ধর্ম ডেস্ক
২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৫৫ পিএম
শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধ আল্লাহ তাআলার একটি বিশেষ নেয়ামত। জন্মের পর শিশুর জন্য মায়ের বুকের দুধই সবচেয়ে উপযুক্ত খাবার। ইসলামের দৃষ্টিতে মায়ের দুধ নবজাতক শিশুর জন্মগত অধিকার। এ কারণে জীবনের নিরাপত্তার চরম হুমকি থাকা সত্ত্বেও আল্লাহ তাআলা মুসা (আ.)-এর মায়ের কাছে সন্তানকে দুধ পান করানোর প্রত্যাদেশ পাঠিয়েছিলেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি মুসার মায়ের কাছে নির্দেশ দিলাম যে, তুমি তাকে দুধ পান করাও।’ (সুরা আল কাসাস: ৭)
শিশুর জন্মগত এই অধিকার যেন খর্ব না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। শিশুকে দুধ পান করানোর সময় যদি কোনো কারণে মায়ের শরীর অপবিত্র থাকে তাহলে তা শিশুর দুধ পান করানোর ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক নয়। শরিয়তের দৃষ্টিতে এতে কোনো সমস্যা নেই। মুমিন কখনও এমন অপবিত্র হয় না যে, শিশু দুধপান করতে পারবে না বা স্পর্শ করা যাবে না।
আরও পড়ুন: সন্তান আল্লাহর দেওয়া উপহার, একইসঙ্গে আমানতও
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, তার সঙ্গে মদিনার কোনো এক পথে রাসুল (স.)-এর দেখা হলো। আবু হুরায়রা (রা.) তখন নাপাক অবস্থায় ছিলেন। তিনি বলেন, আমি নিজেকে অপবিত্র মনে করে সরে পড়লাম। পরে আবু হুরায়রা (রা.) গোসল করে এলেন। পুনরায় সাক্ষাত হলে আল্লাহর রাসুল (স.) জিজ্ঞেস করলেন, ওহে আবু হুরায়রা! কোথায় ছিলে? আবু হুরায়রা (রা.) বললেন, আমি অপবিত্র অবস্থায় আপনার সঙ্গে বসা সমীচীন মনে করিনি। রাসুলুল্লাহ (স.) বললেন, মুমিন কখনো এমন অপবিত্র হয় না যে, তাকে স্পর্শ করা যাবে না। (তিরমিজি: ১২১; সহিহ বুখারি: ২৮৩)
নবজাতক শিশুকে মায়ের দুধ পান করানোর ক্ষেত্রে ধর্মীয় ফরজ বিধান রোজা পালনেও শিথিলতা আরোপ করেছে ইসলাম। অর্থাৎ সন্তানের দুগ্ধদানের প্রয়োজনে যদি ফরজ রোজা ভেঙে ফেলতে হয়, তা-ও শরিয়তে অনুমতি আছে। যদিও পরে ওই রোজা কাজা করতে হবে; কিন্তু কাফফারা আদায় করতে হবে না। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা মুসাফিরের অর্ধেক নামাজ কমিয়ে দিয়েছেন এবং মুসাফির, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিনীর জন্য রোজায় ছাড় দিয়েছেন। (মুসনাদে আহমদ: ১৯০৪৭)
আরও পড়ুন: রোজা রেখে পেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা যায়?
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণিত হাদিসে এসেছে, গর্ভবতী ও দুগ্ধদানকারিনী রমজানের রোজা ভাঙ্গতে পারবে। তবে পরে তা কাজা করে নিবে। রোজার বদলে (মিসকিনদের) খাওয়াবে না। (মুসান্নাফে আব্দুর রাজজাক: ৭৫৬৪)
তবে শরীর অপবিত্র হলে যতদ্রুত সম্ভব পবিত্র করে নেওয়া উচিত। কারণ একজন ঈমানওয়ালার জন্য পবিত্রতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে ইসলামের সকল বিধি-বিধান মেনে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন।