images

ইসলাম

নবীজি চুলের যত্ন নিতেন যেভাবে

ধর্ম ডেস্ক

৩১ জানুয়ারি ২০২৪, ০২:১৬ পিএম

রাসুলুল্লাহ (স.) অত্যন্ত রুচিসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। তিনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে পছন্দ করতেন। চুলের পরিচর্যায়ও যত্নশীল ছিলেন। তবে এর পেছনে বেশি সময় নষ্ট করতেন না।

নবীজির চুলের ধরণ
প্রিয়নবী (স.)-এর চুলের ধরণ খুব সুন্দর ছিল। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, একেবারে সোজাও না, আবার অধিক কোঁকড়ানোও না। দুই কানের মধ্যভাগ পর্যন্ত লম্বা ছিল তাঁর চুল। (শামায়েলে তিরমিজি: ১৯, ২২)

নবীজির চুলের যত্ন
মাথায় তেল দিতেন: আনাস বিন মালিক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) মাথায় অধিক পরিমাণে তেল দিতেন, দাড়ি বিন্যস্ত করতেন এবং বেশির ভাগ সময় মাথায় কাপড় বাঁধতেন। তাঁর কাপড় ছিল তেল ব্যবসায়ীর কাপড়ের মতো। (শামায়েলে তিরমিজি: ৩৩)

ডান দিকে সিঁথি করতেন: আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) অজু করতে, জুতা পরতে এবং চুল আঁচড়াতে যথাসম্ভব ডান দিক থেকে করা পছন্দ করতেন। (সুনানে নাসায়ি: ৫২৪১) অন্য হাদিসে এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, আমি যখন রাসুলুল্লাহ (স.)-এর মাথায় সিঁথি কাটার ইচ্ছা করতাম, তখন আমি তাঁর চুলকে দুই ভাগে বিভক্ত করতাম এবং কপালের চুলকে নাক বরাবর তাঁর চোখের দু’দিকে ঝুলিয়ে দিতাম। (আবু দাউদ: ৪১৪১)

আরও পড়ুন: নবীজির প্রিয় ৩ সুগন্ধি

চুলের পরিপাটি পছন্দ করতেন: আতা ইবনে ইয়াসার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) মসজিদে ছিলেন। তখন এক ব্যক্তি এলোমেলো চুল ও দাড়ি নিয়ে প্রবেশ করল। রাসুলুল্লাহ (স.) তাকে বের করে দিতে ইশারা করলেন। যেন তিনি তাকে দাড়ি ও চুল ঠিক করার নির্দেশ দিলেন। লোকটি তা-ই করল এবং ফিরে এলো। তখন রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, শয়তানের মতো এলোমেলো চুল নিয়ে আসার চেয়ে এটাই কি উত্তম নয়? (মুয়াত্তায়ে মালিক: ১৪৯৪)

আরও পড়ুন: নবীজির প্রিয় রঙ

পরিচর্যার পেছনে বেশি সময় নষ্ট করতেন না: নিজের পরিচর্যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা নিজের মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়। সুতরাং পুরুষ পরিচর্যার পেছনে দীর্ঘ সময় ব্যয় করবে না। আবদুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) সব সময় চুল আঁচড়াতে নিষেধ করেছেন, তবে একদিন পরপর (আঁচড়ালে দোষ নেই)। (সুনানে আবি দাউদ: ৪১৫৯) ইমাম আহমদ (রহ.) হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেছেন, রাসুলুল্লাহ (স.) একদিন পরপর চুলে তেল দিতেন। (আল-মুগনি: ১/৬৭)
ইমাম শাওকানি (রহ.) বলেন, হাদিসটি প্রমাণ করে প্রত্যহ চুল পরিচর্যায় ব্যস্ত হওয়া অপছন্দনীয়। কেননা তা একপ্রকার সাজসজ্জায় ব্যস্ত হওয়া। আর রাসুলুল্লাহ (স.) অধিক পরিমাণ সাজসজ্জা থেকে নিষেধ করেছেন। (সুনানে আবি দাউদ: ৪১৬০; নায়লুল আওতার: ১/১৫৯)

আরও পড়ুন: নবীজির প্রিয় খাবার

প্রয়োজন হলে বেশি সময় দেওয়া যাবে: মহানবী (স.) পুরুষদের চুলের পরিচর্যায় প্রতিদিন সময় ব্যয় করতে নিষেধ করেছেন। কিন্তু প্রয়োজন হলে তা করারও অনুমতি দিয়েছেন। আবু কাতাদা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তাঁর মাথায় অধিক চুল ছিল। তিনি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, চুল বিন্যস্ত রাখবে এবং প্রতিদিন চিরুনি করবে। (সুনানে নাসায়ি: ৫২৪০)

অতএব চুলের পরিচর্যায় যত্নশীল হওয়া নিঃসন্দেহে একটি ভালো কাজ। প্রিয়নবী (স.) চুলের যত্ন নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করে বলেছেন, যার চুল আছে সে যেন চুলের যত্ন নেয়। (সুনানে আবি দাউদ: ৩৬৩২) আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে চুলের সঠিক পরিচর্যা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।