংক্ষিপ্ত ও কার্যকরী জিকির উল্লেখ করা হলো।
আরবি: سُبْحَانَ اللَّهِ وَبِحَمْدِهِ، سُبْحَانَ اللَّهِ الْعَظِيمِ অর্থ: ‘আল্লাহ পবিত্র ও মহিমান্বিত; আল্লাহ মহান।’
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘দুইটি বাক্য আছে যা আল্লাহর কাছে অত্যন্ত প্রিয়, বলা সহজ এবং পাল্লায় অনেক ভারী—সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আজিম (বুখারি: ৬৬৮২, মুসলিম: ২৬৯৪)
আরবি: لَا إِلٰهَ إِلَّا أَنتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنتُ مِنَ الظَّالِمِينَ অর্থ: ‘আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই, আপনি পবিত্র; নিশ্চয়ই আমি অত্যাচারীদের অন্তর্ভুক্ত।’
এই দোয়াটি হজরত ইউনুস (আ.) মাছের পেটে অবস্থান করার সময় পড়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা এই দোয়া কবুল করেছিলেন এবং তাঁকে মুক্তি দিয়েছিলেন। (সুরা আম্বিয়া: ৮৭)
আরও পড়ুন: ভাগ্য বদলে দেওয়ার মতো কিছু দোয়া
আরবি: أَسْتَغْفِرُ اللّٰهَ অর্থ: ‘আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আমি প্রতিদিন ৭০ বার কিংবা ১০০ বার আল্লাহর কাছে ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করি।’ (মুসলিম: ২৭০২)
আরবি: سُبْحَانَ الله - اَلْحَمْدُ للهِ - اَلْحَمْدُ للهِ - اَللهُ اَكْبَر অর্থ: আল্লাহ মহাপবিত্র, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, আল্লাহ ব্যাতিত কোন ইলাহ নাই, আল্লাহ মহান।
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয় কালাম চারটি। সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও আল্লাহু আকবার। এগুলোর যেকোনোটি দিয়ে তুমি শুরু করো, তাতে কোনো ক্ষতি নেই।’ (মুসলিম: ৫৪১৬)
আরও পড়ুন: রাতে অতি ফজিলতপূর্ণ তিন জিকির
আরবি: لَا حَوْلَ وَلَا قُوَّةَ إِلَّا بِاللَّهِ অর্থ: ‘আল্লাহর সাহায্য ছাড়া কোনো শক্তি বা ক্ষমতা নেই।’
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘লা হাওলা ওলা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ জান্নাতের ধনভাণ্ডারের একটি গুপ্তধন।’ (বুখারি: ৬৩৮৪)
আরবি: صَلَّى اللّٰهُ عَلَى النَّبِيِّ مُحَمَّدٍ অর্থ: ‘নবী মুহাম্মাদের উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করুন।’
এটি একটি ছোট দরুদ। নবীজির প্রতি হাদিসে বর্ণিত যেকোনো দরুদ পড়া যাবে। দরুদ পড়ার ফজিলত অনেক বেশি। এক কথায়- বেশি বেশি দরুদ পড়লে দোজাহানের সকল মাকসুদ হাসিল হবে। (দ্র: জামে তিরমিজি: ২/৭২; মাজমাউজ জাওয়ায়েদ: ১০/২৪৮; মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৬/৪৫)
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর স্মরণ ও নবীজির প্রতি দরুদ অন্তরকে শান্তি ও প্রশান্তি দেয়। ছোট ছোট এই জিকিরগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করলে মানসিক প্রশান্তি এবং আত্মিক শান্তি লাভ করা সম্ভব। প্রতিদিনের আমলের অংশ হিসেবে এই জিকিরগুলো পাঠ করলে আমাদের হৃদয় প্রশান্ত এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জন হবে ইনশাআল্লাহ।