ধর্ম ডেস্ক
১১ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২২ এএম
মুমিন জীবনে তাকবির ধ্বনি তথা ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনির চেয়ে বড় কোনো ধ্বনি নেই। এর অর্থ—আল্লাহ মহান। ঈদের দিনে তাকবির ধ্বনির মাধ্যমে আল্লাহর বড়ত্ব, মহত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা হয়। শক্তি-সামর্থ-সম্মান সবদিক থেকে আল্লাহ মহান—তাকবির সে অর্থেরই প্রতীক।
তাকবির এভাবে বলতে পারেন—اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ উচ্চারণ: ‘আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ।’ অর্থ: ‘আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। আল্লাহ ছাড়া সত্য কোনো উপাস্য নেই। আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ্র জন্য।’
পবিত্র রমজান শেষে ঈদুল ফিতর উদযাপনের পুরো প্রক্রিয়াটিই ‘আল্লাহু আকবর’-এর মর্মবাণীকে তুলে ধরে। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে রোজার কল্যাণকর নির্দেশ এবং বান্দাকে সেই নির্দেশ পালন করার তাওফিক দেওয়ার কারণে মহান আল্লাহর শুকরিয়া এবং তাঁর মহত্ব বর্ণনা করা ঈদুল ফিতরের তাৎপর্য। রোজার বিধান যেমন আল্লাহ তাআলা দিয়েছেন, তেমনি এর ওপর শুকরিয়া আদায়ের শিক্ষাও তিনিই দিয়েছেন। বান্দার সমগ্র সত্ত্বাজুড়ে আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্বের ঘোষণা ও বহিঃপ্রকাশ বান্দাকে পূর্ণ শোকরগুজার বান্দায় পরিণত করে, ঈমানের নূরে আলোকিত হয় তাঁর ঈদ উদযাপন।
আরও পড়ুন: ঈদের দিনের যে আমলে গুনাহ ঝরে যায়
এজন্য অন্তর থেকে আল্লাহর বড়ত্ব স্বীকার করার পাশাপাশি মৌখিকভাবেও ‘আল্লাহু আকবর’ বলা ঈদের দিনের একটি উত্তম জিকির। জমহুর আলেমের নিকট এই তাকবির দেওয়া সুন্নত। এটি নর-নারী উভয়ের জন্য সুন্নত; মসজিদসমূহে, বাড়ি-ঘরে এবং হাটে-বাজারে। সাহাবায়ে কেরাম ও সলফে সালেহিন ঈদের রাতে ও সকালে তাকবির পাঠ করতেন। ঈদগাহে যাওয়ার সময়ও নিচুস্বরে তাকবির বলতেন।
ঈদের নামাজের অতিরিক্ত তাকবির এবং খুতবার তাকবিরগুলো ঈদুল ফিতরের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। এই বিধানগুলোর মধ্য দিয়ে মূলত জগতের সকল মিথ্যা বড়ত্বের দাবিদারকে পরিত্যাগ করা হয়। স্বীকার করে নেওয়া হয় লা-শরীক আল্লাহর বড়ত্বকে। আর এটিই মু’মিনের ঈমানের বহিপ্রকাশ। আর তাকবির দেওয়া শেষ হবে ঈদের নামাজ আদায়ের মাধ্যমে। অর্থাৎ মানুষ যখন ঈদের নামায শুরু করবে তখন তাকবির দেওয়ার সময় শেষ। (মাজমুউ ফতোয়া ইবনে উছাইমিন: ১৬/২৬৯-২৭২)
আরও পড়ুন: ঈদ মোবারক বলা কি বিদআত?
ইসলামকে বাদ দিয়ে মানুষ যেসব মত ও ব্যবস্থা তৈরি করে নিয়েছে, যে সংস্কৃতিকে কুর্ণিশ করছে আর অর্থ-সম্পদ, প্রবৃত্তি ইত্যাদি দুনিয়াবি ছলনাকে উপাস্য হিসেবে গ্রহণ করেছে-সকল মিথ্যার প্রতি অস্বীকৃতি জানিয়ে আল্লাহর বড়ত্ব ও কর্তৃত্বে প্রত্যাবর্তন করা এবং কর্ম, চিন্তা ও চেতনায় আল্লাহর আনুগত্য মেনে নেওয়াই হলো এই দ্বীনের দাবী ও মর্মবাণী।
তাই ঈদের দিনে ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনির প্রেরণায় উজ্জীবিত হওয়া, এক আল্লাহর আনুগত্যে সমর্পিত হওয়া মুমিন মুসলমানের জন্য বাঞ্ছনীয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ঈদুল ফিতরে তাকবির ধ্বনি মননে-মগজে ও জিহ্বায় জারি রাখার তাওফিক দান করুন। আমিন।