ধর্ম ডেস্ক
০৯ মে ২০২৪, ০৩:২৩ পিএম
হজের সফর সাধারণ কোনো সফর নয়। দেশভ্রমণের মতো কোনো ভ্রমণ নয়। শারীরিক কষ্ট ও অর্থব্যয় করে শুধু মক্কা-মদিনা দেখা নয়। হজ মহিমান্বিত ও পবিত্র সফর। তাকওয়া, ইখলাস ও সুন্নতে নববী নিয়ে আল্লাহর সান্নিধ্য অর্জনের এক রব্বানি সফর; নূরানি ও ঈমানি সফর। তাই হজ যেনতেন আমল নয়। হজ কবুল হলে মানুষ নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মাবরুর হজের বিনিময় হলো জান্নাত। মাবরুর হজ বলতে হজের কাজ ও বিধি-বিধানগুলো যথাযথা আদায় করাকে বুঝায়। (বুখারি: ১৭৭৩; মুসলিম: ১৩৪৯; আহমদ: ৭৩৫৪; সহিহ ইবনে হিববান: ৩৬৯৫)
হজের সফরে কেউ ত্যাগ ও মুজাহাদার বিনিময়ে নিজের হজকে আল্লাহর ইচ্ছায় মাবরুর হজে পরিণত করবেন এবং সদ্য ভূমিষ্ঠ সন্তানের মতো একটি সুন্দর ও পবিত্র জীবন নিয়ে ফিরে আসবেন আপন দেশে। আর কেউ সময় নষ্ট করে পবিত্র সফরকে বরবাদ করবেন। আল্লাহর কাছে তার পুরস্কার থাক বা না-থাক, দেশের মানুষ হাজিসাহেব বলবে, হয়ত এটাই তার পুরস্কার। আপনি কোনটি চান? যদি আপনি নিজের হজকে মাবরুর হজে পরিণত করতে চান, তাহলে নিচের বিষয়গুলোর ব্যাপারে অবশ্যই সচেতন হবেন।
১. আল্লাহর সন্তুষ্টির নিয়ত
আল্লাহ তাআলার আনুগত্য, সন্তুষ্টি, নৈকট্য ও তাঁর নির্দেশ পালনার্থে কোনো কাজ করার দৃঢ় সংকল্পকে নিয়ত বলে। ইবাদতে নিয়তের তাৎপর্য হলো ইবাদতে হৃদয়কে হাজির রাখা, আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশা করা, ইবাদত কবুল হওয়ার প্রত্যাশা করা, সব কাজ আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করা। নবী (স.)-এর বাণী- ‘প্রত্যেক কাজের ফলাফল নিয়ত অনুসারে হয়। প্রত্যেক মানুষ তার কাজের ফলাফল আল্লাহর কাছে তদ্রূপ পাবে, যেরূপ সে নিয়ত করেছে।’ (বুখারি : ১)
হজের ক্ষেত্রে বিষয়টি আরো অধিক গুরুত্ব বহন করে। সেজন্য রাসুলুল্লাহ (স.) হজের সময় বারবার বলতেন- اللهم هذه حجة لا رياء ولا سمعة ‘হে আল্লাহ! এই হজকে এমন হজ হিসেবে কবুল করুন যাতে প্রদর্শন ও খ্যাতির ইচ্ছা নেই।’ তাই এখন থেকেই নিয়তকে পরিশুদ্ধ করুন। লোক দেখানো বা শোনানোর ইচ্ছে থাকলে, প্রদর্শন বা খ্যাতির নিয়ত থাকলে তা এখনই মন থেকে ঝেড়ে ফেলুন। হজসহ সকল ইবাদত একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করুন। এছাড়া আল্লাহ তাআলা কারো ইবাদত কবুল করবেন না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘কাজেই আল্লাহর ইবাদত কর তাঁর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে।’ (সুরা জুমার: ২)
২. ইখলাস
শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় যাবতীয় কাজ সম্পাদনের নামই ইখলাস। আল্লাহর সন্তুষ্টি ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যর সামান্যতম সংমিশ্রণ থাকলে সে ইবাদত আল্লাহ কবুল করবেন না। তাই মুসলমানের সব কাজ ইখলাসের সঙ্গে করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তাদের এ ছাড়া আর কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়নি যে তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদত করবে।’ (সুরা বাইয়িনাহ: ৫)
ইখলাস হলো আমল ও ইবাদতের প্রাণ। এর সম্পর্ক অন্তরের সঙ্গে। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, মহানবী (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহ পাক তোমাদের শরীর ও অবয়বের দিকে তাকান না; বরং তিনি তোমাদের অন্তর ও আমলের দিকে লক্ষ করেন।’ (মুসলিম: ২৫৬৪)
আরও পড়ুন: হজের সফরে যেসব জিনিসপত্র সংগ্রহে রাখবেন
৩. নবীজির দেখানো পদ্ধতি
যেকোনো ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য অবশ্যই নবীজির তরিকা অনুযায়ী হতে হবে। অন্যথায় ইবাদত কবুল হবে না। আল্লাহর রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এমন কোনো আমল করল, যাতে আমার নির্দেশ (সুন্নাহ) নেই, তবে তা প্রত্যাখ্যাত।’ (মুসলিম : ১৭১৮) যদি কোনো ইবাদত নবীজির শেখানো ও আচরিত পদ্ধতিতে পালিত না হয়, তাহলে যত ইখলাস ও আন্তরিকতা-ই থাক না কেন, তা আল্লাহর দরবারে কবুল হবে না বা তার কোনো সওয়াব মিলবে না। এ কারণেই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘আর রাসুল তোমাদেরকে যা দেন তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করেন তা থেকে বিরত থাকো।’ (সুরা হাশর: ৭)
৪. হজের বিধান ও নিয়ম-কানুন জেনে নেওয়া
অবশ্যই হজের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা রাখা জরুরি। হজ সফরে কোথায় কখন কী আমল করতে হয়, কোন আমল করা ফরজ, কোন আমল ওয়াজিব, কোন আমল সুন্নত ইত্যাদি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। আপনার হজ যেন কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী হয়, রাসুলের হজের মতো হয়, আকাবির ও আসলাফের হজের মতো হয়। হজ কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী না হলে কবুলের আশা করা যায় না। আপনার মুআল্লিম আছেন ঠিক, কিন্তু সময় ও প্রয়োজনীয় স্থানে আপনি মুআল্লিমকে না-ও পেতে পারেন। অথবা লক্ষ লক্ষ মানুষের ভিড়ে তাকে হারিয়ে ফেলতে পারেন। কিন্তু হজ হচ্ছে সময় ও স্থান নির্ভর একটি ইবাদত। সময় চলে গেলে অথবা সঠিক স্থানে না পৌঁছালে আপনার হজ হবে না। এত বড় অংকের অর্থ ব্যয় করে এবং এত কষ্ট সহ্য করেও সঠিক পন্থায় হজ করা থেকে বঞ্চিত হবেন, এটা হতে পারে না। তাই আপনি হজ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান ও যথাযথ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করুন। সংশ্লিষ্ট মাসয়ালা ও হুকুম-আহকাম জেনে নিন।
৫. নির্দিষ্ট দোয়াগুলো মুখস্থ করুন
হজের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই রয়েছে নির্দিষ্ট দোয়া। তাওয়াফে, সাঈতে, আরাফায়। তাই কখন কোন দোয়া কীভাবে পড়তে হবে তা এখনই জেনে নিন। সময় নিয়ে তা ভালোভাবে মুখস্থ করুন। এ বিষয়ে নির্ভরযোগ্য আলেমদের লিখিত বই সংগ্রহ করুন। প্রয়োজনে নিকটস্থ আলেমের সহযোগিতা গ্রহণ করুন। তবে এ ধরনের দোয়ার সংখ্যা খুব বেশি নয়। সুতরাং ঘাবড়ানোরও কিছু নেই। অল্প কিছু ছোট ছোট দোয়াই তো আপনাকে মুখস্থ করতে হবে, এটা কঠিন কোনো বিষয় নয়। একটু চেষ্টা করলেই আপনি পারবেন। আর সাধারণ দোয়া তো নিজ ভাষায়ই করা যায়।
আরও পড়ুন: আরাফার দিন যে দোয়া পড়তে ভুলবেন না
৬. ফরজ-ওয়াজিবের পাশাপাশি সুন্নতগুলো গুরুত্ব দিয়ে সম্পাদন করুন
হজের সফরে প্রতিটি সুন্নতের ব্যাপারে গুরুত্ব দিন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনি চেষ্টা করুন যেন আপনার হজ রাসুল (স.)-এর হজের মতো হয়। সকল স্থানে সকল ক্ষেত্রে সুন্নতের অনুসরণের মাধ্যমেই আপনার হজ হতে পারে ‘হজ্জে মাবরুর’, যে হজ্বের প্রতিদান একমাত্র জান্নাত। এক্ষেত্রে একটি বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। জিলহজ মাসের ১১ ও ১২ তারিখে মিনায় মাবীত বা অবস্থান করা সকল মাজহাবেই ওয়াজিব। শুধু হানাফি মাজহাবমতে তা সুন্নত। কিন্তু সুন্নত বলে তা অবহেলার নয়। দেশে থাকাকালীন আমরা কতশত সুন্নত পালনে চেষ্টা করি, অন্যকে উদ্বুদ্ধও করি। আবার কখনও কখনও অধীনস্থদের উপর চাপও প্রয়োগ করি। কিন্তু হজে এসে এই গুরুত্বপূর্ণ আমলটিকে ‘এটি তো কেবল সুন্নত’ এ কথা বলে অনেকেই ত্যাগ করি। অবাক হতে হয়, যখন কোনো আলেম এ কাজটি পরিত্যাগ করেন। যাকে দেখে সাধারণ মানুষও এ আমলটিকে অবহেলা করতে শুরু করেন। একবারও কি ভেবে দেখেছি যে নবীজি এ দিনগুলোতে কী করেছেন? রাসুল (স.) কি মাবীত ছেড়ে দিয়ে চলে গিয়েছেন? আমাদের পূর্বসূরিগণ কি এ দিনগুলোতে মিসফালা বা হারাম চত্বরে এসে গল্পে মেতেছেন? হানাফি আলেমগণ সুন্নত বললেও তাঁরা কি অবহেলা করার জন্যই সুন্নত বলেছেন? তাদের মতে এটি সাধারণ সুন্নত নয়, বরং সুন্নতে মুআক্কাদা। তাদের স্পষ্ট বক্তব্য হলো- فإن تركه أساء ‘যদি বিনা ওজরে মাবীত ছেড়ে দেয় তাহলে মন্দ কাজ করলো’। আর আমরা সকলেই এ কথা স্বীকার করবো যে, কোনো মন্দ কাজ করার জন্য এত অর্থ ও কষ্ট করে হজে আসিনি। অন্যদিকে হজের সফরে তো সুন্নত আদায়ে আরো বেশী আগ্রহী হওয়া দরকার। অতএব, সকল সুন্নত যথাযথ পালন করা চাই।
৭. ছবি তোলা থেকে বিরত থাকুন
হজের সফরে গিয়ে ছবি তোলা এখন মহামারির রূপ ধারণ করেছে। প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রেও যেখানে ওলামায়ে কেরাম ছবি তোলার ব্যাপারে দ্বিমত করেন, সেখানে আজ অপ্রয়োজনে, অকারণে সকলেই ছবি তোলায় ব্যস্ত। ইহরামের কাপড় পরিধান থেকে শেষ পর্যন্ত ছবি তুলেই যাচ্ছে। অথচ একবারও ভাবছে না এতে আমার হজের কোনো ক্ষতি হচ্ছে কি না? মক্কা-মদিনার ওলামায়ে কেরাম এ ব্যাপারে সতর্ক করেই যাচ্ছেন। মক্কার খতিব কতবার খুতবার মাঝেই ধমক দিয়েছেন এবং ছবি তুলতে সরাসরি নিষেধ করেছেন, তার হিসেব নেই। আরবের প্রখ্যাত মুফতি শায়খ ছালেহ আল ফাওযান (হাফি) বলেছেন, ‘হজের সফরে অযথা ছবি তুললে হজ কবুল না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ এতে রিয়া বা প্রদর্শনেচ্ছা থাকে। যা ইবাদত কবুল হওয়া থেকে বিরত রাখে।’ এসব কথার পরও মানুষ ছবি তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। মাবরুর হজের ক্ষেত্রে এটি খুব বড় বাধা। অতএব ইখলাসের দিকে লক্ষ্য রেখে, হজের পবিত্রতার দিকে খেয়াল করে ছবি তোলা থেকে এবং এ কাজে অন্যকে সহযোগিতা করা থেকে বিরত থাকুন।
আরও পড়ুন: সেলফি প্রবণতা হজের উদ্দেশ্যের পরিপন্থী
৮. হারামের অভ্যন্তরে সামনের কাতারে নামাজে আদায়ের চেষ্টা করুন
হজের সফরে এসে হারামাইন শরিফাইনে নামাজ আদায় করার একটি সুযোগ পাওয়া যায়। এই সুযোগটিকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে কাজে লাগানো উচিত। পবিত্র ও মহিমান্বিত এই সফরে সামনের কাতারে নামাজ আদায়ের অভ্যাস গড়ারও একটি সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে আমাদের দেশীয় অনেক হাজিসাহেবকেই হারামের বাইরে সাহাতে বা বারান্দায় নামাজ আদায় করতে দেখা যায়। অথচ ভেতরের কাতার এখনো অনেক ফাঁকা। আপনি বাইরে বসে না থেকে হারামের ভেতরে চলে যান। সামনের কাতারে নামাজ আদায় করার সওয়াব হাসিল করুন। যে সওয়াবের ব্যাপারে রাসুল (স.) বলেছেন, ‘যদি লোকেরা প্রথম কাতার ও আজানের ফজিলত কী তা জানতো, আর তা লটারি ছাড়া লাভ করা সম্ভব না হত, তবে তারা লটারির মাধ্যমে হলেও তা লাভ করার চেষ্টা করত।’ (সহিহ বুখারি: ৪৩৭)
৯. যেকোনো গুনাহ থেকে বিরত থাকুন
হজ যেন আল্লাহর কাছে কবুল হয় সেজন্য আল্লাহর নিষেধকৃত বিষয়গুলো থেকে বিরত থাকা চাই। গুনাহের মধ্যে রয়েছে পাপাচার, অবাধ্যতা, হারাম কথা, হারাম কাজ, বাদ্য শুনা ইত্যাদি। এক কথায় ইহরাম অবস্থায় যা কিছু শরিয়ত নিষিদ্ধ করেছে, সেসব থেকে বেঁচে থাকা। আল্লাহর বাণী- ‘হজের নির্দিষ্ট কয়েকটি মাস আছে। যে ব্যক্তি সেসব মাসে নিজের উপর হজ অবধারিত করে নেয় সে হজের সময় কোনো যৌনাচার করবে না, কোনো গুনাহ করবে না এবং ঝগড়া করবে না। (সুরা বাকারা: ১৯৭) রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনোরূপ অশ্লীল কথা বা গুনাহর কাজে লিপ্ত না হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে হজ সম্পন্ন করে, সে সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরে আসে।’ (বুখারি: ১৫২১)
১০. কোমল ও সদাচারী হোন
হাজি সাহেবের উচিত- কোমল, সহজপ্রাণ ও উদার হওয়া। যতটুকু সম্ভব সহযাত্রীদের সাথে ভালো ব্যবহার করা। কোনো মুসলমানকে কষ্ট দেওয়া থেকে বিরত থাকা তার উপর ফরজ। তা পবিত্র স্থানগুলোতে হোক কিংবা বাজারে হোক। হাজি সাহেব তাওয়াফকালে ভিড় করে কাউকে কষ্ট দেবেন না। সাঈকালে কাউকে কষ্ট দিবেন না। জমরাতে কাউকে কষ্ট দিবেন না। অন্যকোনো স্থানেও কষ্ট দিবেন না। মকবুল হজের জন্য এ বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে আমল করা বাঞ্ছনীয়।
আরও পড়ুন: মুমিনের মুখের ভাষা কেমন হওয়া উচিত
১১. শপিংয়ের জন্য বেশি সময় নয়
অনেক হাজি অবস্থা দেখে মনে হয় তারা মূলত কেনাকাটা করতেই মক্কা মদিনায় এসেছেন। কেনাকাটা আপনাকে করতে হবে। তবে লক্ষ রাখবেন শপিং করা, শপিংমলে যাওয়া আর কেনাকাটার জন্যই আপনি মক্কা-মদিনায় আসেননি। অতএব, আমলে মনোনিবেশ করুন বেশি। কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, মক্কায় থাকাকালীন অধিক পরিমাণে তাওয়াফ, মদিনায় নফল নামাজ, দরুদ শরিফ পাঠ করে সময়কে কাজে লাগাতে পারেন। কিন্তু ‘আল মোল মাজ্জানান’ বা ফ্রী শপিংমলে যাওয়ার সুযোগ পেয়ে আপনার সময়টা যেন সেখানেই শেষ না হয়ে যায়। মক্কা-মদিনার সফর ঈমানকে তাজা করার সফর। আত্মা ও নফসকে পরিশুদ্ধ করার সফর। হৃদয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের ভালোবাসা বাড়ানোর সফর।
১২. আমল কবুল ও দ্বীনের পথে অবিচল থাকার দোয়া করুন
হজের সকল কার্যক্রম আপনি শেষ করেছেন। এরপর আমল কবুলের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন। দ্বীনের পথে অবিচল থাকার দোয়া করুন। হজ্জে মাবরুরের পর মানুষ পূতপবিত্র হয়ে যায়। এরপর জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। এ অবস্থায় দ্বীনের উপর অবিচল থাকার প্রতিজ্ঞা করুন। হজের আগের অবস্থা থেকে পরের অবস্থা যেন সুন্দর হয় সে চেষ্টা করুন। হজ-পরবর্তী জীবনে দ্বীনের উপর চলার জন্য আলেমদের সোহবত গ্রহণ করুন। যেকোনো কাজে দ্বীনি পরামর্শ গ্রহণ করুন।
এখানে ব্যতিক্রম কিছু আমল দেখে ভাববেন না যে, দেশে যা করেছিলেন তা ভুল ছিল। এসব বিষয়ে বুঝার জন্য আলেমদের মতামত গ্রহণ করুন। বিষয়গুলো নিয়ে কখনও বাড়াবাড়ি করবেন না। এতে ফেতনা তৈরি হবে। নবীর ভালবাসা, সুন্নতের প্রতি আগ্রহ এবং পরবর্তী জীবনটা আল্লাহর পথে, আলোর পথে এবং হেদায়েতের পথে অবিচল থাকার সংকল্প নিন। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে তাওফিক দান করুন। আমিন।