images

ইসলাম

কোরবান পর্যন্ত চুল-নখ না কাটা শুধু কি কোরবানিদাতার আমল?

ধর্ম ডেস্ক

০৬ জুন ২০২৪, ০৮:২৭ পিএম

জিলহজ মাস শুরু হলে কোরবানির দিন পর্যন্ত যাবতীয় ক্ষৌরকর্ম থেকে বিরত থাকা সুন্নত ও মোস্তাহাব আমল। তাই জিলহজ মাস শুরু হওয়ার আগে নখ, চুল, গোঁফ, বোগল-নাভির পশম ইত্যাদি কেটে নেওয়া উচিত। বিশেষ করে যারা কোরবানি করার সংকল্প করেছেন, তাদের উদ্দেশ্যে নবীজি (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তির কাছে কোরবানির পশু আছে, সে যেন জিলহজের নতুন চাঁদ দেখার পর থেকে কোরবানি করা পর্যন্ত তার চুল ও নখ না কাটে।’ (মুসলিম: ৪৯৫৯, আবু দাউদ: ২৭৮২) 

সুতরাং, যারা কোরবানি করবেন তাদের জন্য উত্তম হলো তারা চুল, দাড়ি, গোঁফ এবং নখ কোরবানি হওয়ার আগ পর্যন্ত কাটবেন না। 

যারা কোরবানি করতে সক্ষম নন, তারাও এই আমল পালন করতে পারেন। এতে তারা বিপুল সওয়াব লাভ করবেন। নবী কারিম (স.) বলেছেন, আমাকে কোরবানির দিবসে ঈদ (পালনের) আদেশ করা হয়েছে, যা আল্লাহ এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করেছেন। এক সাহাবি আরজ করলেন, ইয়া রাসুলাল্লাহ! যদি আমার কাছে শুধু একটি মানিহা থাকে (অর্থাৎ অন্যের থেকে নেওয়া দুগ্ধ দানকারী উটনী) আমি কি তা কোরবানি করব? নবী কারিম (স.) বললেন, না, তবে তুমি চুল, নখ ও মোঁচ কাটবে এবং নাভির নিচের পশম পরিষ্কার করবে। এটাই আল্লাহর দরবারে তোমার পূর্ণ কোরবানি বলে গণ্য হবে। (সুনানে আবু দাউদ: ২৭৮৯; সুনানে নাসায়ি: ৪৩৬৫)

আরও পড়ুন
পশুর চামড়া খাওয়া কি জায়েজ? 
ভুঁড়ি খাওয়া কি জায়েজ?

ওলিদ বিন মুসলিম বলেন, আমি মুহাম্মাদ বিন আজলানকে জিলহজের দশকে চুল কাটা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, তখন তিনি বললেন, আমাকে নাফে (রহ) বলেছেন- আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) এক মহিলার নিকট দিয়ে অতিক্রম করছিলেন। মহিলাটি জিলহজের দশকের ভেতর তার সন্তানের চুল কেটে দিচ্ছিল। তখন তিনি বললেন, যদি ঈদের দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে তবে বড় ভালো হত। (মুস্তাদরাকে হাকেম: ৭৫২০)

মুতামির ইবনে সুলাইমান আততাইমি বলেন, আমি আমার পিতাকে বলতে শুনেছি, ইবনে সিরিন (রহ) জিলহজের দশকে চুল কাটা অপছন্দ করতেন। এমনকি এই দশকে ছোট বাচ্চাদের মাথা মুণ্ডন করাকেও অপছন্দ করতেন। (আল মুহাল্লা, ইবনে হাজম: ৬/২৮)

এসব বর্ণনা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, যারা কোরবানি করবেন না, তারাও সওয়াবের আশায় কোরবানির পশু জবাই না হওয়া পর্যন্ত চুল, নখ, পশম কাটা ইত্যাদি কাজ থেকে বিরত থাকবেন।

তবে, তাদেরকে এই কাজে নিষেধ করা হয়নি। এ প্রসঙ্গে শাইখ বিন বায (রহ) বলেন, আলেমগণের বিশুদ্ধ মতানুযায়ী, ‘তারা চুল কাটা ও নখ কাটার নিষেধাজ্ঞার আওতায় নেই। হুকুমটি কোরবানিকারীর জন্য খাস, যিনি তার সম্পদ থেকে কোরবানির পশুটি ক্রয় করেছেন।’ (ফতোয়ায়ে ইসলামিয়্যা: ২/৩১৬)