images

ইসলাম

যে কারণে মুমিনকে নিশ্চিহ্ন করা যায় না

ধর্ম ডেস্ক

২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৩ পিএম

মুমিন ও মুসলিম এ দুটি বিষয় মহান আল্লাহর আশীর্বাদপুষ্ট। দুনিয়ার শত নির্যাতন, দমন-পীড়ন তাদের ধ্বংস করতে পারে না। বরং বিপদ-মসিবত তাদের জেগে ওঠার শক্তি। খলিফায়ে রাশেদ ওমর (রা.) বলেন- نحن قوم أعزنا الله بالإسلام، فإن ابتغينا العزة بغيره أذلنا الله ‘আমরা তো এমন জাতি, যাদেরকে আল্লাহ তাআলা ইসলামের বদৌলতে সম্মানিত করেছেন। আমরা যদি ইসলামভিন্ন কোনো উপায়ে সম্মান কামনা করি তবে আল্লাহ আমাদেরকে লাঞ্ছিত করবেন।’

উম্মত যদি ইসলামকে ধারণ করে, ঈমানের দাবিসমূহের উপর অবিচল থাকে এবং কুফরি বৈশিষ্ট্যসমূহ থেকে বেঁচে থাকে, তাহলে নিঃসন্দেহে এ জাতিই সফল ও বিজয়ী। যদিও সে শত্রুর যাতাকলে পিষ্ট হোক। মূলত মুমিন নিজ আদর্শের ওপর প্রতিষ্ঠিত থাকার কারণে সব অবস্থাতেই সফল এবং মনজিলে মকসূদের দিকে অগ্রসরমান। আল্লাহ তাআলা বলেন- وَلَا تَهِنُوا وَلَا تَحْزَنُوا وَأَنْتُمُ الْأَعْلَوْنَ إِنْ كُنْتُمْ مُؤْمِنِينَ ‘তোমরা হীনবল হয়ো না এবং দুঃখিতও হয়ো না; তোমরাই বিজয়ী যদি তোমরা মুমিন হও।’ (সুরা আলে ইমরান: ১৩৯)

আরও পড়ুন: দৃঢ় ঈমান সফলতার সোপান

রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘মুমিনের অবস্থা বড়ই বিস্ময়কর! তার সবকিছুই কল্যাণকর। আর এটি শুধু মুমিনেরই বৈশিষ্ট্য, অন্যকারো নয়। সুখ-সচ্ছলতায় মুমিন শোকর আদায় করে ফলে তার কল্যাণ হয়। আবার দুঃখ-বিপদের সম্মুখীন হলে ধৈর্য্যধারণ করে। ফলে এটিও তার জন্য কল্যাণকর হয়। (সহিহ মুসলিম: ২৯৯৯; সহিহ ইবনে হিববান: ২৮৬৯)

মুমিনের বিপদ-মসিবত তার ব্যর্থতা নয়; বরং এটি তার মর্যাদা বৃদ্ধির উপলক্ষ। আর যদি এ পথে তার মৃত্যুই হয়, তাহলে তো এটি তার সর্বোচ্চ সফলতা। কারণ ঈমানের বিনিময়ে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে তার যে চুক্তি হয়েছিল সে তা সম্পাদন করল। তার জীবনকে জীবনদাতার কাছেই সোপর্দ করল। আল্লাহ তাআলা বলেন- مِنَ الْمُؤْمِنِينَ رِجَالٌ صَدَقُوا مَا عَاهَدُوا اللَّهَ عَلَيْهِ فَمِنْهُمْ مَنْ قَضَى نَحْبَهُ وَمِنْهُمْ مَنْ يَنْتَظِرُ وَمَا بَدَّلُوا تَبْدِيلًا ‘মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে তাদের কৃত অঙ্গীকার পূর্ণ করেছে, তাদের কেউ কেউ শাহাদাত বরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায় আছে। তারা তাদের অঙ্গীকারে কোনো পরিবর্তন করেনি।’ (সুরা আহজাব: ২৩)

আরও পড়ুন: ঈমান মজবুত করার উপায়

এজন্য মুমিন মুসলমানদের কর্তব্য হলো- নিজের আমল ও পদক্ষেপসমূহ যাচাই করা। এসবের মধ্যে শরিয়ত ও সুন্নাহর খেলাফ কিছু থাকলে তা সংশোধন করা। সম্মিলিত ব্যবস্থাপনাগত বিষয়গুলোতে পরামর্শ, দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা এবং আমিরের আনুগত্যের নীতি দৃঢ়ভাবে ধারণ করা ও নিজের চেষ্টা-প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। তাহলে নিঃসন্দেহে আমরা দুনিয়া ও আখেরাত-উভয় জগতেই সফল ও বিজয়ী হব, বাহ্যিক অবস্থা যতই শোচনীয় ও হতাশাপূর্ণ হোক না কেন।

আমরা দৃঢ় বিশ্বাসের সঙ্গে পড়ব ‘হাসবুনাল্লাহু ওয়ানি’মাল ওয়াকিল’ এবং ‘লা ইলাহা ইল্লা আংতা সুবহানাকা ইন্নি কুংতু মিনাজ জ-লিমিন’। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হিম্মত ও দৃঢ়তা এবং ইত্তিবায়ে সুন্নাহর নিষ্ঠাপূর্ণ প্রেরণা দান করুন। আমিন।