images

ইসলাম

যে কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ জান্নাতে যাবে

ধর্ম ডেস্ক

১০ মে ২০২৪, ০৫:২৪ পিএম

images

জান্নাত কিংবা জাহান্নাম মানুষের চূড়ান্ত গন্তব্যস্থল। ইসলামি বিশ্বাসমতে, মানুষ মৃত্যুর পর অন্তহীন পরকালীন জীবনে প্রবেশ করবে। সেখানে মানুষের দুনিয়ার জীবনের ঈমান-আমলের হিসাবের পর কেউ জান্নাতে যাবে, কেউ যাবে জাহান্নামে। মুমিনের আকাঙ্ক্ষিত ঠিকানা হলো জান্নাত। জান্নাতের নেয়ামত প্রসঙ্গে এক হাদিসে রাসুল (স.) বলেন, ‘মহান আল্লাহ বলেছেন, আমি আমার নেককার বান্দাদের জন্য এমন জিনিস তৈরি করে রেখেছি, যা কোনো চক্ষু দেখেনি, কোনো কান শোনেনি এবং যার সম্পর্কে কোনো মানুষের মনে ধারণাও জন্মেনি। তোমরা চাইলে এ আয়াতটি পাঠ করতে পারো, ‘কেউ জানে না, তাদের জন্য তাদের চোখ শীতলকারী কী জিনিস লুকানো আছে।’ (সুরা সাজদাহ: ১৩; বুখারি: ৩২৪৪)

যে আমলের কারণে সবচেয়ে বেশি মানুষ জান্নাতে প্রবেশ করবে তা হলো- তাকওয়া ও উত্তম চরিত্র। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.)-কে প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আল্লাহভীতি (তাকওয়া) ও উত্তম চরিত্র।’ আবার তাঁকে প্রশ্ন করা হলো, কোন কাজটি সবচেয়ে বেশি পরিমাণ মানুষকে জাহান্নামে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘মুখ ও লজ্জাস্থান।’ (তিরমিজি: ২০০৪)

আরও পড়ুন: জান্নাতের সুখ শান্তি

উল্লেখিত হাদিসে প্রিয়নবী (স.) জান্নাতে যাওয়ার এমন দুটি বিষয়ের কথা জানিয়েছেন, যা অধিক পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। কিন্তু এ দুটি বিষয়ের এত মাহাত্ম্য কেন? আসুন জেনে নিই তাকওয়া ও উত্তম চরিত্র কেন আল্লাহর কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ।

১. তাকওয়া বা আল্লাহভীতি
তাকওয়া বা আল্লাহভীতি হচ্ছে সব ভালো কাজের উৎস। তাকওয়ার কারণে খারাপ কাজ থেকে দূরে থাকেন মানুষ এবং ভালো কাজের মাধ্যমে আল্লাহর আজাব থেকে বেঁচে থাকেন মুত্তাকিরা। একারণেই আগের ও পরের সব উম্মতকে তাকওয়া অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর নিশ্চয়ই আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম তোমাদের আগে যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদের এবং তোমাদেরও; যেন তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো।’ (সুরা নিসা: ১৩১)

ইখলাসপূর্ণ ইবাদত, রোজা, কোরআন শিক্ষা, আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা, সুবিচার (ইনসাফ) ও নবীপ্রেম তাকওয়া অর্জনের মৌলিক উপায়।

আরও পড়ুন: ‘ন্যায়বিচার’ আল্লাহর মহান গুণ

২. উত্তম চরিত্র
অধিক পরিমাণ জান্নাতে যাওয়ার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো উত্তম চরিত্র। আমাদের নবীজি (স.) ছিলেন সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।’ (সুরা কালাম: ০৪)
ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, মহৎ চরিত্রের অর্থ মহৎ দ্বীন। কেননা আল্লাহ তাআলার কাছে ইসলামের চেয়ে বেশি প্রিয় কোনো দ্বীন নেই। আয়শা (রা.) বলেন, স্বয়ং কোরআন রাসুলুল্লাহ (স.)-এর চরিত্র। অর্থাৎ পবিত্র কোরআন যেসব উত্তম কর্ম ও চরিত্র শিক্ষা দেয়, তিনি সেসবের বাস্তব নমুনা। উত্তম চরিত্র গঠনের মৌলিক উপায়গুলো হলো- ক্ষমাশীলতা, সত্যবাদিতা, আমানতদারিতা, বিনয় ও নম্রতা, পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা, অঙ্গীকার পূরণ করা, প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহার, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা, লজ্জা, ন্যায়পরায়ণতা ও দয়া।