ধর্ম ডেস্ক
০৮ জানুয়ারি ২০২৪, ০৬:২৬ পিএম
বিচার-ফায়সালা ও যেকোনো বিষয় সত্যায়নের জন্য সাক্ষ্যের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও কিছু মানুষের সাক্ষ্য ইসলামে গ্রহণযোগ্য নয়। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ (স.) তাদের পরিচয় তুলে ধরেছেন।
আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আস (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসুল (স.) আত্মসাৎকারী পুরুষ ও নারীর সাক্ষ্য এবং কোনো মুসলিম ভাইয়ের বিপক্ষে তার শত্রুর সাক্ষ্য প্রত্যাখ্যান করেন। তেমনি তিনি প্রত্যাখ্যান করেন কোনো পরিবারের পক্ষে তাদের কাজের লোকের সাক্ষ্য। অন্য বর্ণনায় আছে, কোনো ব্যভিচারী ও ব্যভিচারিণীর সাক্ষ্যও ইসলামের দৃষ্টিতে বৈধ নয়।’ (আবু দাউদ: ৩৬০০; ইবনে মাজাহ: ২৩৯৫)
আরও পড়ুন: অসৎ উদ্দেশ্যে রসিকতা বৈধ নয়
এছাড়াও জ্ঞানীদের বিপক্ষে অজ্ঞ লোকদের সাক্ষ্য গ্রহণযোগ্য নয়। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেন, ‘কোনো মরুবাসীর সাক্ষ্য শহুরে ব্যক্তির বিপক্ষে বৈধ নয়। কারণ মরুবাসী ইসলামি শরিয়তের বিধি-বিধান না জানার দরুন সাক্ষ্য গ্রহণ ও প্রদান সম্পর্কে নিতান্ত অজ্ঞ। (আবু দাউদ: ৩৬০২; ইবনে মাজাহ: ২৩৯৬)
সাক্ষ্য সত্য হওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা উল্লেখিত হাদিস থেকেই অনুমান করা যায়। আর আমরা জানি, যেকারো সাক্ষ্য নিয়ে বিচার করলে ওই বিচার সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়। আর একটি ভুল বিচার ডেকে আনতে পারে ভয়ঙ্কর পরিণতি। শুধুমাত্র একটি মিথ্যা সাক্ষ্যের কারণে ধ্বংস হয়ে যায় ব্যক্তি ও পরিবার। একটি সমাজ চলে যায় অধঃপতনের শেষ সীমায়। এজন্যই নবীজি (স.) শিরকের গুনাহ, মাতা-পিতার অবাধ্যতার গুনাহের পরেই মিথ্যা সাক্ষ্যকে জঘন্য গুনাহের তালিকায় এনেছেন এবং মিথ্যা সাক্ষ্যের কথা তিনবার উচ্চারণ করেছেন। রাসুল (স.) ইরশাদ করেছেন, অন্যতম কবিরা গুনাহ হলো- কাউকে আল্লাহর সমকক্ষ স্থির করা (শিরক করা), মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া। এ কথা বলে রাসুলুল্লাহ (স.) সোজা হয়ে বসেছেন এবং বলেছেন, মিথ্যা সাক্ষী দেওয়া। এ কথা তিনি তিনবার বলেছেন। (সহিহ বুখারি: ২৬৫৪)
আরও পড়ুন: খেয়ালখুশিমতো টাকা খরচ করার পরিণাম
মিথ্যা সাক্ষ্যের মাধ্যমে কারো ক্ষতি করা নিকৃষ্ট পর্যায়ের জুলুম। জুলুমের শিকার হয়ে যে দোয়া করা হয়, তা আল্লাহ তাআলা কখনও ফিরিয়ে দেন না। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর তোমরা ভয় করো ফিতনাকে, যা তোমাদের মধ্য থেকে শুধু জালিমদের ওপরই আপতিত হবে না (সবার ওপর আসবে)। আর জেনে রেখো, নিশ্চয়ই আল্লাহ আজাব দেওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত কঠোর।’ (সুরা আনফাল: ২৫)
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘মজলুমের ফরিয়াদকে ভয় করবে। কেননা তার ফরিয়াদ এবং আল্লাহর মধ্যে পর্দা থাকে না।’ (সহিহ বুখারি: ২৪৪৮)