images

ইসলাম

নবীজির প্রিয় ৩ সুগন্ধি

ধর্ম ডেস্ক

০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:৩০ পিএম

মহানবী (স.) নিজে যেমন সুগন্ধির আকর ছিলেন, সুগন্ধির প্রতি তাঁর অনুরাগও ছিল প্রচণ্ড। শুধু নবীজিই নন, সুগন্ধি সব নবীদের অন্যতম সুন্নত ছিল। এ নিয়ে অনেক হাদিস রয়েছে। এক হাদিসে আবু আইয়ুব আল-আনসারি (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘চারটি জিনিস নবীদের চিরাচরিত সুন্নত—লজ্জা, সুগন্ধি ব্যবহার, মেসওয়াক করা এবং বিয়ে করা।’ (তিরমিজি: ১০৮০)

সুগন্ধি বা আতর নবীজি (স.) এত বেশি পছন্দ করতেন যে কেউ তাঁকে সুগন্ধি/আতর উপহার দিতে চাইলে তিনি কখনো তা প্রত্যাখ্যান করতেন না। (বুখারি: ৫৯২৯)

আরও পড়ুন
নবীজির প্রিয় খাবার
নবীজির প্রিয় রঙ

ইবনে ওমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, তিনটি বস্তু প্রত্যাখ্যান করা যায় না; ১. বালিশ, ২. সুগন্ধি তেল ও ৩. দুধ। (তিরমিজি: ২৭৯০) অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, কারো সামনে সুগন্ধি পেশ করা হলে, সে যেন তা ফেরত না দেয়। কেননা তা ওজনে হালকা, অথচ ঘ্রাণে উত্তম। (নাসায়ি: ৫২৫৯)

প্রিয়নবী (স.) যেসব সুগন্ধি বেশি ব্যবহার করতেন, হাদিসের আলোকে সেগুলোর কয়েকটি নিচে তুলে ধরা হলো—

মেশক
মেশক নবীজি (স.)-এর অন্যতম পছন্দের সুগন্ধি। সাহাবি আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, মেশক প্রসঙ্গে রাসুল (স.)-কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, উত্তম সুগন্ধি হলো মেশক। (তিরমিজি: ৯৯২)

মেশককে আমাদের দেশে কস্তুরিও বলে। এটি মূল্যবান সুগন্ধি। পুরুষ হরিণের পেটে অবস্থিত সুগন্ধি গ্রন্থি নিঃসৃত সুগন্ধির নাম। মিলন ঋতুতে পুরুষ হরিণের পেটের কাছের কস্তুরি গ্রন্থি থেকে সুগন্ধ বের হয়, যা মেয়ে হরিণকে আকৃষ্ট করে। ঋতুর শেষে তা হরিণের দেহ থেকে খসে পড়ে যায়। সেটি সংগ্রহ করে রোদে শুকিয়ে কস্তুরি তৈরি করা হয়। একটি পূর্ণাঙ্গ কস্তুরির ওজন ৬০ থেকে ৬৫ গ্রাম হয়।

আরও পড়ুন
নবীজির প্রিয় আমল
নবীজির প্রিয় ঋতু

চন্দন ও জাফরান
রাসুলুল্লাহ (স.) কখনও চন্দন ও জাফরানের সুগন্ধিও ব্যবহার করতেন। আল্লামা ইবনে আবদুল বার (রহ.) ‘তামহিদ’ নামক কিতাবে আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.)-এর একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। সেখানে বলা হয়েছে, ‘রাসুলুল্লাহ (স.) জাফরানের সুগন্ধি ব্যবহার করেছেন।’ জাফরান শুধু সুগন্ধি হিসেবেই ব্যবহৃত হয় না, মসলা ও খাবার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এর স্বাস্থ্যগত উপকারিতা কম নয়। এক কেজি জাফরানের মূল্য বাংলাদেশি টাকায় চার লাখ টাকা। এটি তৈরি করতে এক লাখ ৬৬ হাজারের বেশি ফুলের দরকার হয়।

আম্বর
রাসুলুল্লাহ (স.) যেসব সুগন্ধি ব্যবহার করতেন, তার আরেকটি হলো আম্বর। উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, রাসুলুল্লাহ (স.) কী ধরনের সুগন্ধি ব্যবহার করতেন। জবাবে তিনি বলেছেন, ‘মেশক ও আম্বরের সুগন্ধি রাসুলুল্লাহ (স.) ব্যবহার করতেন।’ (নাসায়ি: ৫০২৭) সমুদ্রে বিশেষ এক ধরনের মাছ আছে, যা থেকে মোমের মতো দ্রব্য পাওয়া যায়। সে জিনিস দিয়েই মহামূল্যবান এই সুগন্ধি বানানো হয়।