images

ইসলাম

মুসলিম বাবুর্চি ‘বিসমিল্লাহ’ ছাড়া মুরগি জবাই করলে খাওয়া যাবে?

ধর্ম ডেস্ক

১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:১০ পিএম

হালাল প্রাণীর গোশত খাওয়া জায়েজ হওয়ার শর্ত ‘বিসমিল্লাহ’ বলে জবাই করা। ইচ্ছাকৃত বা অবহেলাবশত ‘বিসমিল্লাহ’ ছেড়ে দিলে ওই প্রাণীর গোশত হারাম হয়ে যায়। অবশ্য কোনো মুসলমান এ সময় বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে গেলে হারাম হবে না। সেক্ষেত্রে এর গোশত খাওয়া জায়েজ হবে।

আবার যদি এমন হয় যে, হাঁস-মুরগী জবাইয়ের সময় যে ব্যক্তি বিসমিল্লাহ বলেনি, কাজটি সে ইচ্ছাকৃতভাবেই করল কি না জানার সুযোগ নেই। এই অবস্থায় ওই প্রাণীর গোশত খাওয়া জায়েজ হবে কি না?

এর উত্তর হলো- শুধু সন্দেহের ওপর ভিত্তি করে মুসলমানের জবাইকৃত প্রাণীর গোশত খাওয়া নাজায়েজ হয়ে যাবে না। এক্ষত্রে ধরে নিতে হবে যে, বিসমিল্লাহ বলেই সে জবাই করেছে।

হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘একদল লোক নবী (স.)-কে বলল, আমাদের নিকট কতক লোক গোশত নিয়ে আসে। আমরা জানি না, সেই পশু জবাইয়ের সময় 'বিসমিল্লাহ' বলা হয়েছিল কি না। (এই গোশত কি আমরা খেতে পারব?) তখন নবী (স.) বললেন, তোমরা নিজেরা বিসমিল্লাহ পড়ে তা খেয়ে নাও। (সহিহ বুখারি: ৫৫০৭)

আরও পড়ুন: অমুসলিম সুপারশপ থেকে মাংস কিনে খাওয়া যাবে?

এই হাদিসের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে আব্দুল বার (রহ) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) তাদেরকে এ কথা বলে এই শিক্ষা দিয়েছেন যে, মুসলমানের ব্যাপারে অযথা সন্দেহ করা যাবে না যে, সে জবাইয়ের সময় ‘বিসমিল্লাহ’ বলা ছেড়ে দিয়েছে; বরং তার ব্যাপারে সুধারণাই রাখতে হবে। এবং বিপরীত কোনোকিছু প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তার কাজ সঠিক পন্থায় হয়েছে বলেই গণ্য করা হবে। (অর্থাৎ সে বিসমিল্লাহ বলে জবাই করেছে— এমনটিই ধরে নেওয়া হবে)। (আলইস্তিযকার: ৪/২৪৯)

তাই সুনিশ্চিত না হয়ে সন্দেহ করা ঠিক নয়। তবে পূর্বেই বলা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে বিসমিল্লাহ বলা ছাড়া জবাইয়ের প্রমাণ পাওয়া গেলে ওই গোশত খাওয়া জায়েজ হবে না। 

উল্লেখ্য, বর্তমানে জবাইয়ের ব্যাপারে অনেকের কাছ থেকে অবহেলা লক্ষ করা যায়। বিশেষত বাজারের মুরগি দোকানি এবং অনুষ্ঠানের বাবুর্চিদের এমন অবহেলা ও অসতর্কতার কথা ব্যাপকভাবে শোনা যায়। এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া দরকার। এক্ষেত্রে দেখেশুনে লোক নিয়োগ দেওয়াই সতর্কতার দাবি। আল্লাহ তাআলা সর্বক্ষেত্রে আমাদের শরিয়তের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। আমিন।

(কিতাবুল আছল: ৫/৩৯৬; আলমুহিতুর রাজাবি: ৬/৪৯; ফাতহুল বারি: ৯/৫৫১; ইলাউস সুনান: ১৭/৭৮; বাজলুল মাজহুদ: ১৩/৭৪)